করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে মানবতার সেবায় উজ্জল নক্ষত্র ইঞ্জিনিয়ার মাসুম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে মানবতার সেবায় এক উজ্জল নক্ষত্র নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম।

নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৪২টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ভুমিকা এমন পরিস্থিতিতে তুলে ধরলে সবার আগেই নামটি আসবে ইঞ্জিনিয়ার মাসুম। শুধুমাত্র তার ইউনিয়নেই কয়েক দফায় প্রায় ২৭ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। সেই সঙ্গে একজন আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবেও তিনি পুরো উপজেলার গরীব অসহায় দুস্থ দিনমজুুর খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে তার খাদ্য ও ঈদ সামগ্রী পৌছে যাচ্ছে দীর্ঘ দুই মাস যাবত।

শুধু এসব অসহায় মানুষের সেবাতেই নয় তিনি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষেরও পাশে দাঁড়িয়েছেন বিভিন্নভাবে। যেমন যারা দিনরাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিমশ্র করছেন সেই পুলিশের নিরাপত্তার স্বার্থে পিপিই প্রদান করেছেন। একই সঙ্গে যারা ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছেন সেইসব সংবাদকর্মীদের মাঝে পিপিই প্রদান করেছেন। মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম এমন পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন সেইসব শিক্ষক, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছেন।

তার মানবতার সেবা থেকে বাদ যায়নি অসহায় দিনযাপন করা হিজড়া সম্পদ্রায়, বেদে সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধি ও ভিক্ষকও। তাদের মাঝেও খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধ করে আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র এনে দিয়েছেন তারা আজকে বয়বৃদ্ধ যা তাদের পুষ্টিকর খাদ্যের প্রয়োজন করোনা পরিস্থিতিতে। এমন বিষয়টি চিন্তা করে ইঞ্জিনিয়ার মাসুম নিজে ফলমূলের ডালা নিয়ে ৩৬ জন মুক্তিযোদ্ধার বাসায় ফলমূল পৌছে দিয়েছেন।

এসব ছাপিয়ে গেছে যখন করোনা পরিস্থিতিতে অর্থের অভাবের কারনে একজন মা তার নবজাতক শিশুকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তখন খবর পেয়ে ওই পরিবারের দায়িত্ব দেন এই চেয়ারম্যান। এ ছাড়াও মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার আছে যারা প্রকাশ্যে চেয়ে খাদ্য সামগ্রী নিতে পারেনি তাদেরকে গোপনে অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী দিয়েও সহায়তা করেছেন তিনি। এসব কাজে তাকে স্থানীয় সাংবাদিক মহল সহ সচেতন নাগরিকও সহযোগীতা করেছেন। সংবাদকর্মীরা কোন পরিবারের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরলে সাথে সাথে তিনি সেই পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতেন। আবার কেউ কেউ মৌখিকভাবে জানালেও তিনি খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন অসহায় মানুষের ঘরে।

এ ছাড়াও দেশের বেশকটি এলাকায় যখন সরকারি ত্রাণ বেশকজন জনপ্রতিনিধি আত্মসাত করেছেন এমন অভিযোগ ওঠেছে তখন পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরকারি বরাদ্ধের সঙ্গে নিজে ভর্তুকি দিয়ে আরও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তার এমন উদারতা মানবতা দেখে মানুষের প্রশংসা বাড়ছে। একজন আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে তিনি জেলা আওয়ামীলীগ ও জেলার প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমানের সুনাম বাড়াচ্ছেন তিনি। কারন ইতিমধ্যে বেশকটি খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ব্যানারে এমপি শামীম ওসমানের ছবিও দেখা গেছে। সোনারগাঁয়ে গিয়ে খাদ্য সামগ্রীও বিতরণ করেছেন জেলা আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল। ইঞ্জিনিয়ার মাসুমের এমন প্রশংসনীয় কর্মকান্ডে উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের আস্থাও বাড়ছে বলেও মনে করছেন দলীয় নেতারা।

গত দুই মাস যাবত করোনা পরিস্থিতিতে তার বিভিন্ন কর্মকান্ড পিরোজপুর তথা সোনারগাঁও ছেড়ে পুরো জেলা ব্যাপী সর্বজন নন্দিত মানবিক চেয়ারম্যান হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। সাম্প্রতিককালে করোনা ভাইরাসের প্রার্দূভাব শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার বাস্তবায়নের লক্ষে দিনরাত অবিরত বিরামহীনভাবে পিরোজপুর ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকা এবং সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্নস্থানে নানান শ্রেণি পেশার ৩০ হাজার মানুষের পাশে দাড়িয়ে সরকারী ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি তার নিজ উদ্যোগে রেকর্ড পরিমান গরীব, অসহায় পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ প্রদানসহ ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি।

রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে রাজনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি মানব সেবার লক্ষে অদ্যবদি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, কবরস্থান, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ওয়াজ মাহফিল, সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও ক্রিয়াঙ্গনে খেলাধুলাসহ সব ক্ষেত্রেই তার দান, অনুদান, অবদান মানুষের জন্য অনুকরনীয়। সেজন্য মানবিক চেয়ারম্যান হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন তিনি।

সরকারী নির্দেশনায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে জরুরি ভিত্তিতে সভা ডেকে ইউপি সদস্য ও কর্মীসমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে বাজার মনিটরিং, গণজমায়েত নিষিদ্ধ, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের বিষয়ে তদারকি, জনদূর্ভোগ লাঘব করার বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়ে এখনো জনসেবায় মাঠে সক্রিয় অবস্থানে রয়েছেন। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে কর্তব্যরত স্থানীয় গ্রাম পুলিশদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাস্ক ও স্যানেটাইজার প্রদান করেন। বিগত ২৬ মার্চ থেকে দেশের সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় গৃহবন্ধি মানুষের ঘরে খাবার পৌচ্ছে দেওয়ার জন্য হটলাইন ভিত্তিক জরুরী সেবা চালু করে, ঘরে থাকুন খাবার পৌচ্ছে দিব আমরা, নিরলসভাবে এই সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

সরকারী ব্যবস্থাপনায় ১৩ দফায় ৩৫৩১ জন অসহায় কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি নিজেস্ব অর্থায়নে পিরোজপুর ইউনিয়ন ছাড়াও সোনারগাঁ উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন। ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের কর্ম তৎপরতায় নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) ও বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন কয়েক দফা ত্রান সহায়তা ও নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছেন। এছাড়া তিনি মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, হকার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দপ্তরি কামপ্রহরী ও প্রতিবন্ধিদের মাঝেও খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসনে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য, চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষে তাদের মাঝে সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) বিতরণ করেছেন।

সম্প্রতি সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ারচর এলাকার ভাড়াটিয়া সাইফুল ইসলাম বাবুর্চি নামে এক ব্যক্তির স্ত্রী মনি বেগম সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। সংসারে অভাব অনটন থাকায় টাকার জন্য প্রসূতি মা মনি বেগম (২৭) তার নবজাতক কন্যা সন্তানটি বিক্রি করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। খবর পেয়ে, তাৎক্ষনিক পিরোজপুর ইউনিয়ণ পরিষদ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম আষাঢ়িয়ারচর এলাকায় প্রসূতি মা মনি বেগমের বাড়িতে গিয়ে ১০ হাজার টাকা, নবজাতক শিশুকন্যাসহ আরো দুই মেয়ের জন্য বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী, জামা, কাপড়, ঈদবাজার ও তার পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেন। ভবিষৎতের জন্য মনি বেগমের চার সদস্যের পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিকালে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান স্থানীয় ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ আঙ্গুর, আপেল, মাল্টা, কলা, পিয়ারাসহ বিভিন্ন ফল ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তার এই ব্যতিক্রম উদ্যোগে অত্যন্ত খুশি মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার।