হার্ডলাইনে মোহসীন ও মাহাবুব

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতপাড়ায় শৃঙ্খলা রক্ষা ও টাউট বাটপার প্রতারকদের প্রতিহত করতে হার্ডলাইনে অবস্থান নিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান। একই সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির কোনো সদস্য অথবা শিক্ষানবিশ ও আইনজীবী সহকারী সমিতির নিয়ন কিংবা কোর্ট পরিচালনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে আইন পেশা পরিচালনায় কোনো ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন তারা।

কোর্ট সূত্রে জানাগেছে, আদালতপাড়ায় টাউট বাটপাট প্রতারকদের দৌড়াত্বে বিচার প্রার্থীরা প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হতো। একই সঙ্গে আইনজীবীদের জন্য আইন পেশা পরিচালনা করতেও নানা সমস্যা হতো। বিচারপ্রার্থীদের কাছে প্রতারকরা নিজেদের বিচারকদের লোক পরিচয়ে, কেউ কেউ নিজেকে আইনজীবী পরিচয়ে, কেউ কেউ পেশকার পিয়ন পরিচয়ে বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করতো। একই সঙ্গে কোর্টে বিপুল সংখ্যক শিক্ষানবিশ হিসেবে রয়েছেন। ৪/৫ বছর ধরেও অনেকেই শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছেন কোর্টে। কিন্তু বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্দেশনামতে শিক্ষানবিশদের পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) গলায় ঝুলায় না, লাল টাইও দুএকজন বাদে বাকিরা ব্যবহার করতো না।

এক্ষেত্রে বিচারপ্রার্থীরা কে অ্যাডভোকেট আর কে শিক্ষানবিশ সেটার পার্থক্য করতে পারতো না। ফলে বিচারপ্রার্থীরা প্রতারিত হতো। অনেক শিক্ষানবিশরা লাল টাই পরিধান করতে আগ্রহী হয়না। এর কারন হিসেবে কেউ কেউ বলছেন- অনেক শিক্ষানবিশ মক্কেলদের কাছে নিজেদের অ্যাডভোকেট পরিচয় দেন, যে কারনে লাল টাই পরিধান করলে ধরা খেয়ে যাবেন। যে কারনে লাল টাই পরিধান করতে চান না। কিন্তু এবার সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। নিয়মের বাহিরে থাকা কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছেনা। সকলের জন্য সমান।

আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান- আদালতপাড়ায় টাউট-বাটপার, দালাল বা প্রতারকদের দৌরাত্ম এখন নেই বললেই চলে। ইচ্ছে করলেই কেউ আইনজীবী, আইনজীবীর সহকারী বা মুহুরি সাঁজতে পারেন না। শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের জন্য আইডি কার্ড ও লাল টাই এবং মুহুরিদের জন্য রয়েছে পৃথক পোশাক। নিয়ম-নীতি সাঁটানো আছে আদালতের বিভিন্নস্থানে।

আইনজীবীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ আদালতে আইনজীবী, মুহুরি, পেশকার, পিয়ন এবং সেরেস্তাদার ছাড়াও আদালত এলাকায় সক্রিয় ছিল একটি প্রতারক ও দালাল চক্র। যারা নিজেদেরকে আইনজীবী পরিচয়ে মামলা গ্রহণ করে বিচারপ্রার্থীদের নিঃস্ব করে দিতেন। এমনকি, এক মামলার জন্য একাধিক আইনজীবী ওকালত নামা জমা দিতেন। আদালতে আসা ব্যক্তিরা যেন প্রতারিত না হয় সে জন্য এক আইনজীবী থেকে অন্য আইনজীবীর নিকট মামলা নিতে এনওসি ও ওকালত নামায় আইনজীবীর আইডি নাম্বার, আদালতের কর্মচারীদের পরিচয়পত্র এবং শিক্ষানবিশদের জন্য লাল টাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমন কি পূর্বে আদালতে ভুয়া ও জাল কোর্ট ফি, নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প, জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প বিক্রি করতো বিচারপ্রার্থীদের কাছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাতো, তাও বন্ধ হয়েছে এখন।