কনের হাতে আংটি পড়াতে যাওয়ার পথে বাবা ভাই নিয়ে বর সহ নিহত ১০

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

মাত্র এক মাস পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যের কাতার থেকে দেশে এসেছেন বিয়ে করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন প্রবাসী ইমন খান (২৫)। ৬ মার্চ শুক্রবার হবু স্ত্রী জেরিন তালুকদারকে আনুষ্ঠানিকভাবে আংটি পড়ানোর কথা ছিল তার। বাবা ছোট ভাই সহ আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে সিলেটের সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হবু শ^শুর বাড়িতে যাওয়ার আগেই সড়ক দূর্ঘটনায় বর সহ ৯জন নিহত হয়েছেন।

একটি দূর্ঘটনায় বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে ইমন সহ ১০জন পরপাড়ে চলে গেছেন। ইমনের হবু শশুর বাড়ি যাওয়ার আগেই একটি দূর্ঘটনায় সব কিছু উলটপালট করে দিয়েছে। আর কাতার প্রবাসী ইমনের পরিবারের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়ে গেছে। ইমনের বাড়িতে বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে এখন শোকের ছায়া নেমে আসে।

৫ মে বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা মুসলিমপাড়া এলাকা হতে সিলেটের সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হলে সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- ফতুল্লার পাগলা মুসলিমপাড়া এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে বিয়ের বর ইমন খান, বরের বাবা আব্বাস উদ্দিন, বরের ছোট ভাই রাব্বী, একই এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে সুমনা আক্তার, তোতা খানের ছেলে ইমরান হোসেন, আবুল হোসেনের ছেলে রাজিব, মজিবুর রহমানের স্ত্রী আসমা আক্তার, আব্দুল গনির ছেলে খলিলুর রহমান, বেলায়েতের মেয়ে শিশু খাদিজা আক্তার ও বৃদ্ধ মহসিন।

এ ছাড়াও ঘটনায় আহত হয়েছেন গাড়ির ড্রাইভার নাদিম ৩৬, আবুল হোসেন ও রফিক।

নিহত ইমন খানের ছোট ভাই আব্দুল্লাহ জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। তারা স্বপরিবার ফতুল্লার পাগলা মুসলিমপাড়া বসবাস করে। তার বড় ভাই ইমন কাতারে ছিল। বিয়ে করার উদ্দেশ্যে গত এক মাসে ছুটিতে দেশে আসেন। ইমনকে ধুমধাম করে বিয়ে দেয়ার পরিকল্পনার আয়োজন শুরু করে। আর সিলেটের সুনামগঞ্জের কনে পছন্দ হলে শুক্রবার কনেকে আংটি পড়ানোর অনুষ্ঠানে দুরের পথ হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি ভাড়া করা গাড়িতে ইমন খান সহ ১৩জন সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু কনের বাড়ি যাওয়ার আগে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে ইমন, তার বাবা, ছোট ভাই সহ ৯ জন মারা যায় এমন সংবাদ পাই।

তিনি আরও জানান, ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর শুক্রবার ভোরে আমাদের বাড়ির লোকজন লাশ আনতে সুনামগঞ্জে রওনা হয়। আর শুক্রবার দুপুরে আরেকজনের মৃত্যুর সংবাদ পাই। একটি সড়ক দূর্ঘটনায় ইমন ভাইয়ের বিয়ের উৎসবের পরিবর্তে বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। আল্লাহর কাছে কি অপরাধ করলাম আমাদের পরিবারকে দুই টুকরো করে দিয়ে গেলো।

ঘটনার পর শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এরশাদুল হক ভূঁইয়া জানান, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মোবাইল ফোনে পুলিশকে জানিয়েছেন ইমনের বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল। হবু কনেকে আংটি পড়াতে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে যাচ্ছিলেন তারা। আর সড়ক দূর্ঘনায় নিহতদের লাশগুলো উদ্ধার করে শেরপুর হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে নিহতদের স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।