টাউটের একটা সীমা থাকা দরকার: তৈমূর আলম খন্দকার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, যেখানে যে অবস্থাতেই আমরা দলটা করছি। কিন্তু দলটা নষ্ট করে দিয়েছে ঢাকার কিছু কেন্দ্রীয় নেতা। তাই মনের দুঃখে এখন আর কথা বলতে ইচ্ছে করেনা। কিছু কেন্দ্রীয় নেতা কেউ প্লেনের টিকেট পাইয়া, কেউ মধু পাইয়া, কেউ যেভাবেই হোক কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝাইয়া, ভুল পরামর্শ দিয়া, তাবেদারী করে যাদের পক্ষে কাজ করলো তারা আজকে আমাদের দলের মধ্যে নাই। তারা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দল থেকে পদত্যাগ করেছে। আবার জিজ্ঞাসা করলে বলে কেন্দ্রীয় পদ রাখছি। টাউটের একটা সীমা থাকা উচিত। টাউট করা, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা, দলের লোকদের সাথে বেঈমানী করার একটা সীমা থাকা উচিত। এসব নিয়ে মনের মধ্যে কষ্ট লাগে।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমুলক সভায় ২২ মার্চ শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইরের মজলুম মিলনায়তনে বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

তৈমূর আলম খন্দকার আরও বলেন, সেদিন নজরুল ইসলাম খানের সামনে বক্তব্যে বলেছিলাম আমি কর্মীদের পাশে আছি। আমি দায়িত্ব না নিলে, আমি না করলে প্রয়াত শ্রমিকদল নেতা নজরুলের শোকসভা হতোনা। আমি দায়িত্ব না নিলে নজরুল ইসলাম খান এখানে আসতো না। আমি দায়িত্ব না নিলে জাহাঙ্গীর কমিশনার যে নাকি ৫০/৬০টি মামলা নিয়ে মৃত্যুবরণ করলো তার শোকসভা হতো না। কেন করত না? কারন বিএনপির মধ্যে এখন আর ত্যাগ কথাটাই নাই।

তিনি কমিটি প্রসঙ্গে বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ও জেলা কমিটির ব্যাপারে আমি কোন কমিটি সাবমিট করিনি। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি আমাকে বলেছিলেন এ কমিটি করতে। কিন্তু আমি বলেছিলাম ‘না’, আলোচনার মাধ্যমে কমিটি করতে চাই। আমি পত্র-পত্রিকায়ও বলেছি আলোচনার মাধ্যমে কমিটি হবে। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে কমিটি না করে টাকাওয়ালা, ব্যবসায়ীরা, ব্যাংক লুটেরা যেভাবে বুদ্ধি দিয়েছে সেভাবে কমিটি করা হলো। আবার এ কমিটিতে জাতীয়পার্টির যারা বড় নেতা তারাও ছিল। আশ্চর্য বিষয় এখন জাতীয়পার্টি করেও বিএনপি করা যায়।

এ প্রসঙ্গে তিনি তার অতীত টেনে বলেন, আমি যখন ট্রেড ইউনিয়ন করি আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে শ্রমিক সংগঠন সিরিয়াসলি করি। এক জায়গায় গেলাম এক মালিকের ছেলে বলে আমি ট্রেড ইউনিয়ন করব। আমি বললাম আপনি করতে পারবেননা। ট্রেড ইউনিয়ন করে দুটি দল করা যায়না। এখন বিএনপি করে দুটি দল করা যায়। আমি তারেক রহমানকে পরিষ্কারভাবে বলেছিলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদেরও বলেছিলাম, আমি টকশোতেও বলি বিএনপি হলো আমাদের অস্থিত্বের প্রশ্ন, আমাদের রক্ত। আমাদের জীবন হলো বিএনপি। এ বিএনপি রক্ষা করার জন্য তিনটা শর্ত আছে, যুদ্ধে নামতে হলে আপনাকে সেনা বাহিনী বাছাই করতে হিবে। আমি তারেক রহমানকেও বলেছি, টকশোতে একথা বলি, পত্র-পত্রিকায়ও লিখি। ওয়ান ইলেভেন থেকে বিএনপি কোন শিক্ষাগ্রহণ করতে পারেনি। বিএনপি যদি গত নির্বাচন থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে তাহলে বিএনপি স্বর্ণ যুগে প্রবেশ করবে।

প্রস্তুতিমুলক সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুরুজ্জামান, শহর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক চৌধুরী দিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাষানী, কেন্দ্রীয় ওলামাদলের সহ-সভাপতি মুন্সী সামসুর রহমান খান বেনু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সাগর, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমএইচ মামুন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুবায়েত হাসান সায়েম, জেলা শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দীন ও জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক গিয়াসউদ্দীন প্রধান প্রমূখ।