ডিস ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ: বিস্তারিত জানালেন শুভ রায়

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

চাঁদা না দেয়ায় নারায়ণগঞ্জে ডিস লাইনের ক্যাবল কেটে দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের ও পরবর্তীতে মিডিয়াতে সেই অভিযোগ প্রকাশ হওয়ার পর ওই ঘটনার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন শুভ রায় ও শান্ত। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন শুভ রায়।

মিডিয়াতে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে শুভ রায় প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও অনলাইন নিউজে যে সংবাদ উপস্থাপন হচ্ছে তার জন্য আমি লজ্জা বোধ করছি। কারন এর সাথে পুরো ঘটনা না জেনে এমন নিউজ করায় আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কেননা আমি ও আমার বন্ধু শান্ত কোন সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজ নই।’

‘এছাড়া নিকটস্থ থানায় আজও পর্যন্ত আমার নামে কোন অভিযোগ নেই। প্রকৃত অর্থে আমি একজন থানকাপড় ব্যবসায়ী এবং শহরের উকিলপাড়া এলাকায় আমার নিজস্ব দোকানও রয়েছে। আমার বন্ধু শান্ত সেও আমার সাথে একই ব্যবসা করে। উল্লেখ্য, তোলারাম কলেজে অনার্স পরীক্ষা দেওয়ার পর পারিবারিক আর্থিক সমস্যাজনিত কারনে ছাত্রজীবনের সমাপ্তি ঘোষণা করে বিদেশ যাই এবং দীর্ঘ পাঁচ বছর পর দেশে এসে উপার্জিত অর্থ দিয়ে থানকাপড়ের ব্যবসা শুরু করি। আর সে ব্যবসার সাথে কিছুদিন পর বন্ধু শান্তও যুক্ত হন।

‘একসময় আমার বাবা স্ট্রোক করে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। সেই সময় পুরো পরিবারের হাল নিজ কাধে নিতে হয় বিদায় কিছু টাকা সাইড ব্যবসা হিসেবে বাংলাবাজার মুক্তার ক্যাবলের মালিক মোঃ মুক্তার মিয়ার সাথে ব্যবসায়িক পার্টনার হই। কেননা মুক্তার মিয়াও সেই সময় আর্থিক সমস্যায় ছিলেন। অতঃপর মাস শেষে বিনিয়োগের উপর ভিত্তি করে কিছু লভ্যাংশ দেওয়া হত যা দিয়ে আমার সংসারের খরচ কিছুটা স্বচ্ছল হতো। যদিও আমি নিজে সেখানে সময় দিতামনা। কারন মুক্তার ক্যাবল দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত সেই এলাকায় সুনামের সহিত সার্ভিস দিয়ে আসছিল।’

‘এমতাবস্থায় কিছুদিন পূর্বে মুক্তার ক্যাবলের লাইন ছেড়ে দেবার জন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু (ওরফে ডিশ বাবু) জানান লাইন ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে। তখন নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না থাকার পরেও তিনি জানান লাইন ছেড়ে দিতে। অন্যথায় লাখ দশেক টাকা অগ্রিম বাবদ পুণরায় দিতে হবে। সে সময় বিষয়টি মুক্তার মিয়া পার্টনার হিসেবে আমাকে অবহিত করেন। তারপর আমি আমার বন্ধু শান্তকে নিয়ে আব্দুল করিম বাবু কাউন্সিলরের অফিসে যোগাযোগ করি। শান্তর সাথে উনার সুসম্পর্ক থাকায় শান্ত আমার সাথে উনার অফিসে নিয়ে যান এবং তাদের মধ্যে চাচা ভাতিজা সম্পর্কের জের ধরে লাইন বিষয়ে অনুরোধ জানান।’

‘তারপর আমিও বাবু চাচার নিকট অনুনয় বিনয়ের সহিত নিজ পরিবারের সমস্যা জানাই এবং লাখ দুয়েক টাকা অনেক কষ্ট করে ব্যবস্থা করে এনেছি আর কয়েকটা মাস সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। আর আমার বাবা কিছু দিন পূর্বে ইন্তেকাল করেছে তাই অনেক সমস্যায় জর্জরিত আছি বলে তার কাছে বিশ্লেষণ করি। তারপর বাবু চাচা টাকা ফেরত দিয়ে সময় নেন এবং তিনি ভেবে জানাবেন বলে আমাদের আশ্বাস দেন। অন্যথায় আমি যদি ২০ লাখ টাকা দিতে পারি তাহলে এই এলাকা বাদ দিয়ে পুলিশলাইনে ১৫০০ লাইনের এক এরিয়া আছে তা নেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেন! কিন্তু আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত থাকায় আমি আর একমত হতে না পেরে চলে আসি তার অফিস থেকে। তারপর বেশ কিছুদিন তার অফিসে একই অনুরোধ নিয়ে গিয়ে ব্যর্থ হই। এক সময় পাশের বিভিন্ন এলাকার প্রভাবশালী লোকজন আমার লাইন এরিয়াতে এসে দখলদারির মতন যুক্ত হতে থাকে এবং নানান হুমকি ধমকি দিতে থাকে। এক পর্যায় শুনি উনাদের কাছে নাকি বাবু চাচা লাইন বিক্রি করছে।’

‘এমতাবস্তায় অনেকটা চিন্তিত হয়ে বাংলাবাজার কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল্লা বাদলের কাছে সব ঘটনা নিয়ে স্বরনাপন্ন হই। তিনি সব শুনে তিনি এর মিমাংসা করে দিচ্ছেন বলে আশ্বাসও প্রদান করেন। কিন্তু সেই রাতেই বাবু চাচার কন্ট্রোল রুম থেকে বাংলাবাজার এর লাইন সুইচ অফ করে দেওয়া হয়। প্রায় চার পাচ দিন বাংলবাজার এলাকাবাস ডিশ লাইন বিচ্ছিন্ন থাকে। তখন তার সাথে বার বার যোগাযোগ করতে গিয়েও আমরা ব্যার্থ হই। এইভাবে চার-পাঁচ দিন ডিশ লাইন বিচ্ছিন্ন থাকে উক্ত এরিয়ায়। বাবু চাচার সাথে আমাদের কারোই কোন ব্যাক্তিগত দন্ধ ও শত্রুতা নেই এবং সে একজন একটি ওয়ার্ডের সম্মানিত কাউন্সিলর ও জনপ্রতিনিধি। তাই তাহার সন্মানের দিক বিবেচনা করে আমরা কোন আইনী অভিযোগ বা বেয়াদবি হয় এমন কিছুর দিক চিন্তা না করে বিভিন্ন ময় মুরুব্বিদের নিকট নিজেদের সমস্যার দিক বিবেচনা করে বাবু চাচার একটু সুনজর কামনা করি। যাতে আমাদের পরিবারের পেটে লাথি না পড়ে।’

‘কিন্তু বাবু চাচা বয়সেও সব দিক দিয়ে আমাদের অনেক সিনিয়র। তাই উনার সন্মানে আঘাত আসার মতন এমন কোন কাজের সাথে জড়িত হবো বলে কখনো ভাবিও নেই। এখন কিসের উপর ভিত্তি করে এই অভিযোগ করছেন তা সঠিক বলতে পারবো না। আর আমি নিজে এবং শান্ত কোন ক্যাবল নেটওয়াকের কাটার সাথে সম্পৃক্ত নই। সেই সাথে তরুণ প্রজন্মের অহংকার অয়ন ওসমান সাহেবের নাম বিক্রি করার প্রশ্নই আসে না, কেননা তিনি নারায়ণগঞ্জের হাজারো ছাত্র জনতার আইডল হিসেবে পরিচিত তিনি। আর বাবু চাচা নিজেও নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী কাউন্সিলরদের মধ্যে একজন এবং তার কাছে লাইসেন্স কৃত অস্ত্রও আছে নিজ নিরাপত্তার জন্য তাও অনেকের জানা। সেইদিক বিবেচনা করে শুধু আমি কেনো কারোই চাঁদা দাবি করে হুমকি ধমকি দিতে সাহস হবে বলে আমি মনে করি না। তাই প্রকাশিত সংবাদের নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিক ভাইদের সঠিক তথ্য জেনে সত্য ঘটনা প্রকাশ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’