নির্বাচনী মাঠ সায়েমের দখলে, বিনা ভোটের স্বপ্নে বিভোর মতি ও জাকির!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

চলতি মাসের শেষ দিকে সারাদেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।  নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদ নির্বাচনী মাঠ গুছিয়ে নিয়েছেন।  কিন্তু আলোচনায় থাকা বাকি দুইজন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি ও সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ইউনিয়নবাসীকে অবজ্ঞা করে ইউনিয়নবাসীকে পাস কাটিয়ে বিনাভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার চেষ্টায় দৌড়াচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী দুই রাজনীতিকের পেছনে।  এই সুযোগে আলীরটেক ইউনিয়নের নির্বাচনী পুরো মাঠ দখলে নিচ্ছেন সায়েম আহাম্মেদ। ভোটের লড়াইয়ে জয়ের আশা নিয়ে সায়েম যেখানে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন, সেখানে মতি ও জাকির স্বপ্ন দেখছেন জেলার প্রভাবশালী দুই নেতা তাদেরকে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান বানিয়ে দিবেন।

আলীরটেক ইউনিয়নের মানুষজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানিয়েছেন, আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে একক প্রার্থী হিসেবে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হন মতিউর রহমান মতি।  ওই নির্বাচনে শক্ত প্রার্থী ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক সায়েম আহাম্মেদ।  জেলার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনুরোধে ওই নির্বাচনে সরে দাঁড়ান সায়েম আহাম্মেদ।  তাকে প্র্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে, এবারের নির্বাচনে মতিউর রহমান মতি নির্বাচন করবেন না এবং সায়েম আহাম্মেদকে সমর্থন করা হবে।  কিন্তু এখনও পর্যন্ত মতিউর রহমান মতি সায়েম আহাম্মেদকে সমর্থন ঘোষণা না করলেও মতি এখনও ভোটের লড়াইয়ে নির্বাচনী মাঠে নামেননি।

গত কয়েক বছর ধরে আলীরটেক ইউনিয়নে নির্বাচনী সভা সমাবেশ উঠান বৈঠক কিংবা নির্বাচনী শোডাউনও করে আসছেন সায়েম আহাম্মেদ।  নির্বাচন ও নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোটের দাবিতেও আলীরটেক ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষজন সায়েম আহাম্মেদকে নিয়ে শোডাউন করেছেন।  প্রায় নিয়মিত আলীরটেক ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সায়েম যাতায়াত করে আসছেন সেই গত নির্বাচনের পর থেকেই।  বছর খানিক সময় ধরে আলীরটেকে পুরোদস্তর নির্বাচনী কর্মকান্ড করে আসছেন তিনি।  যেখানে মতিউর রহমান ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা ছাড়া নির্বাচনী কোনো কার্যক্রমে ছিলেন না।  যদিও এর আগে স্থানীয় এমপিকে নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেছিলেন মতি।  এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকেও দেখা যায়নি নির্বাচনী কোনো কর্মকান্ডে।  তাদের এমন নীরবতায় আলীরটেক ইউনিয়নের নির্বাচনী মাঠ এখন সায়েম আহাম্মেদের দখলে।

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ- মতিউর রহমান ও জাকির হোসেন নিজেদেরকে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি দাবি করে আসছেন।  কিন্তু আওয়ামীলীগের কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ড কিংবা রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় কর্মসূচিগুলোতেও তাদেরকে দেখা যায়নি কোনোদিন।  মতি চেয়ারম্যান হওয়ার পর আওয়ামীলীগের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের চিত্র দেখা যায়নি।  কয়েক মাস পূর্বে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানকে নিয়ে আলীরটেক ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠান করেছিলেন জাকির হোসেন।  আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জাকির কখনই ছিলেন না।  মতি গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার পরেও আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন, থানা কিংবা জেলা পর্যায়ের কোনো কর্মসূচিতে সক্রিয়তা দেখা যায়নি।  জাকির হোসেন চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ও বর্তমানেও হেফাজত জামাত শিবির বিএনপির লোকজনদের সংঘঠিত করার চেষ্টা করছেন।  চারপাশে বিএনপির লোকজনে বেষ্টিত জাকির।

স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দাবি- সায়েম আহাম্মেদ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন।  কয়েক বছর ধরে আলীরটেক ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বড় ভুমিকা রাখছেন নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার মাধ্যমে।  আলীরটেক ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের রাজনীতির যেখানে কোনো সক্রিয়তা ছিল না, সেখানে বর্তমানে আওয়ামীলীগ শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে।  যার মুল ভুমিকায় সায়েম আহাম্মেদ।  যে কারনে আলীরটেকের মানুষ সায়েম আহাম্মেদের হাতেই নৌকা প্রতীক দেখতে চায়।  যারা বিএনপি জামাত হেফাজত ঘেষা তাদের হাতে নৌকা প্রতীক দেখতে চায়না আলীরটেক ইউনিয়নবাসী।  আবার ভোটের মাঠেও জাকির ও মতির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন আলীরটেক ইউনিয়নবাসী।