সোনারগাঁয়ে দুই ভাষা সৈনিককে সংবর্ধনা দিলো ইউপি চেয়ারম্যান জিন্নাহ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের দুই ভাষা সৈনিককে সংবর্ধনা দিয়েছেন উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ।

ভাষা সৈনিক রেজাউল করিম ও মঞ্জুরুল হক শিকদারকে এই সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং মাতৃভাষার আন্দোলনের বিষয়ে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

২১ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকেলে সোনারগাঁ উপজেলা সনমান্দী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু লাইব্রেরী মাঠে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতি সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ ভাষা সৈনিক রেজাউল করিম ও মঞ্জুরুল হক শিকদারকে উত্তরীয় পড়িয়ে দেন এবং সম্মাননা ক্রেস্ট হাতে তুলে দেন। এসময় ভাষা শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তফা মুন্না। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজকের দিনে ভাষা সৈনিকদের সাথে সাক্ষাত করতে পেরে গর্ববোধ করছি। তাদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশপ্রেমে উদ্ভদ্ধ হবে তরুণ প্রজন্ম।

ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হক শিকদার বলেন, বাঙালীর কথা বলার অধিকার আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে ৫২ এর একুশে ফেব্রুয়ারি রাজপথে নেমেছিলাম। এরপর একাত্তর এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে হানাদার মুক্ত করি। আমাদের এই অর্জন এত সহজ ছিলো না। নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে আমরা এই স্বাধীনতা পেয়েছি। এখন এই স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব তোমাদের। এসময় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন।

অপর ভাষা সৈনিক রেজাউল করিম বলেন, স্বাধীনতার বীজ বপন হয় ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই। ৪৭ থেকে ৫২ সাল পর্যন্ত আমরা শুধু দেখেছি কিভাবে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দেশের দুই তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা পূর্বপাকিস্তানের হলেও উন্নয়ন হতো পশ্চিম পাকিস্তানে। সকল দিক থেকে বঞ্চিত হতাম, যখন মায়ের ভাষায় কথা বলা থেকে বঞ্চিত করতে চাইলো তখন ঘরে বসে না থেকে নেমে পড়লাম ভাষা আন্দোলনে।

সোনারগাঁ উপজেলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম খোকন বলেন, আজকের দিনটি আমার জীবনে স্মরনীয় হয়ে থাকবে। ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের কথা শুনে দেশের প্রতি ভালোবাসা অনেক বেড়ে যায়। তাদের অর্জিত স্বাধীনতা আমরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও রক্ষা করবো।

এই ভাষা সৈনিক সংবর্ধনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্টানের সভাপতি ও সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ বলেন, আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সেই সাথে তিনি মুক্তিযুদ্ধেও অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন। তার উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাকে স্বাধীন করা। আমরা ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের কাছে ঋনি। তেমনি বীর মুক্তিযুদ্ধাদের কাছেও আমরা ঋনি।

এ সময় সনমান্দী ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য হারুন অর রশিদের সঞ্চালনায় সনমান্দী ইউপির নির্বাচিত সকল সদস্যবৃন্দ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার আমিনুল হক, থানা শ্রমিকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম বাবুল, মোগরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি, ইউনিয়ন কৃষক লীগ সভাপতি জামাল হোসেন, ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন প্রমূখ।