কারাবন্দি কামাল ও মামুনের পরিবারের খোঁজখবর নিলেন কারামুুক্ত সাখাওয়াত

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

কারাগারে থাকা নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদের পরিবারের বাসায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন সদ্য কারামুক্ত মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।

৪ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়ায় সোনারগাঁও ভবন এটিএম কামালের বাসায় যান অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। ওই সময় এটিএম কামালের সহধর্মিনী ও পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেন সাখাওয়াত। ওই সময় তিনি অচিরেই এটিএম কামালের জামিনের ব্যবস্থা হবে বলে জানিয়ে আশ^স্থ করেন।

এ সময় সাখাওয়াত হোসেন খানের সঙ্গে ছিলেন- মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, মনির হোসেন খান, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি পারভেজ মল্লিক সহ অন্যান্যরা।

এ ছাড়াও একইদিন বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জে অধ্যাপক মামুন মাহমুদের বাসায় যান সাখাওয়াত হোসেন খান। ওই সময় তিনি মামুন মাহামুদের সহধর্মিনীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তিনি আশ^স্থ করেন যত দ্রুত সম্ভব মামুন মাহামুদের জামিনের ব্যবস্থা হবে।

এ সময় সাখাওয়াত হোসেন খানের সঙ্গে ছিলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান ও জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি পারভেজ মল্লিক সহ অন্যান্যরা।

এখানে উল্লেখ্যযে, গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালন করতে গেলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ। ওইদিন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন ও এসআই ছাইফুল ইসলাম পৃথক দুটি স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিজয় র‌্যালীতে বাধা দেয়ায় মারধরের শিকার হন। ওই সময় এই দুই পুুলিশ কর্মকর্তা বেদম মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় ছাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ১৯ জন নেতার নাম উল্ল্যেখ সহ তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। যেখানে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ ও মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল সহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুুলিশ। তাদের ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তাদের প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এ মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ, মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুল ইসলাম ছক্কু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আকরাম প্রধান, মিছিলকারী মঞ্জু ও মাহমুদুল হাসান লিংকনকে আসামি করা হয়। এছাড়াও মামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ঘটনার দিন আটককৃত বিএনপির ৪ কর্মীকেও এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

১৮ ডিসেম্বর বুধবার মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সহ নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ৯ জন নেতা জামিন পেয়েছেন।

মামলায় অভিযোগ আনা হয়- বিজয় দিবসের র‌্যালী থেকে পুলিশের উপর হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুুলিশের অস্ত্র-গুলি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা, সরকারি কাজে বাধা প্রদান, যানবাহন চলাচলে বাধা, রেল লাইনের ক্ষতির চেষ্টা, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা সহ নানা অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর সোমবার রাতেই সদর মডেল থানা পুুলিশের এসআই ছাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামুন মাহামুদ ও এটিএম কামাল সহ আগের দিন আটককৃত বিএনপি কর্মী নুর এলাহী সোহাগ, মো.স্বপন মিয়া, কামরুল হাসান ও মামুনকে ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

মামলায় বাদী এসআই ছাইফুল ইসলাম অভিযোগে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে বেআইনিভাবে একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা রাস্তার যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়ে ভাংচুর করছে এমন সংবাদে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা পুলিশের সাথে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন। এ সময় আমাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ সহ সরকারি অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নেওয়া চেষ্টা করে। এসময় আমি সহ পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত প্রাপ্ত হই। পরে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ সময় চারজনকে আটক সহ ঘটনাস্থলে থেকে বাঁশের লাঠি, ভাঙা ইটের টুকরো জব্দ করা হয়।

এদিকে গত ১ জানুয়ারী জামিন মুক্তি পান সাখাওয়াত হোসেন খান এবং ২ জানুয়ারী জামিন পান জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার।