সান নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট থেকে মেয়েকে বাঁচাকে গিয়ে মা নিজেই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে মা। ৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার ছোট বিনাইরচর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিদ্যুত স্পৃষ্টে আহত হয়েছেন নিহতের মেয়ে ও তার শ্বাশুড়ী।
নিহত মায়ের নাম রোজিনা আক্তার (৩৫)। তিনি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার কামারপাড়া এলাকার সোহেলের মিয়ার স্ত্রী। আড়াইহাজারে স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করার কারণে অত্র এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত এক মাস আগে সোহেল মিয়া তার পরিবার পরিজন নিয়ে স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করার সুবাদে বাসা ভাড়া নিয়ে ছোট বিনাইরচর মৃত নুরুল আমিনের ছেলে শফিকুল ইসলামের বাড়িতে উঠে। উর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ করায় ওই বাড়ির দোতলা দিয়ে বিদ্যুতের কভারবিহীন তারের সংযোগ লাইন যায়। ছাদ থেকে তারের দুরত্ব শরীরে স্পর্শ করলে বাড়ির মালিক স্থানীয় বিদ্যুত অফিসে কভার তার অথবা সংযোগ অন্যত্র দিয়ে ঘুরিয়ে নেয়ার জন্য বার বার তাগাদা দেয়। বিদ্যুত বিভাগ বিষয়টি নিয়ে উদাসীনতা দেখার অভিযোগ করে বাড়ির মালিক। এর ফলে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ছাদে উঠানামা করতে হয়।
বৃহস্পতিবার নতুন ভাড়াটিয়ার মেয়ে সুরভী আক্তার (১৪) টিকটকের অভ্যাস থাকায় দোতলায় মোবাইল নিয়ে টিকটক করতে যায়। এসময় অসাবধানতা বসত সুরভীর কপাল তারে স্পর্শ করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে সুরভীকে ধাক্কা দিতে গিয়ে মা রোজিনা আক্তার ও তার দাদী মাসুদা বেগম (৬০) তারে জড়িয়ে পড়েন। এতে তিনজনই বিদ্যুত স্পৃষ্টে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে রোজিনা আক্তারকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এর মধ্যে সুরভীকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানায় স্বজনরা।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদেরকে এ ঘটনা নিশ্চিত করেন।
নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিটি-২ এর আড়াইহাজার জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার টি এম মেসবাহ উদ্দীন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিদ্যুত অফিস থেকে একটি টীম পাঠানো হয়েছে। এ ব্যপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, যখন বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয় ভবনটি ছিলো একতলা। পরে উর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ করায় বিদ্যুতের তারের দুরত্ব কমে যায়। তাই ওই এলাকায় আরও বড় বিদ্যুতের খুটি বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। ভিকটিমের বাড়ির এক পাশে খুটি বসানো গেলেও প্রতিবেশিদের বাঁধায় অন্যপাশে খুটি স্থাপন করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। জটিলতা নিরসন করে দ্রুততম সময়ে খুটি বসানো হবে।