আজাদের কালো থাবায় ঝুঁলে গেলো সাগর প্রধানের নেতৃত্ব!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে রাজপথে একাই লড়ে যাওয়া সাগর প্রধানের নেতৃত্বকে কেড়ে নেয়া হলো আবারো। এখানকার যুবদলের নেতাকর্মীরা বলছেন- মুলত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের কালো থাবায় আবারো মহানগর যুবদলে সাগর প্রধানের নেতৃত্ব ঝুঁলে গেলো। আজাদের কালো থাবায় কোনোদিন যুবদলের রাজনীতি না করলেও মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব পদে অধিষ্ট হয়েছেন মনিরুল ইসলাম সজল। আড়াইহাজার ছাপিয়ে নজরুল ইসলাম আজাদ এবার জেলা ঝুড়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণে নেমেছেন। ধীরে ধীরে তার মুঠোবন্ধি হয়ে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব।

জানাগেছে, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের তৎকালীন সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন মন্তুর নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছিলো কেন্দ্রীয় যুবদল। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল ছিলো নেতৃত্বশূণ্য।

১৬ নভেম্বর মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত কেন্দ্রীয় যুবদলের নিজস্ব প্যাডে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আংশিক আহ্বাযক কমিটি গঠনের বিষয়ে জানানো হয়।

কমিটিতে মমতাজ উদ্দীন মন্তুকে আহ্বায়ক ও মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন সাগর প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি ও সাহেদ আহমেদ।

এর মধ্যে মমতাজ উদ্দীন মন্তু ছিলেন পূর্বের কমিটির সাধারণ সম্পাদক, সাগর প্র্রধান ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি ছিলেন সহ-সভাপতি। কিন্তু মনিরুল ইসলাম সজল ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি পদে বহাল রয়েছেন সাহেদ আহমেদ। মনিরুল ইসলাম সজল কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলয়ে রাজনীতি করেন এবং সাহেদ আহমেদের মামা মোশারফ হোসেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন।

যুবদলের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বলছেন- ২০১৪ সালের আগে ও পরবর্তী সময়ে টানা হরতাল অবরোধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সভাপতি মমতাজ উদ্দীন মন্তুকে দেখা যায়নি। ওই সময় সক্রিয়তার কারনে সাগর প্রধানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেন তৎকালীন মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। পরিস্থিতি নীরব হয়ে ওঠলে আবারো মন্তুকে নিয়ে রাজনীতি শুরু করেন খোরশেদ। এমন পরিস্থিতিতে একাই মহানগর যুবদলের ব্যানারে নানা কর্মসূচি পালন করে যুবদলের মাঠ দখলে নেন সাগর প্রধান।

এমন পরিস্থিতিতে যখন মহানগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবদল তখন নেতৃত্বের প্রতিযোগীতায় বেশ এগিয়ে ছিলেন সাগর প্রধান। নেতৃত্বের লড়াইয়ে মাঠে নামানো হয় মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, মনোয়ার হোসেন শোখন, রানা মুজিব, রশিদুর রহমান রশু সহ আরো বেশকজনকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতির সঙ্গে মন্তুর ব্যক্তিগত গভীর সম্পর্কের কারনে মন্তুই হতে যাচ্ছেন মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক এমন আভাসও ছিল নেতাকর্মীদের মাঝে। কিন্তু মন্তুকে বহাল রাখা হলে একই এলাকার হওয়ায় সাগর প্রধানের নেতৃত্ব পাওয়া নিয়ে হয়ে ওঠে ধোয়াসা। তবে তাতেও সাগর প্র্রধানকে টপকে যেতে পারেনি জোসেফ, রানা মুজিব ও রশুরা। সে কারনে সদস্য সচিব পদে বেশ শক্ত অবস্থানে থাকেন সাগর প্রধান। এমন সময়ে মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে মহানগর যুবদলের নেতৃত্ব পেতে মাঠে নামেন মনিরুল ইসলাম সজল। তিনি মুলত নজরুল ইসলাম আজাদের বলয়ে রাজনীতি করেন। ফলে সেই আজাদের হাতেই সাগর প্রধানের নেতৃত্ব আবারো ঝুঁলে গেলো।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি ও মমতাজ উদ্দীন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। ওই কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ছিলেন মনোয়ার হোসেন শোখন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক হোন রশিদুর রহমান রশু। এই কমিটির ৫ মাস পর ২০১ সনের একটি দীর্ঘ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন খোরশেদ ও মন্তু। কমিটিতে ১৬ জনকে সহ-সভাপতি ও ১৮ জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল ওই কমিটি। নানা বিশৃঙ্খলার কারনে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল।