জেলাকে ইঙ্গিত করে সাহেদ: ….কিন্তু মহানগর ছাত্রদলের জয়!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আওতাধীন বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন এলাকা মহানগর ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এই ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ এক নেতা সহ বেশকজন ছাত্রদল নেতা মহানগর ছাত্রদল শাখার বিজয় হিসেবে দাবি করেছিলেন। যা নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল সান নারায়ণগঞ্জে ‘ছাত্রদলে লড়াই: সাহেদ ও বাবুর কাছে ধরাশয়ী রনি ও সজীব’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদটি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান রাজ তার ফেসবুকে শেয়ারও করেন। কিন্তু পরদিন ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এটা জেলার পরাজয় নয় কিন্তু মহানগর ছাত্রদলের জয়।’ তার ভাষ্য অনেকটা সেই রকমই। তিনি তার জয় মানতে রাজি। তাহলে পরাজিত কারা? ফলে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতির দাবি অনেকটা যেই লাউ সেই কদু, ধরি মাছ না ছুই পানি।

সাহেদ আহমেদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, গতকাল নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের ছেলেদের প্রাণের দাবি পূরণ করেছে দল, সেজন্য আমরা আনন্দিত। কিন্তু কিছু পোর্টালে অতিরঞ্জিত নিউজ হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের সভাপতিকে ঘিরে, যেটা কোন কুচক্রি মহলের ইশারায় হয়েছে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের ছেলেদের অনুরোধ করছি এ ধরণের নিউজকে আমলে না নেয়ার বরং আমাদের এই দাবি পূরণের জন্য আমরা জেলার সভাপতিকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তার সহযোগিতা ছাড়া এটা কোনভাবেই সহজ ছিলোনা।

সাহেদ লিখেছেন, এটা মোটেও জেলার হার নয় কিন্তু নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের জয়। সেই সাথে প্রথমে জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরোধীতা করলেও, অন্তিম সময়ে সেও আমাদের সহযোগিতা করেছে। আর এতে করে সংগঠন লাভবান হয়েছে এবং তারা বড় মনের পরিচয় দিয়েছে। সুতরাং কোনভাবেই আমরা যেনো আমাদের বিপ্লবী সহযোদ্ধাদের ছোট করার কোন প্রয়াস না দেখাই। উল্টো আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

অন্যদিকে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের রাজনীতিকে আরো সাংগঠনিকভাবে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে জেলা ছাত্রদলের আওতাধীন ৭টি ইউনিয়ন এলাকা এখন মহানগর ছাত্রদলের নিয়ন্ত্রনে। যদিও এর আগে সীমানা সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সেই জটিলতা নিরসন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। বন্দর থানাধীন ৫টি ইউনিয়ন ও সদর মডেল থানাধীন আরো দুটি ইউনিয়নে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করবেন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ ও সেক্রেটারি মমিনুর রহমান বাবু।

১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক মোল্লা মহানগর ছাত্রদলকে এক চিঠির মাধ্যমে জানান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক কাজে গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ছাত্রদল নারায়ণগঞ্জ জেলার অধীন বন্দর থানার ধামগড়, মদনপুর, মুসাপুর, কলাগাছিয়া ও বন্দর ইউনিয়ন ইউনিট সমূহ মহানগর ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন শ্যামল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানানো হয় এবং এদিন থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ বলেন, ছাত্রদল স্বতন্ত্র সংগঠন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে আন্দোলন সংগ্রাম এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবো।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি বলেন, যেহেতু এই সিদ্ধান্ত দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের। তাই এ বিষয়ে আপত্তি করার কোন কারন নেই। দলকে গতিশীল করতে দলের সকল সিদ্ধান্ত আমরা মেনেই চলবো।

অন্যদিকে জানাগেছে, মহানগীরর বাহিরে সদর মডেল থানাধীন গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়ন এলাকা নিয়ে জেলা ছাত্রদলের কোন আপত্তি ছিল না। কারন অনেক আগে থেকেই এই দুটি ইউনিয়ন মহানগর নিয়ন্ত্রন করে আসছিল। কিন্তু জেলার আওতাধীন বন্দরের ৫টি ইউনিয়ন জেলা ছাত্রদল ছাড়তে চায়নি। ইতিপূর্বে ওই ৫টি ইউনিয়ন এলাকায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের শীর্ষ দুই নেতা পরিদর্শন করেছিলেন। ওই দুই নেতা জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই ইউনিয়নগুলোতে জেলা নাকি মহানগরীর নেতাকর্মী বেশি রয়েছে সেটা যাচাই বাছাই করেই কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেল।