শ্যালক থাপ্পর দেয়ায় শ্যালিকা সহ দুই শিশুকে জবাই করে হত্যা করে আব্বাস

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

শ্যালক থাপ্পর দেয়ার কারনেই শ্যালিকা নাজনিন ও তার দুই শিশু কন্যাকে জবাই করে হত্যা করে দুলা ভাই আব্বাস। এ ছাড়াও প্রায়শই আব্বাসের স্ত্রী তার সঙ্গে রাগ করে শ্যালিকা নাজনিনের বাসায় চলে আসে। যে কারনে জিদ করেই তার শ্যালিকা নাজনিন ও তার দুই শিশু কন্যাকে জবাই করে হত্যা করেছে।

১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ কথা জানান। এর আগে আব্বাসকে সিদ্ধিরগঞ্জের একটি কমিউনিটি সেন্টার ভবনের মাটির নিচের ফ্লোর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এসপি হারুন জানান, গ্রেপ্তারের পর আব্বাস স্বীকার করেছে সে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। জিদ থেকেই এ ঘটনা ঘটনায় সে।

এসপি বলেন, আমরা ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ঘাতক আব্বাসকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। সে একজন মাদকাসক্ত। আমরা তাকে রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জানবো।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মা ও তার দুই শিশু কন্যা সন্তানকে গলা কেটে হত্যার দায়ে দুলাভাই আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুুলিশ। এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা এলাকা থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর জেলা পুুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমে ঘাতক দুলাভাই আব্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী সিআই খোলা এলাকার আনোয়ার হোসেনের সাত তলা ভবনের ছয় তলার পূর্বপাশের একটি ফ্লাট বাসা থেকে মা ও দুই মেয়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গুরুত্বর আহতাবস্থায় আব্বাসের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছিল পুলিশ। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।

নিহতরা হলো- আদমজী সুমিলপাড়া আইলপাড়া এলাকার সুমন মিয়ার স্ত্রী নাজনিন বেগম (২৮), তাঁর ৫ বছরের মেয়ে নুসরাত ও দুই বছরের মেয়ে খাদিজা। ঘটনার সময় নাজনিনের বোনের মেয়ে প্রতিবন্ধি সুমাইয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাত করা হয়। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহতের স্বামী সুমন জানান, তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় এলাকার জোনাকি পেট্রোল পাম্পে রাতে ডিউটি শেষে সকাল ১০টায় বাসায় ফিরেন। ওই সময় বাসার দরজা খোলা ছিল। ভিতরে প্রবেশ করতেই স্ত্রী সন্তানদের লাশ দেখতে পান। আর আহত অবস্থায় আত্মীয় সুমাইয়া পড়ে রয়েছে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে আসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ফারুক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক।

দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন, মূলত পারিবারিক কলহের জের ধরেই এ তিনটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ সকাল ৮টায় ঘটনাটি ঘটেছে।

নিহতের শ্বশুর নিজাম বলেন, আমার ছেলে সুমন নাজনিনের সাথে প্রেম করে বিয়ে করার পর থেকে এই এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছে। আমরা মাঝে মধ্যে এ বাসায় আসা যাওয়া করতাম। কিন্তু কখনো তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অমিল দেখিনি। সকাল ১০টার দিকে আমার ছেলে পেট্রোল পাম্প থেকে নাইট ডিউটি করে বাসায় এসে তার স্ত্রী সন্তানদের লাশ পরে থাকতে দেখে আমাদেরকে খবর দেয়। আমরা এ ঘটনার জন্য দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছি।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ফারুক জানান, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তারা আলামত সংগ্রহ করেছেন। পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন ও র‌্যাব সহ অন্যান্য সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।