এমপি সেলিম বলেছেন ‘জনগণের কাছে যান’ কিন্তু তারা করোনাকালেও উধাও!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের দানবীর খ্যাত এমপি একেএম সেলিম ওসমান সদর ও বন্দর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বেশকটি সমাবেশ করেছিলেন।  ওইসব সমাবেশ থেকে এমপি সেলিম ওসমান তার আসনের ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে ৭জনের প্রতি আগামী নির্বাচনে সমর্থন ঘোষণাও করেছেন।  যাদের মধ্যে ৬জনই বর্তমান চেয়ারম্যান। আরেকজন গত নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী।

ওইসব সমাবেশে এমপি সেলিম ওমমান ওই ৭জনকে বলেছিলেন, ‘চেয়ারম্যান বানানোর ক্ষমতা আমার নাই।  চেয়ারম্যান বানাবে জনগণ।  আপনারা জনগণের কাছে যান।  জনগণের সেবা করুন এবং জনগণের ভালবাসা নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন।’

কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাকালে লকডাউনে যখন দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ, অসহায় মানুষগুলো কষ্টে দিনাতিপাত কাটাচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থন পাওয়া ৭ জন প্রার্থীর কাউকেই অসহায় জনগণের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল না।  পবিত্র ঈদ উল ফিতরেও তাদের কোনো জোরালো সহযোগীতা অসহায় মানুষ পেয়েছে সেই খবর দিতে পারেনি ওইসব ইউনিয়নের মানুষগুলো।  করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তারা উধাও হয়ে গেছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এসব চেয়ারম্যান ও আরেকজন চেয়ারম্যান প্র্রার্থী মনে করছেন এমপি সেলিম ওসমান তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছেন তাই তারা চেয়ারম্যান হয়ে গেছেন এমন একটা ভাব তাদের মাঝে বিরাজ করছে।  যে কারনে তারা করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি।

জানাগেছে, সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি।  গত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন।  চলতি বছর আলীরটেক ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে আবারো মতিউর রহমান মতিকে নিজের সমর্থনের ঘোষণা দেন এমপি সেলিম ওসমান।  তবে সেই ঘোষণার পর অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদকে নিয়ে নির্বাচন ও সুষ্ঠ ভোটের দাবিতে আন্দোলনে নামেন আলীরটেক ইউনিয়নবাসী।  নিয়মিত তারা নির্বাচনের দাবিতে সভা সমাবেশ করে আসছেন।

গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন নওশেদ আলী।  যিনি কয়েক মাস পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছেন।  এখানে গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা জসিম উদ্দীন।  তবে এবারের নির্বাচনে গোগনগরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে জসিম উদ্দীনকে নিজের সমর্থন ঘোষণা করেছেন এমপি সেলিম ওসমান।

একইভাবে বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মুুছাপুুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাকসুুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহাম্মেদ, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ সালাম, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহাম্মেদকে নিজের সমর্থন ঘোষণা করেছেন এমপি সেলিম ওসমান। প্রতিটি ইউনিয়নে সমাবেশ করে নিজের সমর্থন ঘোষণা করেছেন এমপি সেলিম ওসমান।

তিনি দাবি করেছেন উন্নয়নের স্বার্থে তিনি এসব চেয়ারম্যানদের সমর্থন ঘোষণা করেছেন এবং তাদেরকে বলেছিলেন, আপনারা জনগণের কাছে যান।  কিন্তু সেলিম ওসমানের সমর্থনের ঘোষণার পর উল্টো জনগণের মাঝে আগের চেযে কমই দেখা গেল এসব চেয়ারম্যানদের।  করোনার প্রথম ধাপে কিছু চেয়ারম্যানকে জনগণের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেলেও এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থন ঘোষণার পর করোনার দ্বিতীয় ধাপে এসব চেয়ারম্যানদের খুজেই পায়নি অসহায় মানুষগুলো।