বিএনপির রাজনীতি: শিক্ষকের কোমরে দড়ি, পিঠে পুলিশের লাঠি!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিতে তৃণ্যমুল থেকে ওঠে আসা এক নেতৃত্ব অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। সেই ১০ বছর পূর্বে কেন্দ্রীয় যুবদলের এক নেতার রোষানলে পড়ে যার রাজনীতি হোচট খেয়েছিলো। আন্দোলনে গ্রেপ্তার হয়ে জেল থেকে বের হয়েই শুনতে পান জেলা যুবদলের কমিটির সভাপতি আর তিনি নেই। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের রাজনীতির বারোটা বাজিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতারা। পদ হারালেও কিন্তু রাজপথ থেকে সরে যায়নি মামুন মাহামুদ। তার আমলের জেলা যুবদলের মত জৌলশ আর দেখাতে পারেনি নারায়ণগঞ্জে।

২০১১ সালেও রাজপথ থেকে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ সহ আরো বেশক’জন। তাদের মুক্তির দাবিতে টানা কর্মসূচি পালন করতে গেয়ে নগরীর ২নং রেলগেট এলাকায় পুলিশের লাঠিচার্জের শিকার হোন বিএনপির সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

ওই সময় মামুন মাহামুদ ছিলেন জেলা যুবদলের সভাপতি ও আশরাফুল হক রিপন ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। শক্তিশালী সেই চলন্ত কমিটি ভেঙ্গে মোশারফ হোসেন ও শাহআলম মুকুলের হাতে জেলা যুবদলকে তুলে দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল। যুবদলের পদ হারানোর পরেও রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা রাখেন মামুন মাহামুদ। যার ফলশ্রুতিতে শিল্পপতি সফর আলী ভুঁইয়ার সঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পান।

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে টানা অবরোধ কর্মসূচিগুলোতে রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা রাখতে গিয়ে একাধিকবার পুলিশের লাঠিচার্জের শিকার হোন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় পুলিশের বেদম লাঠিপেটার শিকার হোন তিনি। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ নগরীতে একাধিকবার কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা ও ডজন ডজন মামলার শিকার হোন তিনি। এমনকি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনকালেও তিনি একাধিকবার আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে পুলিশের মারধরের শিকার হোন।

বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব পদে দায়িত্ব পালন করছেন মামুন মাহামুদ। এদিকে গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করায় বিএনপি থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার হোন তৎকালীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমূর আলম খন্দকার। তারপর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হোন নাসির উদ্দীন। সিটি নির্বাচনের পূর্বে তৈমূরকে অব্যাহতি দেয়া হলে মনিরুল ইসলাম রবিকে ভারপ্রাপ্ত করা হয়। তিনি গ্রেপ্তার হলে দায়িত্ব পান নাসির। রবি জামিনে মুক্তি পেলে আবারো তিনি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হোন।

জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কিংবা সভাপতির প্রয়োজনে এমন পরিস্থিতিতে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি হবে হচ্ছে আলোচনা সহ নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই সুযোগে মামুন মাহামুদকেও মাইনাসের চেষ্টায় নেমেছে বিএনপির একটি বিশাল সিন্ডিকেট। যাদের টার্গেট মামুন মাহামুদকে হটাতে পারলে জেলার ৫টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে আগামীতে মনোনয়ন ভাগানো এবং দল ক্ষমতায় আসলে পদে থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে। যাদের কখনো রাজপথেই দেখা যায়নি তারাই এখন মামুন মাহামুদকে সরানোর চেষ্টায় নেমেছেন। আন্দোলন সংগ্রামে যার পিঠে একাধিকবার পুলিশের লাঠিপেটা পড়েছে, যাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কোমরে দড়ি বেধে কোর্টে নিয়েছে, সেই মামুনকে নেতৃত্ব থেকে সরাতে চায় জেলা বিএনপির একটি সিন্ডিকেট। এর আগে তাকে পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যাচেষ্টাও করেছে দূর্বৃত্তরা।