এবার বঞ্চনা নয়, দাবি ত্যাগের মুল্যায়ন!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। একজন নিরহংকারী মানুষও তিনি। দীর্ঘদিন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পদে থাকলেও টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি ধান্ধাবাজি কিংবা অসৎ পন্থায় টাকা কামানোর দ্বারে কাছেও যার ছায়া থাকার অভিযোগ ওঠেনি। অথচ আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় তৃতীয় মেয়াদে। বিএনপি-জামাত জোট সরকার আমলে যার বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর চালানো হয়েছিল। বিএনপি জামাত শাসনামলে রাজপথে যার সক্রিয় ভুমিকা ছিল। পুলিশের লাঠিপেটায় রাস্তায় যিনি শুয়ে পড়েছিলেন। তিনি হলেন গাজী মজিবুর রহমান যিনি একজন স্বচ্ছ সাদা ক্লিন ইমেজধারী ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। এমনটাই দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গাজী মজিবুর রহমানের নেতাকর্মীরা।

এবার তার কর্মীসমর্থকরা আশায় বুক বেধেছেন তাদের দল আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজী মজিবুর রহমানকে মুল্যায়ণ করবেন। আগামী সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে গাজী মজিবুর রহমানের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দিয়ে আওয়ামীলীগের সকল নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিবেন যেনো ঐক্যবদ্ধ হয়ে গাজী মজিবুর রহমানের নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করা হয়। সেই স্বপ্নে এবার নেতাকর্মীরা গাজী মজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে পুরোদমে প্রচারণায় নেমেছেন। গাজী মজিবুর রহমানের অবমূল্যায়ন বঞ্চনা লাঞ্ছনা এবার দেখতে নারাজ তার নেতাকর্মীরা।

জানাগেছে, গাজী মজিবুর রহমান বিএনপি-জামাত জোট সরকার আমলে রাজপথে কঠোর ভুমিকা রেখেছিলেন। বিএনপি জামাত ক্ষমতায় আসার পর গাজী মজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা সহ তার পরিবারের লোকজনের উপর ব্যাপক অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন ছিল সেই আমলে সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। শত বাধার পরেও রাজপথের আন্দোলন থেকে সটকে পড়েননি গাজী মজিবুর রহমান। গাজী মজিবুর রহমানের সঙ্গে ওই সময় হাজার হাজার যুবলীগের নেতাকর্মীরাও রাজপথ আন্দোলনে কাঁপিয়েছেন।

গাজী মজিবুর রহমানের সঙ্গে ওইসব নেতাকর্মীরাও দীর্ঘদিন হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। যাদের খোঁজ রাখার মত একমাত্র গাজী মজিবুর রহমান। অথচ সেই গাজী মজিবুর রহমানই দলের কাছে অবম্যূায়িত। তবে এবার তারা হাল ছাড়ছেন না। তাকে এবার তারা সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র হিসেবে দেখতে চান। গাজী মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্বাচনী বেশির ভাগ কর্মসূচিতে একটাই দাবি ওঠছে তার ত্যাগের বিনিময়ে মূল্যায়ন করা হোক। সোনারগাঁয়ে রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের বিরোধী ছাড়া গাজী মজিবুর রহমানের নামের আগে পেছনে কোন বিতর্ক নেই।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ২০১১ সালে সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করেছিলেন গাজী মজিবুর রহমান। ওই নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও আওয়ামীলীগের বিরোধ ও গ্রুপিংয়ের কারনে তাকে পেছন থেকে পরাজিত করা হয়। ওই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন ছিল না। কিন্তু গত ২০১৫ সালের নির্বাচনটি দলীয় প্রতীকে হলে দলের নৌকা প্রতীক চেয়েছিলেন গাজী মজিবুর রহমান। কিন্তু তাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করে তার বিশাল কর্মীবাহিনীকে হতাশায় ফেলে দেয়া হয়। মুলত রাজনৈতিক নেতাদের দুটি গ্রুপের তুমুল লড়াইয়ের কারনে গত নির্বাচনে পিছিয়ে যান গাজী মজিবুর রহমান।

এদিকে নেতাকর্মীরা বলছেন- এবার গাজী মজিবুর রহমান কোমরে কাছা বেধে নেমেছেন। তার সঙ্গে নির্বাচনী মাঠে তার কর্মীবাহিনীও। এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের সুদৃষ্টি রয়েছে গাজী মজিবুর রহমানের দিকেই। কায়সার ও মোশারফ বলয়ে একত্রে রাজনীতি করছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা এইচএম মাসুদ দুলাল সহ বেশকজন নেতা। ফলে গাজীর এবার শক্ত অবস্থান।

গত ২০১৫ সালের নির্বাচনের ইস্যূতে জানাগেছে, নির্বাচনের শুরুতে জেলার প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান ও স্থানীয় জাতীয়পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা পৌরসভার আমিনপুর মাঠে সমাবেশ করে বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমানের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দেন। কিন্তু নির্বাচনে আড়াইহাজারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ও সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত নির্বাচনী মাঠে নামেন এমপি বাবুর ভগ্নিপতি এটি ফজলে রাব্বীকে নিয়ে। তাদের দুই গ্রুপের শক্তির লড়াইয়ে পেছনে পড়ে যান গাজী মজিবুর রহমান। তিনিও নৌকা প্রতীক চাইলেও মনোনয়ন পান ফজলে রাব্বী। কিন্তু নির্বাচনে ভেতরগতভাবে এমপি শামীম ওসমান ও এমপি খোকা কাজ করেছেন মেয়র সাদেকুর রহমানের পক্ষেই। যার কারনে নৌকার ভরাডুবিতে বিজয়ী হোন সাদেকুর রহমান।