এমপি বাবুর ফুলের মালা গলায় নিয়ে জেলা বিএনপির কমিটিতে কাশেম ফকির!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদে দায়িত্ব পেয়েছেন আড়াইহাজারের আবুল কাশেম ফকির। কমিটিতে পদ পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগে যোগদানের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির নেতারা। গত ৩০ ডিসেম্বর অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে আহ্বায়ক ও অধ্যাপক মামুন মাহামুদকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য পদে অধিষ্ট হোন আবুল কাশেম ফকির। তিনি জেলা বিএনপির বিগত কমিটির সহ-সভাপতি মাহামুদুর রহমান সুমনের অনুগামী হিসেবে পরিচিত।

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনের আওয়ামীলীগের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ফুলের মালা দিয়ে কাশেম ফকিরকে আওয়ামীলীগে বরণ করেছেন বলে অভিযোগ। এ সংক্রান্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতি সভায় আবুল কাশেম ফকির আওয়ামীলীগে ফুল নিয়ে যোগদান করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন জেলা বিএনপির আরেক সদস্য ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী ভুঁইয়া। ওই অভিযোগ তোলার পর পরিচিতি সভা শেষ না করেই সভা ত্যাগ করেছিলেন আবুল কাশেম ফকির।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কাশেম ফকির সান নারায়ণগঞ্জকে বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আমি দীর্ঘ ৯ মাস বাড়িতে আসতে পারিনি। ৯ মাস পর আমি বাড়িতে আসি। এর আগে আমার ছেলেকে পুুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। বাড়িতে আসার পর আড়াইহাজারের কড়ইতলা এলাকার একটি অনুষ্ঠানে আসেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। ওইদিন সেখান থেকে আমার বাড়িতে ১০/১২ জন লোক পাঠায় আমি যেনো সেখানে যাই। ভাবলাম এতদিন পর বাড়িতে এসেছি, এখন এমপি ডাকলো, না গেলে তো আরো বিপদ হবে। এই ভেবে আমি সেখানে যাই। তখন এমপি আমার গলায় ফুলের মালা পড়িয়ে দেন। আমি সাথে সাথে চলে আসি। আওয়ামীলীগে যোগদানের কোন প্রশ্নই আসেনা। এখন আওয়ামীলীগ বলে আমি বিএনপি করি, বিএনপির নেতারা বলছে আমি আওয়ামীলীগ করি। এখন যামু কই?

জেলা বিএনপির পরিচিতি সভা শেষ হওয়ার আগেই চলে যাওয়ার বিষয়ে আবুল কাশেম ফকির বলেন, পরিচিতি সভায় ইউসুফ আলী ওই ছবির বিষয়ে কথা তুলেছিল। আমি দেখলাম যে আমিও যদি উত্তর দিতে যাই তাহলে পরিচিতি সভায় বিশৃঙ্খলা হবে। তাই আমি আহ্বায়ককেই বলে সভা থেকে চলে আসছি। ইউসুফ আলী ভুঁইয়া এতদিন কোথায় ছিলেন? রাজপথে রাজনীতি করেছি আমরা। তাকে তো গত দশ বছরেও একটি কর্মসূচিতেও দেখা যায়নি।

অন্যদিকে আড়াইহাজারের রাজনীতির সূত্রে জানাগেছে, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন প্রয়াত এএম বদরুজ্জামান খান খসরু ও সাধারণ সম্পাদক পদে হাবিবুর রহমান হাবু। ২০১২ সালের দিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে হাবুকে শোকজ করেছিলেন তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার। শোকজের জবাব না দেয়ার কারনে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আবুল কাশেম ফকিরকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে বর্তমানে তারা দুজনই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে রাজনীতি করছেন।

এ ছাড়াও এএম বদরুজ্জামান খান খসরুর মৃত্যুর পর আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে মীরজুল হাসান নয়ন মোল্লাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও খসরুর ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমনই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করে আসছেন।