সেই নবজাতক শিশুর পরিবারের জন্য ঈদের বাজার নিয়ে গেলেন ইঞ্জিনিয়ার মাসুম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

করোনার প্রাদুর্ভাবে টাকার অভাবে নবজাতক শিশু সন্তান বিক্রি করতে চাওয়ায় মা ও সন্তানদের দায়িত্ব নেওয়ার পর ঈদ বাজার, শিশুদের খেলনা ও পোষাক নিয়ে বাড়িতে গেলেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। ১৪ মে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ওই মা সন্তানের বাড়িতে এসব নিয়ে হাজির হন।

কদিন পূর্বে করোনা পরিস্থিতিতে নবজাতক শিশুর মা মোসাম্মদ মনি বেগম সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়ীয়ারচর গ্রামের ভাড়াটিয়া বাবুর্চি সাইফুল ইসলামের স্ত্রী। সাইফুল ইসলাম তার স্ত্রী মনি বেগমকে গর্ভবতী অবস্থায় রেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। গত ৪ মে সোমবার মনি বেগম সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কন্যা সন্তান জন্ম দেন।

পরে টাকার অভাবে ওই কন্যা শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেন মা। বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ওই মা সন্তান ও পরিবারের দায়িত্ব নেন।

দায়িত্ব নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে আষাঢ়ীয়ারচর গ্রামের বাড়িতে চেয়ারম্যান মাসুম গিয়ে ওই শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করেন। পাশাপাশি ওই পরিবারের জন্য ঈদ বাজার, সন্তানদের জামা কাপড় ও খেলনা দিয়ে আসেন। এর আগে তিনি ওই পরিবারকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলমগীর কবির ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগ নেতা লুৎফর রহমান।

শিশুটির মা মনি বেগম আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমাকে অসহায় অবস্থায় আমার স্বামী আমাকে ফেলে চলে যাওয়ার পর সন্তানটির জন্ম হয়। ক্ষোভে ও দুঃখে এ সন্তান বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। পরে বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেব জেনে আমার ও আমার সন্তাদের ভরণপোষনের দায়িত্ব নেন। এ মানবিকতার জন্য আল্লাহ ওনাকে ভালো রাখবেন।

পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, টাকার অভাবে একজন মা তার সন্তানকে বিক্রি করে দেবেন কোন ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এটা একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা। আমি ওই অসহায় পরিবারের পাশে থাকবো।

এখানে উল্লেখ্যযে, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই সোনারগাঁও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছেন ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর মাসুম। এ পর্যন্ত তিনি তার পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড ছাড়াও উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় ১৩ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। ঈদকে সামনে রেখে আরো ৬ হাজার পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

এখানে আরও উল্লেখ্যযে, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরণ সহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা সহ অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। নিয়মিত তিনি শত শত পরিবারের মাঝে পিরোজপুর ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়াও পুুুরো উপজেলার ৭০ জন হিজড়া সম্প্রদায়ের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান করেন এবং ২৫০ জন প্রতিবন্ধীর মাঝেও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

সোনারগাঁও থানা পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে পিপিই প্রদান করেছেন। বেদে সম্প্রদায় ও ভিক্ষুকদের মাঝেও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মাঝেও উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ইতিমধ্যে পুরো উপজেলায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে তার। সরকারি বরাদ্দের ত্রাণের সঙ্গে ভর্তূকি দিয়ে তিনি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এখন নিয়মিত পৌরসভা ও অন্যান্য ইউনিয়ন এলাকায় তিনি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন।