নাসিকে ত্যাগীদের অবমুল্যায়ন: আইভী অধ্যায়ের সমাপ্তি চায় তৃণ্যমুল!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর আর কত মুল্যায়ন? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সরকারি দল আওয়ামীলীগের রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে। একই সঙ্গে প্রশ্ন ওঠেছে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে মেয়র আইভীর কতটুকু ভুমিকা? নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়াদে মেয়র হয়েছেন তিনি।  এর আগে বিএনপি-জামাত জোট সরকার আমলে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভায় তিনি মেয়র নির্বাচিত হোন।

এবার দাবি ওঠেছে- ২০০১ সাল থেকে বিএনপি জামাত জোট সরকার ও পরবর্তীতে ১/১১ এর সময় যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা নির্যাতন জেল জুলুম অত্যাচারিত হয়েছেন এমন কাউকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক তুলে দেয়া হোক।  মেয়র আইভী অধ্যায়ের সমাপ্তি চায় তৃণমুলের নেতাকর্মীরাও।  তাদের প্রশ্ন বারবারই মেয়র আইভী? তাহলে রাজপথের ত্যাগী নেতাদের কি হবে?

২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।  ওই নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করে জয়ী হযেছিলেন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী।  নির্বাচনের মাত্র সাত ঘন্টা পূর্বে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে মেয়র আইভীর জয় সহজ হয়ে যায়।  ওই নির্বাচনে জেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক এসএম আকরাম ও তৎকালীন শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মেয়র আইভীল পক্ষে নির্বাচন করেছিলেন।

গত নির্বাচনে এমপি শামীম ওসমান মেয়র প্রার্থী হিসেবে তার রাজনেতিক গুরু বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামেন।  ওই নির্বাচনে শহর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের যৌথ সভায় মেয়র পদে আনোয়ার হোসেনের নাম ১নম্বরে প্রস্তাবনায় রেখে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমএ রশিদ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের নাম যুক্ত করে ৩ জনের নাম কেন্দ্রে প্রস্তাবনা পাঠায় মহানগর আওয়ামীলীগ।

কিন্তু নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে নৌকা প্রতীক তুলে দেয়া মেয়র আইভীর হাতে।  ওই নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।  বিএনপির অধিকাংশ নেতারা ধানের শীষ প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন।  এই নির্বাচনেও মেয়র নির্বাচিত হোন আইভী।

নৌকা প্রতীক না পেয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন আনোয়ার হোসেন।  মসজিদে জুমা নামাজ পড়তে গিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।  হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় দলের সভাপতি ঘোষণা দেন আনোয়ার হোসেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী।  পরবর্তীতে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন।

এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিব জানিয়েছেন আগামী ডিসেম্বরের পূর্বে্ই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।  এমন ঘোষণার পর নারায়ণগঞ্জে আলোচনায় নৌকা প্রতীক কে পেতে যাচ্ছেন।  সেই সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি মেয়র আইভীরই।  কিন্তু নেতাকর্মীরা এ নিয়ে চরম ক্ষুব্দ। কারন বারবারই যদি মেয়র আইভীকে মেয়র পদে সুযোগ করে দেয়া হয় তাহলে বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কি হবে? যারা দীর্ঘ ৪০/৪৫ বছর যাবত আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছেন তাদের কি হবে? জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা দীর্ঘ ৪০/৪৫ বছর যাবত আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছেন। তারা কি মেয়র হওয়ার যোগ্য নয়? এবার প্রার্থীর পরিবর্তন চায় তৃণ্যমুল নেতাকর্মীরা।