পরিবারের অবহেলার কারণেই কিশোর গ্যাং তৈরি: ইউএনও নাহিদা বারিক

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক বলেছেন, অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলব শুধু এ প্লাস পেতে হবে, প্রথম হতে হবে-এমন ধারণা শিশুদের মাথায় দিয়ে দিবেন না। তাকে পড়তে দিন, শিখতে দিন। শিশুদের বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিবেন না। অনেক সময় শিশুদের ওজনের চেয়ে বইয়ের ওজন বেশি হয়ে যায়। এমনটি করবেন না। তাদের খেলতে দিন, সংস্কৃতিক অঙ্গণে প্রবেশ করতে দিন। তাদেরকে মানুষের মতো মানুষ হবার শিক্ষা দেন।

১৪ নভেম্বর বৃহম্পতিবার বিকালে ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকার আকবর কনভেন সেন্টারে এস্যুরেন্স ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের বার্ষিকী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইউএনও নাহিদা বারিক আরও বলেন, সন্তানকে স্কুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হলে চলবে না। মা-বাবাকেও খোঁজ-খবর রাখতে হবে। কারণ পরিবারের অবহেলার কারণেই এখন কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে। একটি সন্তান ভাল হলে পরিবারের জন্য ভালো, সমাজের জন্য ভালো এমনকি দেশের জন্য ভালো।

তিনি আরও বলেন, এখন শিশুরা খেলাধুলা বলতে মোবাইলের খেলাই বুঝে। আমি স্কুলগুলোকে অনুরোধ করবো, বার্ষিকী ক্রীড়ায় গ্রামীণ খেলাধুলাকে যুক্ত করতে। যাতে আমাদের শিশুরা গ্রাম বাংলাকে চিনতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. ইকবাল হোসেন বলেন, মেধাবীরা শুধু পরিবারের সম্পদ নয়, দেশ ও সমাজের সম্পদ। সুতরাং একটি শিশুকে পরিবারের মধ্যে শিশুর যতœ নিতে হবে, যাতে সবাই মেধাবী হয়ে গড়ে উঠতে পারে।

স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শওকত আলী, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভুইয়া সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. জুয়েল হোসেন।
অনুষ্ঠানে শাহাদাত হোসেন সাজনু বলেন, শিশুদের শুধু পাঠ্যবই ও স্কুলের গন্ডিতে বেধে রাখলে চলবে না। তাদের দেশের সংস্কৃতি-ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। কারণ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে আগে সোনার মানুষ গড়তে হবে। আর এই প্রাথমিক বিদ্যালয় হচ্ছে সেই সোনার মানুষ গড়ার পাঠশালা।

তিনি আরও বলেন, শিশুদের দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে শিক্ষাসফরে নিয়ে যেতে হবে। তাদের সাথে প্রকৃতির পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। কারণ প্রকৃতিও একটি বড় পাঠশালা। সেখানে শেখার অনেক কিছুই আছে।

স্কুলের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের জন্য শুভ কামানা রইল আশা করি তোমরা সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফলাফল করে পরিবারে মুখ উজ্জল করবে। তোমরা বাবা মা এবং শিক্ষকদের কথা মেনে চলবে তাহলে তোমাদের ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে।

শিক্ষার্থীরা অতিথিদের সামনে নানা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। নাচ-গান ও কবিতা আবৃত্তির ভূয়সী প্রশংসা করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে স্কুলের বিদায়ী অধ্যক্ষকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে প্রধান অতিথি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

সাংবাদিক মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহর সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন-এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন, কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী, আওয়ামী লীগ নেতা রঞ্জিত মন্ডল, মুসলিমনগর পঞ্চায়েতের সভাপতি ফজলুল হক সরকার, সমাজসেবক কামালউদ্দিন মাতবর, আজিমউদ্দিন মাতবর, আলী সরদার, সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন আকাশ, আওয়ামী লীগ নেতা সরদার সালাউদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা আতাুউর রহমান আতা, ছাত্রলীগ নেতা শরীয়ত উল্লাহ বাবু ও আওয়ামী লীগ নেতা খবিরউদ্দিন খোকন প্রমুখ।