খোরশেদকে সাগর প্রধানের পাল্টা হুংকার!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। দুটি ব্যানারে নারায়ণগঞ্জে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। অপর গ্রুপের নেতৃত্বে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান। গত ৬ নভেম্বর বুধবার সিদ্ধিরগঞ্জে যুবদলের একটি অনুষ্ঠানে পৃথক কর্মসূচি পালন করা নেতাকর্মীদের নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন। ওই বক্তব্যের জের ধরে খোরশেদকে পাল্টা হুংকার দিয়েছেন সাগর প্রধান। সাগর প্রধান সাফ বলেছেন, আমাদের চোখ রাঙাবেন না। চোখ রাঙানি আপনাদের চাকুরদের দেখান, ব্যক্তিগত লোকদের দেখান। আমাদের দেখাবেন না। আপনাদের সাথেই রাজনীতি করেছি, কি পাড়েন, আর কি না পাড়েন আমরা তা জানি। ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মার্কেটে মহগানগর যুবদলের উদ্যোগে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এমন হুংকার দেন সাগর প্রধান।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে ইঙ্গিত করে সাগর প্রধান বলেন, গতকাল (বুধবার) আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি অনুষ্ঠান হয়েছে। সেই অনুুষ্ঠানে আমাদের যুবদলের একটি মিলাদ মাহফিল আলোচনা সভা ছিল। আমরাও আমাদের মত আমাদের প্রয়াত যুবদল নেতা গাজী ইসমাইলের কবর জিয়ারত করেছি, দোয়া মাহফিল করেছি।

এখানে উল্লেখ্যযে, আগের দিন বুধবার সিদ্ধিরগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা গাজী ইসমাইলের ৮ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হয়। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।

ওই দিন বিকেলে সিটি কর্পোরেশনের ৮নং ওয়ার্ডে ধনকুন্ডা এলাকায যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন মন্তুর সভাপতিত্বে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল।

ওইদিন যুবদল সভাপতি খোরশেদের বক্তব্যের ইঙ্গিত টেনে সাগর প্রধান বলেন, বক্তব্যের মাধ্যমে আমাদের চোখের গরম, মুখের গরম, রাঙ্গান্বিত কথার গরম যারা দেখিয়েছেন, আমি বিনয়ের সাথে বলতে চাই- আপনার বাড়ির কামলাদের চোখ রাঙানি দেখাবেন, আপনার অধীনস্থ যারা চাকুরগিরি করে তাদের চোখ রাঙানি দেখাবেন, আমরা কারো বাড়িরও চাকুর নই, আমাদের চোখ রাঙানি দেখাবেন না, কারো ব্যক্তিগত লোকও নই, আমরা দলের প্রয়োজনে, দলীয় কাজে আপনাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম এবং এখন পর্যন্ত যা করছি দলীয় কাজ করছি।

খোরশেদকে ইঙ্গিত করে সাগর প্রধান বলেন, ভাই আমি তো ৫ লাখ টাকা পদ বানিজ্যের অভিযোগ করিনি। যারা ৫ লাখ টাকা বানিজ্যের অভিযোগ করলো সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটি তো তাদেরকেই দিলেন। বিভিন্ন যে সব নেতাকর্মীরা অর্থের কথা বললো তাদেরকেই তো মুল্যায়িত করা হলো। যারা এসব বলে তাদেরকেই পাশে বসাচ্ছেন! সুতরা আমরা যারা এসব অভিযোগ করিনা তাদেরকেই দুরে রাখলেন। আমরা যারা একসাথে বসে কাজ করতে চাই তাদেরকে আলাদা করেন এটা কোন ধরণের নীতি?

সাগর প্রধান অভিযোগ করে বলেন, যখন যুবদলের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলাম, তখন দুই বার জেল খেটেছি, আপনারা দায়িত্বশীল একটা লোকও খবর নেননি। তারপরেও আপনাদের সাথেই কাজ করেছি। অনেক কিছু আছে কিন্তু বলতে চাই না। যদি আপনারা বলেন, তাহলে আমিও বলব।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা কখনই চাইনি মহানগর যুবদল আলাদাভাবে মিটিং মিছিল করি। আমরা তাদেরকে বলেছিলাম আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। তাদের যখন যেটা মন চায় সেটাই করে। কোন কর্মসূচি পালনের আগে কোন মিটিং করা হয়না। অনেক এক সাথে কাজ করেছি। আপনারা কি পাড়েন সেটাও জানি, কি পাড়েন না সেটাও জানি। অনেকেই আপনারা পদ পদবী দিয়েছেন। ২৫ জন সহ-সভাপতি, ১৮ জন যুগ্ম সম্পাদক করেছেন। সহ-সাধারণ সম্পাদকও হয়েছে অনেকে। অথচ যোগ্য লোকদের আপনারা রাখেননি। অনেকের যোগ্যতা প্রতিভা থাকতেও মহানগর যুবদলে মূল্যায়ন করা হয়নি। মহানগরীর লোক হয়ে পারভেজ মল্লিকদের মত যুবদল নেতারা জেলা যুবদলের রাজনীতি করছে। কারনটা কি? কারন হলো পারভেজ মল্লিকেরা তাদের অনুসারি না। এটাই পারভেজ মল্লিকদের অপরাধ। আমি বলেছিলাম আমাদের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগীতায় ৪/৫টা গ্রুপ আছে, আমরা সবার কাছ থেকে ৮/১০ জন করে সক্রিয় লোকদের অন্তর্ভূক্ত করি। এভাবে যুবদল সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হবে। চেয়েছিলাম কোন ভাই কাকা শিল্পপতির যুবদল হবে না, এটাই চেয়েছিলাম, এটাই আমার অপরাধ। সেই অপরাধের কারনে তারা আমাকে অনেকেই অনেক কিছু বলেন। আমি দলের কাজ করি। সেদিন প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আপনারা কর্মসূচি ডেকেছেন, আমরাও ডেকেছি, আপনারা পালন করতে পারেননি, আমরা পেড়েছি। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কর্মসূচি করেছি। দলের কর্মসূচি করেছি।