যোগ্যতার প্রমাণ দিলেন ইকবাল পারভেজ, আবারো কর্মীরা চাঙ্গা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি ইকবাল পারভেজ। ওই নির্বাচনের আগে আড়াইহাজারে আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মীরা চেয়েছিলেন ইকবাল পারভেজকে। কিন্তু টানা তৃতীয় বারের মত এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম। নেতাকর্মীদের দাবি- জনপ্রিয়তায় নয় শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে এখানে এমপি থাকায় নজরুল ইসলাম বাবুকে মনোনয়ন দেয়া হয়। কারন প্রশাসনিক ক্ষমতাটা যেনো সঠিক ব্যবহৃত হয়। সে কারনেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকলেও ইকবাল পারভেজ মনোনয়ন পাননি। তবে এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দেখিয়েছেন তার বিজয়। তার রাজনৈতিক যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন তিনি। আবারো আড়াইহাজারে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হযে ওঠেছেন।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার। তিনি এর আগে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে গিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজের জন্য মনোনয়ন চেয়ে কাজ করেছিলেন। শুধু তাই নয় নজরুল ইসলাম বাবুর বিরোধী সরাসরি বক্তব্যও রেখেছিলেন হেলো সরকার।

এবারের নির্বাচনে নজরুল ইসলাম বাবু চেয়েছিলেন বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজাহাল মিয়াকে। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল হেলো সরকারের পক্ষে সুপারিশ করে কেন্দ্রে নাম পাঠায়। ফলে এখানে মনোনয়ন ইকবাল পারভেজের ঘনিষ্টজন পান হেলো সরকার। তার মনোনয়ন ভাগিয়ে আনতে কাজ করেছিলেন ইকবাল পারভেজ। আবারো আড়াইহাজারে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে।

জানাগেছে, এর আগে আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ করেছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের চার নেতা। দলটি থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতুহল দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছে নৌকার মাঝি। মনোনয়ন পেতে লবিং করে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজালাল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ ভূঁইয়া, থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিঞা মুহাম্মদ আলাউদ্দিন ও উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হোলো সরকার।

অন্যদিকে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছেন স্থানীয় নজরুল ইসলাম বাবুর ভাগিনা ও থানা যুবলীগের সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন মোল্লা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শরীফুল ইসলাম শরীফ। তবে আওয়ামীলীগ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ঝর্ণা রহমানের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোন মনোনয়ন দিবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামীলীগ। ফলে এ দুটি পদে একাধিক প্রার্থী থাকতে পারবেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও তার পক্ষে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা না থাকায় তিনি নির্বাচন নিয়ে এখন আর কোন কথাই বলছেন না। তার পক্ষে তেমন কোন গ্রহণযোগ্যতা ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সমর্থন দেখা যায়নি।

চেয়ারম্যান পদে হেলো সরকারের পক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ইকবাল পারভেজের সমর্থন থাকতে পারে বলে আগেই নেতাকর্মীরা ধারণা করেছিলেন। এমনকি তার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে লবিং করতেও পারেন ইকবাল পারভেজ বলেও জানায় নেতাকর্মীরা। কারন কয়েক বছর ধরে হেলো সরকার ইকবাল পারভেজের পক্ষে আড়াইহাজারে কাজ করে আসছিলেন। এদিকে রশিদ ভূইয়া কেন্দ্রীয়ভাবে লবিং করছিলেন। সম্ভাবনা দেখছেন টানা দুইবার চেয়ারম্যান থাকা অনেক চেয়ারম্যান প্রার্থীদের এ বছর মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামীলীগ। ফলে শাহজালাল মিয়া মনোনয়ন না পেলে রশিদ ভ্ূঁইয়া কিংবা হেলো সরকারের হাতেও ওঠবে পারে নৌকা প্রতীক- এমনটাও নেতাকর্মীরা বলেছিলেন।

তবে এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপির ভাগিনা ইকবাল হোসেন মোল্লাকে জোড়ালোভাবে নির্বাচনে দেখা যেতে পারে এবং ইকবাল হোসেন মোল্লার পক্ষেই হয়তো এমপি বাবুর সমর্থনও থাকতে পারে। কারন ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামীলীগের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হতে পারলে তাকেও স্বাগত জানানো হবে। এখন দেখার বিষয় আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কি নাটক অপেক্ষা করছে। কারন এক ধাপ রাজনৈতিক জয়টা ছিনিয়ে এনেছেন ইকবাল পারভেজ। এখানে হেলো সরকার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে বর্তমান এমপির অবস্থান একেবারেই নড়বড়ে হয়ে যাবে। কারন এখানে নেতাকর্মীদের প্রথম পছন্দ ইকবাল পারভেজ। জাতীয় নির্বাচনের আগে এখানে পরিবর্তনের শ্লোগান তুলে নেতাকর্মীরা ইকবাল পারভেজকেই চেয়েছিলেন।