চাষাড়ায় মদের বার, জনপ্রতিনিধিরা কেন নিশ্চুপ? ওলামাদের প্রশ্ন!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া নূর জামে মসজিদের পেছনেই গড়ে তোলা হয়েছে ব্লু পিয়ার নামে একটি মদের বার। কিন্ত উদ্বোধনের সময় মালিকপক্ষ দাবি করেছিলেন- এটা শুধুমাত্র রেস্তোরা হবে। মদ বিক্রি হবে না। কিন্তু উদ্বোধনের একদিন পরেই এখানে মদ বিক্রি শুরু হয়েছে। মসজিদ সংলগ্ন মদের বার চালু হওয়ায় নারায়ণগঞ্জের ওলামা কেরামগণ আন্দোলনে নেমেছেন। তারা মানববন্ধন করে এই মদের বার বন্ধ করে দিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুুলিশ সুপারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন ওলামা পরিষদ। ওই মানববন্ধনে ডিআইটি মসজিদের খতিব ও হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা আবদুল আউয়াল নারায়ণগঞ্জের সকল জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখেছেন। এমপি শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে আউয়াল বলেছেন, পতিতালয় উচ্ছেদ করে কলঙ্কমুক্ত করেছেন, কিন্তু আপনার চোখের সামনে মদের বার চালু হয়, আপনি চুপ কেন?

নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় অবস্থিত ব্লু পিয়ার রেস্তোরার আড়ালে মদের বার ব্যবসা বন্ধ করতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদ। ১৪ ফেব্রুয়ারির পূর্বে মদের বার বন্ধ না করা হলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে প্যারাডাইজ ক্যাসেল ভবন (মদের বার ভবন) ও আশেপাশের সকল সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।

৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনের সড়কে গণসমাবেশ আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদ। এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও এমপিদের দ্রুত এই বার বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান ওলামাগণ।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ওলামা পরিষদের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, এই জেলার এসপি আমাদের আশ্বস্থ করেছিলেন যে শহরে মদের বার চালু হবেনা। তিনি আমাকে স্পষ্টভাবে বললেন যে তারা যদি মদের বার চালু করে তবে আপনাদের সামনে রেখে এই বার ভেঙ্গে দেয়া হবে। কিন্তু গতকাল তিনি বললেন যে, বড় দুঃখের বিষয় হুজুর, তারা উপর থেকে অনুমোদন নিয়ে এসেছে। একজন এসপি যখন উপরের কথা বলেন তখন স্বাভাবিকভাবেই স্পষ্ট যে তাদের পাঁয়ের নিচে মাটি নেই। উনারা সাধারণ মানুষের উপর গুলি টিয়ারশেল মারতে পারেন। আমরা আমাদের আল্লাহ ও তার রাসুলের বিধান নিয়ে মাঠে নেমেছি, আমরা এর উত্তম জবাব দিতে জানি।

তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, কান খুলে শুনে রাখুন আপনারা, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে যদি এই মদের বার বন্ধ করতে ব্যর্থ হন, তবে তৌহিদি জনতা নিজেরা গিয়ে ঐ মদের বার সহ পুরো ভবন ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়া হবে।’ তিনি সিটি কর্পোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেয়ায় মেয়র আইভীর কঠোর সমালোচনাও করেছেন।

ওই কর্মসূচিতে জেলা হেফাজত ইসলামের সমন্বয়ক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেছেন, আমি মন্ত্রী, মেয়র ও এমপিদের স্পষ্ট বক্তব্য চাই। এ বিষয়ে আপনারা কেন চুপ? মসজিদের সামনে মদের বার চালু হয় কিভাবে? আপনারা সুস্পষ্ট বক্তব্য দিন। নতুবা সকলকে নিয়ে আমরা নামলে এই ভবনের একটি ইটও থাকবে না।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- মাওলানা মফিজুল ইসলাম, মাওলানা জাকির কাসেমী, মাওলানা খুরশিদ আলম, মাওলানা আতাউল হক সরকার, মুফতি মাসুম বিল্লাহ, মাওলানা মুফতি মুসা কাসেমী, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, মুফতি ইসমাইল হোসেন সিরাজী, মাওলানা জমির উদ্দিন ফারুকী ও মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রমূখ।