নেতাকর্মীদের জামিন, সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে জাতীয়পার্টির কামব্যাক!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্ট কান্ডের মামলায় জাতীয়পার্টির বেশক’জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। হেফাজতের ঘটনায় জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের ওই সময় আসামি করায় জাতীয়পার্টি দাবি করেছিল- ‘এটা নিছক অপরাজনীতি।  এটা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা। রাজনৈতিকভাবে জাতীয়পার্টিকে মোকাবেলা করতে না পেরে এই মামুনুল হকের ঘটনার মামলায় কৌশলে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের নাম জুড়ে দেয়া হয়েছে।’

ওই ঘটনার পর দীর্ঘদিন সোনারগাঁয়ের রাজনীতির বাহিরে ছিলেন আসামি হওয়া জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা।  করোনার দ্বিতীয় ধাপের কারনে লকডাউনে আদালত চালু না থাকায় জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা এতদিন জামিন নিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা জামিন নিয়ে আবারো সোনারগাঁয়ের উন্নয়নযাত্রায় উন্নয়নের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন বলে তাদের দাবি।  এসব নেতাকর্মীরা আসামি হয়ে রাজনীতির বাহিরে থাকায় করোনার প্রথম ধাপে যেভাবে সোনারগাঁয়ের মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, ওষুধ বিতরণ, চিকিৎসার ব্যবস্থা সহ নানা কাজ মানবতায় করেছিলেন ঠিক দ্বিতীয় ধাপে সেইসব কাজগুলোর ব্যাঘাত ঘটেছে নেতাকর্মীরা না থাকায়।  এমনকি করোনাকালে অর্ধশত লাশ দাফনে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী টিম লিডারকেও আসামি করা হয়।

স্থানীয়দের দাবি-২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়ার পর দীর্ঘ ৭ বছর ধরে সোনারগাঁয়ের উন্নয়নমুলক কাজ করে আসছেন।  স্থানীয় ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার সাংবাদিক সহ সুশীল সমাজকে সাথে নিয়ে উন্নয়ন কাজ করে আসছেন তিনি।  ইতিমধ্যে একেবারে নিরেট সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে গেছেন স্থানীয় এমপি খোকা।

স্থানীয়দের আরও দাবি- এ সময়ের মাঝে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী, বালু সন্ত্রাসী, ভুমিদস্যূতা, মাদক ব্যবসা কিংবা মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টারের মত এ ধরণের কোনো অভিযোগই ওঠেনি।  এসব নেতাকর্মীরা সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকার উন্নয়নমুলক কাজগুলো তদারকি করেন এবং স্থানীয় এমপিকে সহযোগীতা করেন এটাই তাদের রাজনীতি।  এসব জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা অনেকটা এমনিতেই নীরহ প্রকৃতির।  কিন্তু এসব উন্নয়নমুলক কাজে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের ভুমিকা ও স্থানীয় এমপি খোকার শক্ত অবস্থান তৈরির বিষয়টি তার রাজনৈতিক প্রতিযোগীরা মেনে নিতে পারেনি। যে কারনে মামুনুল হক কান্ডের ঘটনার মামলায় জাতীয়পার্টির লোকজনের নাম কৌশলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছিল।  এসব নেতাকর্মীদের মধ্যে ২০ জনের জামিন হয়েছে।  বাকি দু‘একজনের জামিনও খুব দ্রুত হবে বলে আশা করছেন তারা।

এদিকে সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্ট কান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল ও পৌর জাতীয়পার্টির সভাপতি এমএ জামান সহ ২০ নেতাকর্মীকে জামিন দিয়েছেন উচ্চ আদালত।  ১ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে হাইকোর্টে জামিন সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি শেষে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হাবিবুল গনি এবং বিচারপতি মােঃ রিয়াজ উদ্দিন খান গঠিত বেঞ্চ তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

সােনারগাঁ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল ও পৌরসভা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এ জামান ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি, সহ-সভাপতি মোক্তার হােসেন, পিরােজপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আলমগীর কবির মেম্বার, জাতীয় পার্টি নেতা ফজলুল হক মাস্টার, শহীদ সরকার, মান্নান মেম্বার, রাসেল, ওমর ফারুক টিটু,ও মােঃ আব্দুল্লাহ সহ ২০ নেতাকর্মী জামিন পেয়েছেন।

ঘটনা সূত্রে, গত ৩ এপ্রিল শনিবার মামুনুল হক এক নারী সহ অবরুদ্ধের জের ধরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতির বাড়িঘর, কার্যালয়, ব্যবসা প্র্রতিষ্ঠানে তান্ডবলীলা চালিয়েছে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা।  একই সঙ্গে সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে হামলা ভাংচুরের তান্ডব সহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক অবরোধ করে অগ্নিসংযোগ ভাংচুরের তান্ডবের ঘটনাও ছিল।  এ ছাড়াও স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর ও লাঞ্ছিত করেছে হেফাজত কর্মীরা।  এসব ঘটনায় পৃথক ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।  যার মধ্যে দুটি পুুলিশ বাদী ও বাকি ৫টি মামলার বাদী পাবলিক।

কিন্তু উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু বাদী হয়ে তার বাড়ি ও ব্যবসা প্র্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন, যেখানে হেফাজত নেতাকর্মীদের চেয়ে বেশির ভাগ আসামি বিএনপি ও জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা।  একইভাবে উপজেলা যুবলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নাসির উদ্দীন আহাম্মেদ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।  এ মামলাতেও উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় ভাংচুুরের অভিযোগে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীকেও আসামি করা হয়।

৩ এপ্রিল শনিবার ঘটনার দিন থেকে মিডিয়া সহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারনায় আসছে এসব ঘটনায় জড়িত হেফাজতের নেতাকর্মীরা। কিন্তু ঘটনার সপ্তাহখানিক পর ৯ এপ্রিল আওয়ামীলীগের দুটি মামলায় জানা গেল এই ঘটনায় জড়িত নাকি জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা! যেখানে উপজেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল সহ বেশকজন শীর্ষ নেতাকেও আসামি করা হয়।  শুধু তাই নয় একটি মামলায় আবু নাঈম ইকবালকে দুইবার আসামি করা হয়েছে।

যদিও ৪ এপ্রিল আওয়ামীলীগের প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত তার বক্তব্যে বিএনপি জামাত সহ জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগ কার্যালয় ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ করেন।  এমন বক্তব্য মিডিয়াতে প্রচারিত হওয়ার পরপরেই তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান উপজেলা জাতীয়পার্টি।  কায়সার হাসনাতের ওই বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে জাতীয়পার্টি।

নেতাকর্মীদের আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে আবু নাঈম ইকবাল সান নারায়ণগঞ্জকে বলেছিলেন, ঘটনাটিকে ভিন্নদিকে নিতে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।  সোনারগাঁয়ের মানুষ জানে এই ঘটনায় জাতীয়পার্টির কেউ জড়িত নয়।  যারা ঘটনায় জড়িত তাদেরকে আড়াল করতেই জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে বলে মনে করি এবং রাজনৈতিক বিরোধ ও ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।  ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের লক্ষ্যে উদোর পিন্ডি বুদোর গাড়ে চাঁপানোর অপচেষ্টা।  যাতে জাতীয়পার্টিকে দূর্বল করা যায় এটাই হলো মুল উদ্দেশ্য।  এসব সস্তা রাজনীতি সোনারগাঁবাসী বিশ্বাস করেনা।

অপর আসামি উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুল হক মাস্টার জানিয়েছেন, ৩ এপ্রিল শনিবার বিকেল থেকে আমি মাস্ক বিতরণে বৈদ্যেরবাজার ছিলাম।  অথচ আমাকেও আসামি করা হয়েছে।  রাজনৈতিক কারনে আমাদের আসামি করা হয়েছে সোনারগাঁবাসী সেটা বুঝে গেছেন।  এমনটাই সান নারায়ণগঞ্জকে জানান ফজলুল হক মাস্টার।

ঘটনার পর গত ৯ এপ্রিল সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু বাদী হয়ে ১২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ১৫০/২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।  এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবাল হোসেনকে।

কিন্তু তার এই মামলায় উপজেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল, পৌর জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির নেতা কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু, জাতীয়পার্টি নেতা কাউসার, ওমর ফারুক টিটু, মোক্তার হোসেন, আলমগীর হোসেন অপু সহ জাতীয়পার্টির বেশকজন নেতাকে আসামি করা হয়েছে।

উপজেলা যুবলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে ১১১জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ২০০/২৫০জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

এই মামলায় মাওলানা মামুনুল হককে প্রধান আসামি করা হয়।  আবু নাঈম ইকবালের প্রতি এতটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ যে, এই একটি মামলায় উপজেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবালকে দুইবার আসামি করা হয়।  ৯৯ নং আসামিও আবু নাঈম ইকবাল এবং ১০৮ নং আসামিও আবু নাঈম ইকবাল।  তার এই মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মাইদুুল ইসলাম শান্তকেও আসামি করা হয়

এ ছাড়াও পৌর জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির নেতা কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু, জাতীয়পার্টি নেতা কাউসার, ওমর ফারুক টিটু, মোক্তার হোসেন, আলমগীর হোসেন অপু সহ জাতীয়পার্টির বেশকজন নেতাকে আসামি করা হয়েছে। তবে এই মামলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থেকেও ছাড় পাননি করোনাযোদ্ধা সানাউল্লাহ বেপারীও।

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনায় এবং করোনায় আক্রান্ত ও করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত লাশ দাফনের জন্য ‌’আমরা স্বেচ্ছাসেবী করোনাযোদ্ধা’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের টিম লিডার ছিলেন সানাউল্লাহ বেপারী।  ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধশত লাশ দাফনও করেছে এই টিম।  টিম লিডার সানাউল্লাহ বেপারীকেও আসামি করা হয়েছে।  তিনি ঘটনার দুই দিন আগে ১ এপ্রিল থেকে আইসোলেশনে ছিলেন।

একইভাবে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনির বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুরের ঘটনায় সোহাগ রনির পিতা সাবেক মেম্বার শাহ জামাল তোতা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।  এই মামলায় মাওলানা ইকবাল হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০০/৩০০জনকে আসামি করা হয়।

স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের বাড়িঘর ভাংচুুর হামলার ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। তিনি মোজ্জামেল হক আরিফকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।

তবে এর আগে ঘটনার একটি দিন সোনারগাঁও থানা পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।  এসআই ইয়াউর রহমান বাদী হয়ে মাওলানা মামুনুল হককে প্রধান আসামি করে এবং ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০/৩০০জনকে আসামি করা মামলা দায়ের করেন।  মুলত রয়েল রিসোর্টের ঘটনায় তিনি এই মামলাটি দায়ের করেন।  এই মামলায় পৌর জাতীয়পার্টির সভাপতি এমএ জামান ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিককেও আসামি করা হয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তান্ডবের ঘটনায় এসআই আরিফ হাওলাদার বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।  এই মামলায় মাওলানা ইকবাল হোসেনকে প্রধান আসামি করে এবং ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়।  এই মামলাতেও পৌর জাতীয়পার্টির সভাপতি এমএ জামান ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিককেও আসামি করা হয়।

এদিকে ১০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক এক নারীসহ (তার দাবিমতে দ্বিতীয় স্ত্রী) অবরুদ্ধ হওয়ার পর ভাংচুর-হামলা ও চুরির অভিযোগে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।  এ মামলাটি দায়ের করেন সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর শাশুড়ি জোহরা বেগম।

পরবর্তীতে জাতীয়পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী প্রেরিতে ২১ এপ্রিল বুধবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এবং জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এক যৌথ বিবৃতিতে সোনারাগাঁও উপজেলা জাতীয় পার্টি সভাপতি ও শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রউফ এবং সোনারগাঁও পৌর জাতীয় পার্টি সহ-সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ তপনের মুক্তি দাবি করেছেন।

এক যৌথ বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এবং জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, গেলো ৩ এপ্রিল সোনারগাঁও এর রয়াল রিসোর্টে হামলার ঘটনায় জাতীয় পার্টি বা জাতীয় পার্টির কোন নেতাকর্মী জড়িত নয়।  অথচ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে জাতীয় পার্টির জনপ্রিয় দুই নেতাকে আটক করা হয়েছে।  এছাড়া আরো অন্তত ৩৫ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এবং জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এক যৌথ বিবৃতিতে আরো বলেন, মাহে রমজানের পবিত্র মাস এবং মহামারি করোনাকালে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ঘরে থাকতে পারছেনা। প্ রতিরাতে পুলিশ জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানা দিচ্ছে। এতে ঐসকল পরিবারে মারাত্মক ভীতি সৃষ্টি হয়েছে।

যৌথ বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরপরাধ এবং ঐ ঘটনার সাথে জড়িত নয় এমন কোনো ব্যক্তি যেনো অযথা গ্রেপ্তার বা হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃদ্বয়।

ঘটনা সূত্রে জানাগেল- গত ৩ এপ্রিল শনিবার সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে আসেন কেন্দ্রীয় হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।  ওই সময় তার সঙ্গে এক নারী ছিলেন যাকে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছিলেন।  ওইদিন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি সহ স্থানীয়রা মামুনুল হককে নারী সহ আটক করেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ও সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান।  ঘটনাটি সংবাদকর্মীরা ভিডিও ধারণ করেন।  ওই খবরটি প্রচারিত হলে হেফাজতের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে রয়েল রিসোর্টে হামলা ভাংচুর চালিয়ে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নেয়। এরি মাঝে নান্নু ও সোহাগ রনির বাড়িঘর, ব্যবসা প্র্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর চালায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা।  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অগ্নিসংযোগ ভাংচুর ও উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় ভাংচুর চালায়।  পরবর্তীতে ৫ এপ্র্রিল স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের বাড়িতেও হামলা ভাংচুর চালায়।