আওয়ামীলীগের অনেক কমিটিতে বিএনপি নেতাদের পদ দেয়া হচ্ছে: জিএম আরাফাত

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত বলেছেন, দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করলে আগামীতে আওয়ামীলীগ দুঃসময়ের কবলে পড়লে তখন নেতাকর্মী পাবেন না। ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর অনেক বড় বড় আওয়ামীলীগারদের দাপট দেখেছি। আর ২০০১ সালে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর অনেক আওয়ামীলীগারদের দেশ ছাড়তে হয়েছিল। তখন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগার বলতে কেউ ছিলো না। তখন আমরা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তৎকালীন সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছিলাম। এখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়, চারিদিক বড় বড় নেতাদের দেখি। বড় বড় গাড়ী নিয়ে চোখের সামনে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, তাই বলতে চাই, আগামী দিনে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের দলে মূল্যায়ন করুণ। টাকা পয়সা বাড়ী গাড়ী করার জন্য আওয়ামীলীগ করি না। আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে ছাত্রলীগ থেকে এ পর্যন্ত আওয়ামীলীগের পতাকাতলে রয়েছি। এখন আওয়ামীলীগের ক্ষমতার লোভে অনেক কমিটিতে সক্রিয় বিএনপি নেতাদের আওয়ামীলীগের পদ দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোন লোভী লোককে আওয়ামীলীগের পদ দেয়নি, কখনো দিবে না। ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে হত্যা করে বাংলাদেশ স্বাধীনতাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, বন্ধবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।

২২ আগস্ট রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ১৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ দর্জি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (ঢাকা রেজি নং-৩২৯৮) জাতীয় শ্রমিক অন্তর্ভূক্ত উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি একথা বলেন।

অনুুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেছেন, মোটা নেতাদের দাপটে আমাদের হটানো চেষ্টা করে যাচ্ছে নব্য আওয়ামীলীগাররা। নারায়ণগঞ্জ এখন আওয়ামীলীগের ছড়াছড়ি, এদের মধ্যে সুবিধাভোগীরা তৎপর রয়েছে সকলের মাঝে। জিকে শামীমের মত লোকদের আওয়ামীলীগে পদ দেয়া জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল, যারা বঙ্গবন্ধু আদর্শে আওয়ামীলীগ করতো। জিকে শামীম যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়, তখন অনেক বড় বড় নেতা হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিল। এখন তিনি জেলে, নেতাদের ভিড়েও নেতারা এখন গা-ঢাকা অবস্থা।

তিনি আরও বলেন, এসব কারনে আমি বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু আদর্শে গড়া নেতাকর্মীদের মধ্যে মূল্যায়ন করুণ, নিজের আখের গোচানো জন্য আওয়ামীলীগ পদ ব্যবহার করবেন না। সাপ বিষাক্ত হয়, সাপের মতো কিছু মানুষ আছে তারা আরও বিষাক্ত। বঙ্গবন্ধু যখন হত্যা করা হয় তখন ভাবলাম একটা কিছু করা দরকার। আমরা তখন রাজপথে ছাত্ররাই থেকে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করে ছিলাম জিমখানা থেকে। যে দিকে তাকাই শুধু আওয়ামীগ আর আওয়ামীলীগ, আমার ভয় হয় যেন আরেকটা-১৫ই আগষ্ট না হয়। আজকে সবাই নেতা হতে চায়, তাই শ্রমিকলীগের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, কোন শত্রু যেনো না ঢুকতে পারে আমাদের দেশ গঠনে যেন তারা আবার বাধার সৃষ্টি করতে না পারে। সুবিধা বাদিদের কাছ থেকে সাবধান থাকতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ দর্জি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা মোঃ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে হাজী মোঃ রুহুল আমিনের সঞ্চালয়নায় প্রধান অতিথি ছিলেন- জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম আহসান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন আহম্মেদ বাবু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সবুজ শিকদার, মহানগর মহিলা শ্রমিকলীগের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর খোদেজা খানম নাসরিন ও জেলা মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিলা আহম্মেদ নিশি প্রমুখ।