ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন: তবুও তারা নির্বাচন ও ভোটের লড়াই চান!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন পরিষদ ও বন্দর থানাধীন ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী আমেজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এই ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টিতেই বর্তমান চেয়ারম্যানদের প্রতি নিজের সমর্থণ ঘোষণা করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। বাকি একটিতে বর্তমান চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে একজনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন এই এমপি। যেখানে তিনটি ইউনিয়নে এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থিত প্রার্থী থাকলেও সেখানে নির্বাচন ও ভোটের লড়াইয়ের দাবিতে রীতিমত আন্দোলন শুরু হয়েছে।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন মতিউর রহমান মতি। এখানে তিনি গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ী সায়েম আহাম্মেদ। কিন্তু স্থানীয় মুরুব্বী ও প্রভাবশালীদের অনুরোধে সায়েম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ওই নির্বাচনে মতিউর রহমান মতি সায়েম আহাম্মেদকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে পরবর্তী নির্বাচনে তিনি নির্বাচন করবেন না এবং সায়েম আহাম্মেদকে সমর্থন করবেন। এমনটাই বিভিন্ন উঠান বৈঠকে বলেছেন সায়েম আহাম্মেদ।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সায়েম আহাম্মেদ বলেছেন, মতি আমার কাছে চেয়ারম্যানি ভিক্ষা চেয়েছিল। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবার নির্বাচনে নির্বাচন করবেন না।

তবে এর আগেই আলীরটেক ইউনিয়নে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমপি সেলিম ওসমান। সেখানে তিনি আবারো মতিউর রহমান মতিকেই চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান বলে মত প্রকাশ করেন।

এমপি সেলিম ওসমানের এমন ঘোষণার পর আলীরটেক ইউনিয়নে নির্বাচন ও ভোটের লড়াইয়ের দাবিতে আন্দোলনে নামেন আলীরটেক ইউনিয়নবাসী। যে আন্দোলনে সমর্থন জুগিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহাম্মেদ। হাজার হাজার মানুষ নিয়ে সায়েম আহাম্মেদ নির্বাচন ও ভোটের দাবিতে শোডাউন করেছেন। তার দাবি- নির্বাচন হোক এবং জনগণ ভোট দিক। ভোটের মাধ্যমে যিনি নির্বাচিত হবেন তিনিই চেয়ারম্যান হবেন।

এদিকে সম্প্রতি কয়েক মাস পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছেন গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী। কয়েক মাস পূর্বে গোগনগর ইউনিয়নের একটি অনুুষ্ঠানে এমপি সেলিম ওসমান উপস্থিত হয়ে সেখানে তার সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগ নেতা জসিম উদ্দীনের নাম ঘোষণা করেন। গত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন।

কিন্তু এই ঘোষণার পর নির্বাচনী মাঠে নামেন নওশেদ আলীর ভাই ফজর আলী। তিনি আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী। ইতিমধ্যে তিনি বেশকটি নির্বাচনী বৈঠক করেছেন। তিনিও চান গোগনগর ইউনিয়নে নির্বাচন ও ভোটের লড়াই হোক।

অন্যদিকে কৌশলে নির্বাচনের পথে এগুচ্ছেন বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দীন। তিনি সরাসরি নির্বাচনের দাবি না তুুলতে পারলেও তিনি প্রতিনিয়ত কলাগাছিয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী কর্মকান্ডে সক্রিয়। বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি হলেও তার সকল কার্যক্রম এখন কলাগাছিয়া ইউনিয়নে। যে কারনে তিনি প্রকাশ্যে কোনো দাবি না তুললেও তিনি নির্বাচনের দিকেই হাটছেন।

এর আগে কলাগাছিয়া ইউনিয়নেও বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধানের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এমপি সেলিম ওসমান। ওই অনুষ্ঠানে আবারো দেলোয়ার হোসেন প্র্রধানকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন এমপি সেলিম ওসমান। যদিও ওই সভায় কাজিম উদ্দীন নিজেও ছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে কাজিম উদ্দীন কোনো বক্তব্য না দিলেও তিনি নির্বাচনী কর্মকান্ডে সক্রিয়। তার ঘনিষ্ঠ কর্মী সমর্থকেরা নিয়মিত নির্বাচনের দাবিতে কাজিম উদ্দীনকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।