বাল্য বিয়ে বন্ধ করে নিয়ে মেয়েটির লেখাপড়ার দায় নিলেন ইউএনও নাহিদা বারিক

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় ১৪ বছরের এক কিশোরীর বাল্য বিবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক। বিয়ে বন্ধ করে দিয়ে ওই মেয়েটির ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত লেখাপড়ার ব্যয় বহনেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউএনও। একই সঙ্গে মেয়েটির মা সেলাই মেশিনের কাজ জানেন তাই তাকে একটি সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে বলেও জানান ইউএনও নাহিদা বারিক।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক বাল্য বিবাহের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে বর ও কনের পরিবারকে সতর্ক করে দেন। এছাড়াও বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে স্কুল ছাত্রীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

৩০ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ শেষ মাথার গাঙ্গুলী বাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আরও জানা গেছে, ফতুল্লার দেওভোগ শেষ মাথার গাঙ্গুলী বাড়ি এলাকার আবুল মিয়ার মেয়ে (১৪) এর সাথে একই এলাকার ফরিদ মিয়ার ছেলে রমজান হোসেনের (১৮) বিবাহের আয়োজন করেন উভয় পরিবার। শুক্রবার তাদের বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন সেখানে বাল্যবিবাহ হচ্ছে। পরে তিনি কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম সাইফউল্লাহ বাদল ও ফতুল্লা থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে সেই এলাকায় মেয়ে ছেলের বাড়িতে হানা দেয়।

পরে ঘটনার খোজ খবর নিয়ে জানতে পারেন ছেলে মেয়ে কারোর বিয়ের বয়স হয়নি। ছেলে ও মেয়ের পরিবারকে এক সাথে করে বাল্যবিবাহ ভেঙ্গে দিয়ে মেয়ের ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ার আগে বিয়ে না দিতে সতর্ক করে দেন তিনি। আর ইউএনও নাহিদা বারিকের কথা শুনে মেয়েকে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে বিয়ে না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন অভিভাবক।

ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, বাল্য বিবাহের সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বিবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। আর তাদের বিবাহের বয়স না হওয়ার আগে বিবাহ না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মেয়ের পরিবার। পরে খবর নিয়ে জানতে পারলাম মেয়ের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র।

মেয়ের বাবা অটো রিকশা চালক এবং মা বাসায় বসে সেলাই কাজ করেন। তাই মেয়েকে লেখাপড়া করানোর জন্য উপজেলা প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছেন এবং মেয়ের মা জোবেদা বেগমকে একটি সেলাই মেশিন দেয়ার ঘোষণা করা হয়। আর মেয়ের পরিবারকে সরকারী বরাদ্ধকৃত প্রতি মাসে ৩ কেজি করে চাল দেয়ার কথা বলা হয়।

তিনি আরও বলেন, যেখানে বাল্য বিবাহ হবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে। বাল্যবিবাহ রোধে প্রতিটি এলাকায় গণসচেতনা তৈরি করতে হবে। বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।