বন্দরে প্রয়াত শ্রমিকদল নেতা লতিফ স্মরণে দোয়া মাহফিল

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা শ্রমিকদলের প্রয়াত সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ স্মরণে দোয়া মাহফিল ও স্মরণ সভা করেছে বন্দর থানা শ্রমিকদল। ২৪ আগস্ট শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ফরাজিকান্দা এলাকায় বন্দর থানা শ্রমিকদলের প্রয়াত সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ মিয়ার স্মরণে তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।

বন্দর থানা শ্রমিকদলের সভাপতি বাবুল মিয়ার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হুমায়ুন কবিরের পরিচালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এসএম আসলাম।

প্রধান অতিথি সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, দেশের আজকে যে অবস্থা তা আজকে দেশের প্রতিটি নাগরিক টের পাচ্ছেন। জনভিত্তি বলতে সরকারের নাই। এটি জনবিচ্ছিন্ন সরকার। ভালভাবে যারা আওয়ামীলীগ করেন তারাও সরকারের এমন কর্মকান্ডকে সমর্থন করছেনা। কিছু প্রশাসনিক দূর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে সরকার টিকে আছে। জুলুম অত্যাচারের মাধ্যমে টিকে আছে এবং পার্শ্ববর্তী একটি দেশের তাবেদারী করে সরকার টিকে আছে। আমরা তাবেদারী দেশ চাইনা। এই দেশ স্বাধীন হয়েছে ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে। সেই পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়ে আবার আরেকটি দেশের গোলামী করবো সেটা আমরা চাইনা। মানুষ যাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে তারাই দেশ পরিচালনা করবে। কোন বিদেশী প্রভূর ইশারায় দেশ চলতে পারে না।

তিনি বলেন, এই সরকার বিএনপিকে নির্মূলের জন্য গত ১২বছর যাবত চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে বিএনপি নির্মূলের প্রজেক্ট বাংলাদেশে শুরু হয়েছে।

সাখাওয়াত বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন অপরাধের সাথে কোনদিন জড়িত ছিলাম না। অথচ এই সরকার আমাকেও ২৪টি মামলায় জড়িত করেছে। যখন জেলে ছিলাম সেই সময়ের মামলায়ও আমাকে আসামি করা হয়েছে। আমারই এমন অবস্থা তাহলে বুঝা যায় সাধারণ নেতাকর্মীদের কি অবস্থা!

এই আইনজীবী বলেন, নারায়ণগঞ্জ বন্দর সহ সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। আমি নারায়ণগঞ্জে চেষ্টা করেছি যেসব নেতাকর্মী মামলায় আসামি হয়েছেন তাদের আইনি সহায়তা দিতে। মামলার শিকার নেতাকর্মী যারাই আমার কাছে গিয়েছেন আমি তাদের পাশে দাড়িয়েছি। এই সভা থেকে আবারো বলতে চাই ভবিষৎে যেসব নেতাকর্মী রাজনৈতিক মামলার শিকার হবেন আপনারা আমার কাছে আসবেন আমি আপনাদের আইনি সেবা দিব।

তিনি বলেন, এই সরকার বিএনপিকে নির্মূল করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে তাতে বিএনপি নির্মূল প্রক্রিয়ার সঙ্গে মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। মানুষ এখন আর ভোট কেন্দ্রে যেতেও চায়না। ভোটও দিতে হয়না। ইতিপূর্বে যেসব নির্বাচন হয়েছে কোন নির্বাচনেই মানুষ ভোট দিতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের আন্দোলনটা হচ্ছে আগামী দিনে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের যে হাতিয়ারটি সবচেয়ে সর্বপ্রথম প্রয়োজন সেটি হলো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারলেই এদেশের মানুষের যে ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে, সেই ভোটের অধিকার আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। তাই আগামী দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য অচিরেই দশ থেকে যে আন্দোলন সংগ্রামের ডাক দেয়া হবে সেই আন্দোলনে এই এলাকার জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকবেন এবং আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবেন। এই আন্দোলনে শ্রমিকদল সবচেয়ে অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে।

এর আগে প্রয়াত আব্দুল লতিফ মিয়ার স্মরণে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এই লতিফ ভাইয়ের মত সারাদেশে লক্ষ্য লক্ষ্য বিএনপির নেতাকর্মী আছে বলেই বিএনপি আজকে টিকে আছে। আজকে তার যে শূন্যতা সেটা আমরা অনুভব করছি। লতিফ ভাই ছিলেন তৃণমূল বিএনপির একজন প্রতিনিধি। দলের স্বার্থে এই এলাকার মানুষের স্বার্থে লতিফ ভাই কথা বলতেন। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি আল্লাহ যেনো তাকে বেহেসত নসিব করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-বন্দর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আমানউদ্দীন আমান, বিএনপি নেতা মহিউদ্দীন শিশির, সলিমুল্লাহ বাবুল, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম রিপন, পারভেজ মল্লিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দুলাল হোসেন, মহানগর শ্রমিকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান মন্টু, শরীফ হোসেন, জেলা পরিবহন শ্রমিকদলের সভাপতি শহীদ হোসেন সহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।