বিএনপি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানালেন তৈমূর আলম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

অনেক আলোচনা, সমালোচনা, ব্যর্থতার মধ্যেও সময়োচিত সিদ্ধান্ত অর্থাৎ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নীচ পর্যন্ত প্রতিটি সাংগঠনিক স্তরে সরাসরি ভোটে সাংগঠনিক কাঠামো অর্থাৎ অফিস বিয়ারায় (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) নির্বাচিত করার সিদ্ধান্তকে তৃণমূলের সাথে আমি নিজেও বিএনপি হাইকমান্ড নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

কারণ এটা ছিল সময়ের দাবী, তৃণমূলের প্রাণের দাবী। এতোদিন অনেক ক্ষেত্রে তদবীর ভিত্তিক বা সুপারিশ ভিত্তিক যে কমিটি হয়েছে তার ফলাফল নিশ্চয় আশানুরূপ হয় নাই, বরং দলের তৃণমূলে অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্রের ব্যাপ্তয় ঘটিয়ে বিএনপি ও অংঙ্গ দলের জাম্বু মার্কা কমিটি করা হয়েছে, দলের আন্দোলন সংগ্রামে যার কোন ভূমিকা নাই এমন লোকও কমিটিতে ঢুকেছে, আবার দলের দু:সময়ে সটকে পড়েছে। দলের কার্যকরী কমিটির সংখ্যা বৃদ্ধি করার কারণ হয়তো এই ছিল যে, অধিক সংখ্যক নেতা সৃষ্টি হলে আন্দোলন সংগ্রামে গতি এনে অনির্বাচিত সরকার পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কিন্তু সে “আশা প্রত্যাশায়” গুড়ে বালি পড়ার মত অবস্থা, যারা বড় বড় পদ পেয়েছেন তাদের একটি ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র অংশ মাঠে দেখা গেলেও অধিকাংশরা মাঠে নামে নাই বরং কোথাও কোথাও সরকারের সাথে সমঝোতা করে চলার অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, দলীয় পদ পদবীতে থেকে সরকারী দলের পক্ষে নির্বাচনেও অংশ নিয়েছে, দায়িত্ব নিয়েই আমি কথা বলছি।

দলের পদ পদবীতে থেকে যারা সরকারী দলের পক্ষে কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা বিএনপি গ্রহন করে নাই। যাদের ২০১৮ জাতীয় নির্বাচনে নমিনেশন দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই ঝুকি নিয়ে নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা করে নাই। নির্বাচনী এলাকার সাথে সম্পর্ক নাই, ভিন্ন ভিন্ন কারণে এমন লোকও নমিনেশন পেয়েছে।

অন্যদিকে ঐক্য ফ্রন্ট গঠন করেও বিএনপি কাংখিত ফল পায় নাই, বরং নিজেদের আসন অন্যদের ভাগ করে দিতে হয়েছে। ভিন্ন দলের হয়েও বিএনপি’র প্রাণের প্রতিক “ধানের ষীস” নিয়ে নির্বাচন করেছে তারাও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে কোন ভূমিকা রাখে নাই। ঐক্যফ্রন্ট বা ২০ দলীয় জোট বিএনপি’র দূ:সময়ে অর্থাৎ চেয়ারপার্সনের মুক্তির প্রশ্নে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা রাখতে পারে নাই। ফলে বিগত অভিজ্ঞতার আলোকে নিজ পায়ে দাড়িয়েই বিএনপিকে এগুতে হবে। কাহারা সুবিধাবাদী এবং কাহারা ঝুকি নিয়ে রাজপথে থেকেছে-এর একটি সুনির্দিষ্ট তালিকা হাই কমান্ডের হাতে থাকতে হবে।

বিএনপি অনেককেই রাষ্ট্রীয় ও দলীয় বড় বড় পদে আসীন করেছে, কিন্তু বিএনপি দু:সময়ে তারা কোন কাজে আসে নাই, বরং অনেকেই উল্টো পথে হেটেছে। যেমন- একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি বানানোর লক্ষ্যে ইয়াজউদ্দিনের মত একজন মেরুদন্ডহীন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে আসীনের মাধ্যমে দলটি ভুল পথের যাত্রা শুরু হয়। এখন চূড়ান্ত সময় এসেছে পরীক্ষিত কর্র্মী বাছাই করার। পরীক্ষিত কর্মী বাছাই এ ভুল করলে আবারও চরম মূল্য বিএনপি’কেই দিতে হবে। কারণ দু:সময়ের ভাগীদার কেহ হয় না বা হতে চায় না।

লেখক: তৈমূর আলম খন্দকার
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা
                এবং
কলামিস্ট, রাজনীতিক ও আইনজীবী