শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আড্ডায় কুশিকাটায় বাড়তি আয়

মাহবুব আলম প্রিয়, রূপগঞ্জ থেকে:

শিশুদের নিরাপত্তা দিতে আজকাল অভিভাবকরাও সকাল ৮টা থেকে বিকাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন। সাধারনত সে সময়টা অনেকেরই আড্ডায় কেটে যায়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের আব্দুল হক ভূঁইয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের আঙ্গীণায় দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র।

সরেজমিন দেখা যায়, এখানে আসা অভিভাবকরা সেই অবসর সময় কুশিকাটার মাধ্যমে শরীর মাজন, জামায় নকশি ও কারচুপি ও টুপি সেলাই করে সময় কাটান। এতে তাদের বাড়তি আয় হয় বলে জানা গেছে। কথা হয় মধূখালী এলাকার গৃহবধু সিমুর সঙ্গে। তিনি জানান, তার এক ছেলে ৫ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাতায়াত ও অভিভাববক হিসেবে খেয়াল রাখতে হয় তাকে।

তিনি আরও জানান, তাই বিদ্যালয়ে বসেই কুশিকাটার মাধ্যমে শরীর মাজনী তৈরী করেন। এ মাজনী তৈরীতে স্থানীয় মহাজন থেকে প্রতি মাজনী ছোট সাইজের তৈরী করে দিলে ৪ টাকা আর বড় সাইজের জন্য ৭ টাকা পান। এভাবে দিনে ২০টির অধিক তৈরী করতে পারেন। ফলে গড়ে দেড় থেকে দু’শ টাকা আয় করতে পারেন দৈনিক। অবসর সময়ে এমন আয় তার ছেলের লেখাপড়ার খরচ ও সংসারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাদানে ভুমিকা রেখেছেন তিনি।

একইভাবে আকলিমা বেগম প্রতিদিন টুপি সেলাই করেন। পাঞ্জাবী ও অন্যজামায় কারচুপির কাজ করে এভাবেই দিনে আয় করেন ২’শ থেকে ৩’শ টাকা। এতে তাদের সংসারে রান্না বান্না ও গৃহস্থালি কাজের সমস্যা হয় না। বরং অবসয় সময়ে এমন আয় করতে পেরে তারা খুশি।

বিদ্যালয়ের পরিচালক মনিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, গরীব অভিভাবকরা প্রথমে এ কাজ শুরু করেন। তারা প্রথমে আড্ডা দিয়ে সময় কাটাতো এখন তাদের সন্তানরা বিদ্যালয়ে পাঠদানকালে কুশিকাটা মাধ্যমে আয় করছেন। একদিকে বিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীরাও নিয়মিত হচ্ছেন এবং অন্যদিকে অভিভাবকরা কাজের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, সুন্দর একটি আইডিয়া পেলাম। বিদ্যালয়ে যাতায়াতকারী অভিভাবক বা গৃহবধূ যারা আছেন তাদের সেই অবসর সময়ে হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ দিয়ে বিষয়টি আরো সম্প্রসারিত করলে অর্থনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব হবে। বিষয়টি নিয়ে কাজ করবো।