1. admin@sunnarayanganj24.com : dinkalnarayangan :
  2. greeceman@mail.com : greeceman :
  3. mrokon5@gmail.com : Majharul Rokon : Majharul Rokon
মধ্যরাতে সড়কে প্রতিবন্ধকতা এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন Sun Narayanganj
শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
সাগর প্রধানের বড়ভাই ডালিম প্রধানকে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার আড়াইহাজারে আঙ্গুরের ব্যর্থতায় আজাদের মুঠোবন্দি বিএনপি: কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় সুমন! সোনারগাঁও আসনে বিএনপির একক প্রার্থী: আওয়ামীলীগ-জাতীয় পার্টির টানাটানি! পবিত্র ওমরাহ পালনে যাচ্ছেন সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ, দোয়া কামনা শামীম ওসমানের সমাবেশে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের শোডাউন এমপি শামীম ওসমানের সমাবেশে হাসান ফেরদৌস জুয়েলের নেতৃত্বে আইনজীবীদের অংশগ্রহণ অয়ন ওসমানের শোডাউন নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় আইনজীবী ফোরামের বিক্ষোভ সমাবেশ সাবেক এমপি কমান্ডার সিরাজের স্ত্রীর মৃত্যুতে মহানগর বিএনপির শোক প্রকাশ শামীম ওসমানের সমাবেশে কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যোগদান

মধ্যরাতে সড়কে প্রতিবন্ধকতা এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন

সান নারায়ণগঞ্জ
  • আপডেট শুক্রবার, ১৭ জুলাই, ২০২০
  • ১ Time View
IMG 20200717 202108

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আমরা এমনিতে ভীষণ অভাগা। নিচু এলাকার মানুষ বলে কথা। আমরা জেনেছি গত শতাব্দীতে এই পৃথিবীর মানুষ মহাকাশযানে চেপে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে চাঁদের দেশে পর্যন্ত চলে গেছে। গ্লোবাল ভিলেজ হিসাবে বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। আর প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ের পানাম নগর থেকে পূর্ব সনমান্দী পর্যন্ত মাত্র ৪ কি: মি: দৈর্ঘ্যের একটা পিচঢালা পাকা সড়কের জন্য এই গ্রামের অধিবাসীদের ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন দুর্বিষহ দুঃখ আর যন্ত্রণা নিয়ে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে হয়েছে।

অত্যন্ত দু:খের সঙ্গে বলতে হয় পূর্ব সনমান্দী পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মিত হলেও পশ্চিম সনমান্দী এখনো সুষ্ঠু যোগাযোগ নেটওয়ার্কের পুরোপুরি বাইরে রয়ে গেছে। অর্থাৎ সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ এবং মোগরা পাড়া চৌরাস্তা তথা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহা সড়কের সাথে পশ্চিম সনমান্দীর এখনো পর্যন্ত কোন পাকা সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নাই। বর্ষাকালে কাদাজল মেখে কিছুটা ইট বিছানো পথে, কিছুটা কাঁচা সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দু’একটি নড়বড়ে সাঁকো বেয়ে তবেই পশ্চিম সনমান্দীর আপামর জনসাধারণেকে প্রেমেরবাজারের নিকটে এসে পাকা রাস্তায় উঠতে হয়। তারপর নাগরিক সেবা পেতে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা মোগরাপাড়া চৌরাস্তার দিকে আসতে হয়।

এতে আমাদের জনসাধারণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিশ্চয়ই কোন দায় বা জবাবদিহিতা নেই। তাই আমাদের নিজেদের প্রতিই নিজেদের অভিযোগের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার কোন অন্ত নেই। ঐ যে আগেই বলেছি, আমরা অভাগা। কিছুটা অনগ্রসর, নিচু এবং প্রান্তিক এলাকার মানুষ। যুগ যুগ ধরে বয়ে চলা আমাদের এই দুঃখ কষ্ট হয়তো সম্মানিত জনপ্রতিনিধিদের চোখেই পড়ে না। জল আর কাদামাটিতে মাখামাখি করে পথ চলতে গিয়ে এই গ্রামের অধিবাসীদের চোখের কোনে যে জল জমে গ্রীষ্মের খরতাপে একসময় সেই চোখের কোনেই আবার তা শুকিয়ে যায়। তাই কর্তাব্যক্তিদের নজরে আর পড়ে না। আমাদের নিত্যদিনের শোক-দুঃখ-গাঁথা, পালার ও কোন অবসান হয় না। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো সোনারগাঁয়ের সর্ববৃহৎ গ্রাম সনমান্দী দুই অংশে বিভক্ত। একদিকে পূর্ব সনমান্দী, অপরদিকে পশ্চিম সনমান্দী। পূর্ব সনমান্দীতে বর্তমানে আধুনিকতা এবং উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও পশ্চিম সনমান্দী এখনো অনেকটা কাঙ্খিত এবং সুষম উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।

অথচ পশ্চিম সনমান্দীর সবুজ কচিকাঁচা ছেলেমেয়েগুলি প্রতিদিন কতশত স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়। কেউ কেউ আবার পায়ে হেঁটে প্রতিদিন সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা শহরে পড়াশুনা করতে যায়। যুগের পর যুগ ধরে জীবন জীবিকার তাগিদে এই গ্রামের অধিবাসীরা প্রতিদিন হাটে বাজারে, গার্মেন্টসে অথবা হাসপাতালে যাওয়ার সময় এমনি করে যাতায়াত করে আসছে। এই গ্রাম থেকে বেড়িয়ে এসে চারদিকে তাকালেই চোখে পড়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ, সুন্দর সুন্দর পিচঢালা পথঘাট, উন্নয়নের মহাসড়কে ছুটে চলা অদম্য এক বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চোখ ধাঁধানো সব উন্নয়নের বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু, ঢাকায় নির্মিতব্য মেট্রো রেল এবং দুরন্ত গতিতে ছুটে চলার মতো নানন্দনিক এক্সপ্রেস হাইওয়ে, চার লেনের ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়কের মতো বিশাল বিশাল বাজেটের বৃহৎ সব উন্নয়ন কর্মকান্ড।

কিন্তু পশ্চিম সনমান্দী? প্রদীপের নিচেই বুঝি অন্ধকার। ঢাকা মহানগরী থেকে কতটুকু দূরেই বা এই গ্রামের অবস্থান। ঢাকা থেকে মদনপুরের দূরত্ব ১৭ কি: মি:। মদনপুর থেকে পশ্চিম সনমান্দীর দূরত্ব মাত্র ৩/৪ কি: মি: হবে। ভাবতেই কষ্ট লাগে রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ২০ কি: মি দূরবর্তী একটি গ্রামের মানুষদের কি নিদারুন উন্নয়ন বঞ্চনা আর ব্যথিত হৃদয়ের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে দিনের পর দিন বেঁচে থাকতে হচ্ছে। পশ্চিম সনমান্দী থেকে প্রেমের বাজারের দূরত্ব মাত্র ২ কি : মি:। এইটুকু পথে দুটি কালভার্ট আর একটা পিচঢালা পাকা রাস্তা করে দিলেই তো হয়তো অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। পশ্চিম সনমান্দীর অধিবাসীরা কাঙ্খিত উন্নয়নের ছোঁয়ায় নিজেদের আশা – আকাঙ্খাকে নিজেদের মতো রাঙিয়ে নিতে পারে। আমাদের জনপ্রতিনিধিদের নিশ্চয়ই এর চেয়ে অনেক বড় বড় কাজ বা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা রয়েছে। শুধু প্রয়োজন এই গ্রামটির অধিবাসীদের সুখ-দুঃখের দিকে একটু সুদৃষ্টি দেয়া। আর তাতেই পশ্চিম সনমান্দী গ্রামের অধিবাসীদের দীর্ঘ দিন ধরে মনের কোণে লালিত গোপন স্বপ্নেরা ফুলে ফলে পুষ্পিত হবে, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা এবং গ্রামীণ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণতা পাবে।

বেশ কয়েক বছর পূর্বে পশ্চিম সনমান্দী থেকে অলিপুরা বাজার পর্যন্ত রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল। রাস্তার কাজের জন্য হাজার হাজার ইট এনে রাস্তার উপর জড়ো করা হয়েছিল। পশ্চিম সনমান্দীর পার্শ্ববর্তী ছনকান্দা, কাফইকান্দা, কান্দাপাড়া, মারবদী, বৈদ্যেরকান্দি এই কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘ দিনের বঞ্চনা ভুলে নতুন আঁশায় বুক বেঁধে ছিল। তাদের পথ চলার দীর্ঘদিনের কষ্ট এই বুঝি দূর হলো। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এই বছরের শুরুতে সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের থেকে অলিপুরা বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করনের কয়েক কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। এমন সংবাদে আশে পাশের এলাকার সাম্ভাব্য উপকার ভোগী সাধারণ মানুষ মনের আনন্দে ভাসছিল। সনমান্দী সহ আশেপাশে এলাকার জনগণ এই মহৎ উদ্যোগের জন্য বর্তমান উন্নয়ন বান্ধব সরকার এবং নির্বাচিত সম্মানিত জনপ্রতিনিধিদের শ্রদ্ধা আর ফুলেল ভালোবাসা, বিপুল প্রশংসা এবং অভিবাদনে সিক্ত করে আসছিল। এই প্রকল্পের কাজ নাকি শুরু পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে দেশে করোনা মহামারি চলে আসায় রাস্তার কাজ আবার বন্ধ হয়ে যায়। তাই পশ্চিম সনমান্দী গ্রামের অধিবাসীদের মনে উন্নয়ন বঞ্চনার পুরোনা ব্যথা-বেদনা, যত হতাশা দগদগে ক্ষতের মতো আবারো জেগে ওঠেছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে সোনারগাঁয়ের মাননীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। যাতে সহসাই রাস্তার কাজ আবার দ্রুত যেন শুরু করা হয়।

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা যে শুধু উন্নয়নেরই পূর্ব শর্ত তা নয়, আমাদের প্রতিদিনের সুষ্ঠু, সুন্দর, স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য ভীষণ জরুরি এক অনুসঙ্গ। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার মতোই বর্তমানে তা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকলে উন্নত চিকিৎসা সেবা হাতের নাগালে পাওয়া যায় না। ভূক্তভোগী মাত্রই এই বঞ্চনার ব্যথা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারেন। প্রসঙ্গ ক্রমে কয়েকদিন আগের একটি ঘটনার বলি। গত ২৭ জুন, ২০২০ তারিখ দিবাগত রাতে আমার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর হঠাৎ করেই তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। যদিও আলট্রা সাউন্ড রিপোর্টে সন্তান জন্মের সম্ভাব্য তারিখ ১১ জুলাই, ২০২০ বলা হয়েছিল। করোনা মহামারির ভয়াবহতায় হাসপাতালের চেয়ে নিজ বাড়িতে সন্তান প্রসব অধিক সুবিধাজনক বিবেচনা করে আমার এক নিকট আত্মীয়া যিনি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দাই তার পরামর্শে প্রয়োজনীয় সকল আগাম প্রস্তুতি সুসম্পন্ন করে রেখেছিলাম। কোন কারণে বাড়িতে সন্তান প্রসব সম্ভব না হলে বিকল্প হিসাবে দ্রুত হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য একটি প্রাইভেট কার এবং সিজারের জন্য একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে রেখেছিলাম। দিনের বেলায় কোন ধরনের ব্যথা বা জটিলতা না থাকলেও দিবাগত রাত ১২টার দিকে আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা তীব্র হয়ে ওঠে। আমার সেই আত্মীয়া প্রসূতিকে কিছু সময় পর্যবেক্ষণ করে জানালেন বাড়িতে সন্তান প্রসব সম্ভব নয়। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

আগে থেকেই পরিচিত একজন গাড়ির ড্রাইভারকে আমি ফোন দিলাম দ্রুত আমাদের বাড়ি সনমান্দীতে তার গাড়ি নিয়ে চলে আসার জন্য। গাড়ির চালক প্রায় ছয় মাস ধরে নির্মাণাধীন থাকা প্রেমের বাজার ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে এসে আমাকে ফোন দিয়ে জানাল, ভাই রাস্তা তো বন্ধ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, রাস্তা বন্ধ মানে কি ? আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। কি বলেন এইসব? ফোনের ওপাশ থেকে ড্রাইভার বলছে, ভাই প্রেমের বাজারের পূর্ব পাশের বিকল্প রাস্তার উপর কারা জানি অনেকগুলি ড্রেজারের পাইপ এলোমেলো করে ফেলে সম্পূর্ণ রাস্তা ব্লক করে রেখেছে। এরপর আমি বললাম, তাহলে এক কাজ করেন। গাড়ি ঘুরিয়ে রাইজদিয়া বা বালুয়াদীঘির পাড় দিয়ে হামছাদি-প্রেমের বাজার হয়ে দ্রুত সনমান্দী চলে আসেন।

সঙ্গে সঙ্গে ড্রাইভার গাড়ি ঘুরিয়ে হামছাদির উদ্দেশ্যে রওনা দিল। বেশ কিছুক্ষণ পর গাড়ির চালক আবার আমাকে ফোন দিয়ে জানাল, ভাই আমি হামছাদি ব্রিজের নিকট চলে এসেছি কিন্তু ব্রিজের মোড়ের কাছে গোড়ার দিকে মাটি নাই তাই গাড়ি ব্রিজের উপর উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। আমি বললাম, একটু ভালোমতো চেষ্টা করে দেখেন। কিছুক্ষণ বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গাড়ির ড্রাইভার আবার আমাকে ফোন দিয়ে বলল, ভাই কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না, গাড়ি নিচে পড়ে যাবে। আর এত রাতে গাড়ি পড়ে গেলে মানুষ পাব কই। আমি বললাম, তাহলে উপায় কি ? তখন গাড়ির ড্রাইভার বলল, এক কাজ করেন ভাবীকে নিয়ে আপনারা রিকশা, সিনজি বা অটোতে করে সনমান্দী থেকে দ্রুত প্রেমের বাজার ব্রিজের সামনে চলে আসেন। আমি এখনই গাড়ি ঘুরিয়ে আবার প্রেমের বাজার আসছি। দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব চলে আসেন।

এইসব করতে করতে তখন ঘড়ির কাটায় রাত ২:০০ টা বাজে। এরপর সমস্যা হলো এতো রাতে রিকশা বা সিএনজি চালিত অটো কোথায় পাবো। পরিচিত কয়েকজন সিএনজি অটো চালককে ফোন দিলাম। কেউ ধরছে না। এদিকে আমার স্ত্রী ব্যথা – যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। অন্যদিকে আমার দুশ্চিন্তা বাড়তে লাগল। অগত্যা ফোনে কাউকে না পেয়ে এক সিএনজি অটো চালককের বাড়িতে গিয়ে হাজির হলাম। সে ঘুম থেকে উঠল এবং প্রেমের বাজার নামিয়ে দিতে রাজি হল। আল্লার নাম নিয়ে আমার স্ত্রী, সাথে চার বছরের মেয়ে সহ আমি সিএনজি চালিত অটোতে করে প্রেমের বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এমনিতেই ভাঙাচোরা রাস্তা তার উপর অটোর ঝাঁকুনি একজন প্রসব বেদনায় কাতর নারীর জন্য কি যে ভয়াবহ আর কতখানি যন্ত্রণার তা একমাত্র সেই ভুক্তভোগী নারী আর তার স্বজনরাই ভালো জানেন। আল্লার নাম জপতে জপতে কোন মতে প্রেমের বাজার এসে হাজির হলাম।

কিন্তু আমার কোন ধারনাই ছিল না। প্রেমের বাজারে যে কি ভয়াবহ এক বিপদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। অটো চালকের কাছে জানতে চাইলাম ব্রিজের পাশের তৈরি করা বিকল্প রাস্তায় হেঁটে প্রেমের বাজারের দক্ষিন পাড়ে কি যাওয়া যাবে ? আমার কণ্ঠ শুনে প্রেমের বাজারের একজন পাহাড়াদার বললেন যেতে পারবেন না। ড্রেজারের পাইপ ফেলার কারণ রাস্তা পুরাপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। পায়ে হেঁটে যাওয়া যাবে? তা ও নাকি যাওয়া যাবে না। আমি এবার জানতে চাইলাম, সিএনজি অটো রিকশায় করে হামছাদি হয়ে যাওয়া যাবে ? না তাও পারবেন না। যেতে চাইলে এই খাল পাড় হয়েই আপনাদের ওপারে যেতে হবে। যেহেতু সাথে গাড়ি আছে কিন্তু সনমান্দী থেকে প্রেমের বাজার ছাড়া বের হবার বিকল্প কোন পাকা রাস্তা নেই। তাই নিতান্তই পড়লাম এক মহা বিপদে।

প্রেমের বাজার খালটি প্রায় ৩০/৩৫ ফুট গভীর। খালের উত্তর পাড়ে সিমেন্টের বস্তায় কিছু বালি ভরে কোন রকম ধাপে ধাপে নিচের নামার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু তা শিশু, বয়স্ক বা অসুস্থ মানুষের জন্য কোনভাবেই নিরাপদ নয়।
আসন্ন সন্তান প্রসবা নারীর জন্য তা রীতিমতো মৃত্যুসম ভয়ঙ্কর ব্যাপার। এমনিতেই গভীর রাত তার উপর খালের মধ্যে তীব্র ঘন অন্ধকার। ব্রিজের আশেপাশে কোন আলোর ব্যবস্থা ও নেই। যদিও আমার সাথে ছোট্ট একটা টর্চ লাইট ছিল। খালের দিকে তাকিয়ে আমার স্ত্রী জোরে জোরে কান্না করছিল। সে এমনিতেই বসে বা দাঁড়িয়েই থাকতে পারছিল না। মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো তাকে এখন খালের ঢালু পাড় বেয়ে একবার প্রায় ৩০ ফুট নিচে নামতে হবে। আবার খাড়া ঢালু পাড় বেয়ে ৩০ ফুটের মতো উপরে উঠতে হবে। আমার ওয়াইফ বার বার বলছিল আমি কিছুতেই পারবো না। নামতে গেলেই আমি নিশ্চিত মারা যাব। সে একদমই নিরুপায় আর আমি তখন সম্পূর্ণ অসহায়। একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। এমনিতেই রাস্তার প্রতিবন্ধকতার জন্য দুই ঘন্টার বেশি সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছাতে হলে খালের দক্ষিন পাড়ে আমাদের যেতেই হবে।

আমি এবং গাড়ির ড্রাইভার কোন রকমে আমার স্ত্রীকে ধরাধরি করে খালের নিচে মাঝ বরাবর নামিয়ে আনি। আমার স্ত্রী তখন এক একটা পদক্ষেপে নিচের দিকে নামছিল আর এক একটা করে চিৎকার নয় যেন বুকফাঁটা আর্তনাদ করছিল। আমার ছোট মেয়েটাও ভয়ে ভয়ে চিৎকার করে কাঁদছিল। আর আমার হৃদয়ে অদৃশ্য রক্তক্ষরণ চলছিল। জানিনা সেই রাতের সেই কান্না আর কেউ শুনতে পেয়েছিল কি না ?

এবার নির্মাণাধীন প্রেমের বাজার ব্রিজের নিচ থেকে দক্ষিন পাড় বেয়ে উপরে উঠার পালা। আসন্ন সন্তান প্রসবার জন্য যা নিশ্চিত এ এক মৃত্যু ফাঁদ এবং জীবন মরণ যুদ্ধ । একদম খাড়া এবং ঢালু দক্ষিন পাড়। পা ঠিক মতো রাখা যায় না। মাটি কেটে সামন্যতম কোন ধাপ পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি। একটা বালির বস্তাও ফেলা হয়নি। অথচ প্রতিদিন শত শত মানুষ এই পাড় বেয়ে ওঠানামা করে। এমন কি ঠিকাদারের পক্ষ থেকে ভালোভাবে উঠানামা করার সুব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পাড় এতটাই খাড়া যে, আমি নিজে একজন শক্ত সমর্থ মানুষ হয়েও স্বাভাবিক ভাবে উপরের দিকে উঠতে পারছিলাম না। বর্ষাকালের মুষলধারে বৃষ্টি, অসংখ্য পথযাত্রীর অবিরত উঠানামা এবং নির্মাণ শ্রমিকদের অবিরাম পদাঘাতের কারণেও এমন হতে পারে।

গত জানুয়ারির শেষ দিকে এক রাতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আমার মা মারা যায়। শীতের সেই কুয়াশা ভেজা রাতে ঢাকা থেকে আমাদের এক আত্মীয় সপরিবারে জানাজায় অংশগ্রহণ জন্য তাদের গাড়ি যোগে আমাদের গ্রামের বাড়ি সনমান্দী আসার সময় অল্পের জন্য প্রেমের বাজার ব্রিজের উপর মারাত্মক সড়ক দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। কারণ প্রেমের বাজার ব্রিজ নতুন ভাবে নির্মাণের জন্য মাঝখানে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল অথচ ব্রিজের সম্মুখ ভাগে কোন প্রতিবন্ধকতা দেওয়া ছিল না। কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা না থাকায় গাড়ির ড্রাইভার স্বাভাবিক ভাবেই গাড়ি ব্রিজের উপর তুলে দিয়েছিল। গাড়ির গতি কম থাকায় এবং চালকের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তার পরিবারটির সদস্যরা গাড়িসহ খালের মধ্যে না পড়ে সেই রাতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল। আমরা সকলেই জানি, একটা দূর্ঘটনা তখনই ঘটে যখন সেখানে ব্যবস্থাপনাগত কোন দুর্বলতা বা ক্রুটি থাকে। তাই বলছি , ‘সর্বাগ্রে মানুষের নিরাপত্তা’ এই বিষয়টি হয়তো এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ধারণার মধ্যেই নেই।

ঠিকাদার কাঠ না হলেও অন্তত বাঁশের কিছু মাচা দিয়ে একটা সাঁকো তৈরি করে মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা, আন্তরিকতা এবং মহানুভবতার পরিচয় দিতে পারত। আর তদারকারী কর্তৃপক্ষ যথাযথ বিকল্প রাস্তা নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে ব্রিজ ভাঙ্গা এবং ভাঙ্গা পরবর্তী নির্মাণ কাজ শুরু করলে রাস্তায় চলাচলকারী শত শত যাত্রী আর চালকদের প্রতিনিয়ত অযথা হয়রানি এবং হেনস্তার শিকার হয়তো হতে হতো না।

আমার স্ত্রী কিছুতেই দক্ষিন পাড় বেয়ে উপরের দিকে উঠতে পারছিল না। আমি আর গাড়ির ড্রাইভার দুজন মিলে একবার হাত ধরে টেনে টেনে উপরে তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হলাম। ‘দমে দমে আল্লাকে ডাক আর সাহস রাখ’ বলে পরামর্শ দিয়ে কিছুটা সময় বিরতি দিলাম। আমার স্ত্রী তখন বার বার বলছিল আমি পারব না। আমি আর পারছিনা। আমাকে এইখানেই রেখে যাও। আমি মরে যাব। তবুও আমি এই খাড়া পাড় বেয়ে এত উপরে উঠতে পারবো না। আসলে এই অবস্থায় একজন নারীর জন্য তা বাস্তবিকভাবেই অসম্ভব। এই জটিল মূহুর্তে গর্ভমূলে অত্যধিক চাপ পড়ার শঙ্কা রয়েছে। যা মা ও তার অনাগত সন্তান দুজনের জন্যই ভীষণ ক্ষতির কারণ হতে পারে, এমনকি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। আমার অসুস্থ স্ত্রী এবং অনাগত সন্তানের শেষ পর্যন্ত কি হবে ? আমরা কি সময় মতো হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছাতে পারবো ? এরই মধ্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার পাবো তো ? সেই সময় এমন সব দুশ্চিন্তা আর দুর্ভাবনায় আমার অন্তর আত্মা একেবারে শুকিয়ে আসছিল।

এতদিন সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। করোনা কালের ভয়কে জয় করে দীর্ঘ নয় মাস শেষে আজ যখন আমার সন্তান ভুমিষ্ঠ হবে ঠিক সেই মুহুর্তে প্রেমের বাজার ব্রিজের পাশের রাস্তার এই প্রতিবন্ধকতা মৃত্যু ফাঁদ হয়ে আজরাইলের মতো আমাদের সামনে এসে দাঁড়াল। এই অবস্থার জন্য কে দায়ী? এই মাঝরাতে কার কাছে যাব, আর কি বা অভিযোগ করবো ?

দ্বিতীয় বারে অনেক কষ্টে আমি আর গাড়ির ড্রাইভার মিলে তাকে উপরে দিকে টেনে তুললাম। উঠার পর আমার স্ত্রী তখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছে। সে তীব্র এবং অসহ্য ব্যথায় ঠিকমতো নিশ্বাস পর্যন্ত নিতে পারছিল । মাটিতে পা ফেলে হাঁটতে পারছিল না, দাঁড়িয়ে ও থাকতে পারছিল না। দুজনে মিলে কোন রকমে গাড়িতে উঠালাম।গাড়িতে উঠেই আমার স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অতপর আমরা অজানা এক ভয় আর আশঙ্কা নিয়ে হাসপাতালের দিকে দ্রুত অগ্রসর হতে থাকি।

অবশেষে আমরা রাত ৩ টায় সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত প্রো- একটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছাতে সক্ষম হই এবং রাত ৩:৩০ মিনিটে অপারেশন শেষে আমার সন্তান পৃথিবীর আলোর মুখ দেখে। খোদার নিকট কোটি কোটি শোকরিয়া। মহান আল্লাহর কৃপায় এবং আত্মীয় স্বজনদের দোয়ার বরকতে সেইদিন মাঝরাতে আমার স্ত্রী এবং সন্তান এই মৃত্যু ফাঁদ থেকে বেঁচে গিয়েছিল।

তাই স্বাভাবিক কারনেই মনে প্রশ্ন জাগে, আমাদের কারো কারো অগাধ অর্থ-বিত্ত, ক্ষমতা এবং প্রতিপত্তি আছে বলেই কি আমরা জনসাধারণের চলাচলের পথে রাতের আধাঁরে এলোমেলোভাবে ড্রেজারের পাইপ ফেলে বন্ধ করে দিতে পারি? ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে লোহার মোটা শিকল দিয়ে যখন তখন পথ আটকে দিতে পারি ? দিনে কিংবা রাতে আপনার আমার হয়তো রাস্তায় চলাচলের নূন্যতম প্রয়োজন না থাকতে পারে আবার থাকতেও পারে। কিন্তু যেখানে ৫/৭ টি গ্রামের হাজার হাজার অধিবাসীরা বসবাস করে। সেখানে তাদের কারো না কারো নিশ্চয়ই জরুরি কারণে রাতেবিরাতে রাস্তায় চলাচলের প্রয়োজন নিশ্চয়ই থাকতে পারে। আপনি কিংবা আমি কি করে জানবো কার বাড়িতে কোন মুমূর্ষু রোগী আছে কি না ? এম্বুলেন্স ডেকে এখনই কাউকে হাসপাতালে নিতে হবে কি না? তাই চলার পথে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না ২৪ ঘন্টাই যেন সকল রাস্তা অবাধ এবং উন্মুক্ত রাখি। এটা মানুষ হিসাবে আমাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার বা মানবাধিকারের পর্যায়ে পড়ে। আপনার বা আপনাদের অজ্ঞতা এবং নির্বুদ্ধিতার জন্য কারো জীবন প্রদ্বীপ যেন পথের উপর অকালেই নিভে না যায়। স্বজন হারোনোর বিয়োগ ব্যথায় কাতর হয়ে সারাজীবন কাউকে যেন বুক চাপড়াতে না হয়। আপনারা হয়তো বলবেন, উন্নয়ন কাজের সময় কিছু সমস্যা এবং দূর্ভোগ তো পোহাতেই হয়। আপনাদের কথা না হয় মেনেই নিলাম , আমরা তো গত ছয় মাস ধরে এই রাস্তায় চলাচলের সময় দুঃখ আর দুর্ভোগ নিয়েই আছি। তবে সেটা নিশ্চয়ই কারো জীবনের বিনিময়ে হতে পারে না।

আমার বাড়ি পূর্ব সনমান্দী। সেই রাতে প্রেমের বাজারের রাস্তায় বিরূপ প্রতিবন্ধকতা জনিত ভয়াবতার কবলে পড়ার কথা মনে পড়লে এখনো ভয়ে শিহরিত হয়ে উঠি। প্রেমের বাজার ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হলে আমাদের পূর্ব সনমান্দীর যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়তো আবার ঠিকঠাক হয়ে যাবে। যানবাহন চলাচল ও একসময় স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু পশ্চিম সনমান্দীতে যারা বসবাস করেন। যারা আমাদের নিকট প্রতিবেশি কিংবা পড়শি তাদের কি হবে ? তাদের মধ্যে কেউ মাঝরাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে সাঁকো পেরিয়ে কি দ্রুত উপজেলা কিংবা ঢাকা সিটির কোন হাসপাতালে কি তারা পৌঁছাতে পারবে ? আজ থেকে ৩৫ বছর আগে পশ্চিম সনমান্দী এবং ছনকান্দা গ্রামের আমার শৈশবের বন্ধুরা বর্ষায় যেমন জল কাদামাটি পেরিয়ে কিছুটা পায়ে হেঁটে কিংবা নৌকায় চড়ে আমাদের সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তে আসত। এত বছর পর ২০২০ সালে এসে ২য় প্রজন্ম অর্থাৎ তাদের ছেলেমেয়েরা এখনও কি পায়ে হেঁটে একই ভাবে সনমান্দী হাছান খান উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে আসবে ?

তাই সকল জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের নিকট অবহেলিত পশ্চিম সনমান্দীর জন্য বিশেষ সুদৃষ্টি কামনা করছি। উন্নয়ন সুবিধার সুষম বন্টন নিশ্চিত করার আবেদন জানাচ্ছি। দুটি কালভার্ট সহ পশ্চিম সনমান্দীর ‘আমিন মার্কেট থেকে প্রেমের বাজার’ পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করার জরুরি উদ্যোগ নিন। চলমান সকল সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ডের যথাযথ মানের হচ্ছে কি না এবং আপনার এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের দুঃখ দুর্ভোগের দিকে প্রয়োজনে আরো বেশি বেশি নজর দিন। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সনমান্দী সহ আশে পাশের সকল গ্রামের অধিবাসীদের উন্নয়ন, মেধা ও মননে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সমান সুযোগ করে দিন।

লেখক: মাহফুজুল ইসলাম হায়দার (সেলিম)
সহকারী অধ্যাপক
এবং
২৬ বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তা।

© ২০২৩ | সকল স্বত্ব সান নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক সংরক্ষিত
DEVELOPED BY RIAZUL