মেয়র ও এসপির বিরুদ্ধে হকারদের উস্কে দিচ্ছে হাফিজুল ইসলাম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের প্রসংশনীয় কাজের বিরুদ্ধে হকারদের উস্কে দিচ্ছেন জেলা সিপিবি সভাপতি হাফিজুল ইসলাম। যেখানে নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত হয়েছে সেখানে আবারো হকারদের নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন বাম পন্থী দলের এই নেতা। গত বছরের ১৬ জানুয়ারি মেয়র আইভীর উপর হামলায় হকারদের উস্কানীদাতাদের মধ্যে অন্যতম এই হাফিজুল ইসলাম। যিনি এবার এসপি হারুনের ভাল কাজের বাধা হয়ে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ফলে প্রশ্ন ওঠেছে তাহলে হাফিজুল ইসলামের পিছনে কলকাঠি নাড়ছেন কারা?

গত বৃহস্পতিবার চাষাড়া থেকে কয়েক হাজার হকার নিয়ে লিংকরোডে মিছিল করে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরারব স্মারকলিপি প্রদান করে নারায়ণগঞ্জ শহরের হকারদের বসতে দেয়ার দাবি জানান। ওই সময় আরও কিছু জনশূণ্য বাম পন্থী নেতা উপস্থিত ছিলেন।

অনেকের ধারণা এই হকারদের কাছ থেকে যারা মোটা অংকের চাঁদা আদায় করতো তারা বিশাল বাজেটে হাফিজুল বাম নেতাদের নিয়ে মেয়র ও এসপির বিরুদ্ধে নেমেছেন।

জানাগেছে, এক সময় মেয়র আইভীর চারপাশেই ছিলেন হাফিজুল ইসলাম। সিপিবি নেতা হলেও তিনি মেয়র আইভীর পক্ষে জোড়ালো অবস্থান রেখেছিলেন। এমনকি মেয়র আইভীর পক্ষে থাকায় প্রকাশ্যে হুমকি ও হামলার শিকার হয়েছিলেন। সেই হাফিজুল ইসলাম কেন আজকে মেয়র আইভীর বিরোধীতা করতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের কয়েক লাখ মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তা খতিয়ে দেখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারী জরুরী বলে দাবি করছেন নগরবাসী। সেই সঙ্গে হাফিজুল ইসলামের গতিবিধিও নজরদারীতে রাখা জরুরী। কারন গত বছরের চাষাড়ায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল। অল্পের জন্য বেঁচে যান মেয়র আইভী।

এদিকে ১৪ জুলাই ররিবার সিটিকর্পোরেশনের বাজেট অনুষ্ঠানে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসতে দেয়া হবে না এমন কঠোর হুঁশিয়ারি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমি যদি রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে পারি। ফুটপাতে জায়গা রাখার জন্য আমি যদি পুলিশের মাইর থেকে আর্মির বাড়িও খেতে পারি তাহলে সাধারণ মানুষ কেন ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না? হকাররা কি নারায়ণগঞ্জের সবার চেয়ে বড় হয়ে গেল? রাস্তায় যদি হকার বসে আরেকবারও যদি আমার সেখানে যেতে হয় তাহলে আমি যাব। তবুও হকার বসবে না মানে বসবে না। এটাই শেষ কথা।

বঙ্গবন্ধু সড়ক নিয়ে কেন এত ষড়যন্ত্র হচ্ছে এমন প্রশ্ন রেখে মেয়র আইভী বলেন, ফুটপাত জনগণের চলাচলের জন্য। কোনোভাবেই ফুটপাতে যেন হকার বসতে না পারে। কারণ হকারদের জন্য হকার মার্কেট করে দিয়েছি, অন্যান্য বিভিন্ন রোডেও কিন্তু হকার বসতে দেয়া হচ্ছে। তারপরও কি কারণে বঙ্গবন্ধু রোডে হকার বসতে হবে? শুধু আমি না আমার বাবা আলী আহম্মদ চুনকাও হকার মার্কেট করে দিয়েছিল থানা পুকুরপাড়ে। সেখানেও হকাররা দোকান বিক্রি করে ফুটপাতে চলে আসছে। এখন কি আমরা তাদের (হকারদের) বসাবো আবার তারা চলে আসবে এভাবে তো চলতে পারে না। কেন বঙ্গবন্ধু নিয়ে এত ষড়যন্ত্র? বঙ্গবন্ধু রোডে এমন কি আছে? ইতিমধ্যেই দেখলাম তারা ডিসি সাহেবের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। সেখানে তারা একটি মিথ্যা কথা বলছে আমি নাকি তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করিনি। তাহলে সলিমুল্লাহ রোডে এত বড় মার্কেট কিভাবে কার জন্য করে দিলাম?

হকার নেতা হয়ে ওঠা বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলামের উদ্দেশ্যে করে মেয়র আইভী বলেন, যে বাম নেতা নারায়ণগঞ্জের লাখো মানুষের কথা চিন্তা না করে সে গুঁটিকয়েক হকারের জন্য আজকে বাম নেতা সেঁজেছেন আমি তাকে ধিক্কার জানাই। আমি উনাকে অত্যন্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা করি। যখন তারা যা চেয়েছে আমি তাদের কোনোদিনও না করি নাই। এটা কি ধরণের কাজ হতে পারে! গুঁটিকয়েক হকারদের জন্য সে মাঠে নেমেছে তাদের হকার নেতা রহিম মুন্সী। আপনারা জানেন তার নিজের পাঁচতলা বাড়ি আছে। অন্যান্য তথাকথিত হকার নেতাদেরও সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি। মানুষকে জিম্মি করে কেন ফুটপাতে হকারি করবে?

হকারস মার্কেটের বর্তমান অবস্থার খোঁজখবর নেয়ার প্রসঙ্গ টেনে মেয়র বলেন, কারা এ হকার মার্কেটকে জমতে দিচ্ছেনা, কারা নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে হকার বসিয়ে চাঁদাবাজি করছে এগুলো বের করেন। এই চাঁদাবাজির মধ্যে যেমন আছে দলের লোক তেমনিই অন্যান্য সংস্থার লোকও আছে। আমার আপনার মত প্রভাবশালী লোকও আছে। এই যে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয় এটা আগে দয়া করে লিখেন প্রশাসনের সুবিধা হবে চাঁদাবাজদের ধরার জন্য। বঙ্গবন্ধু রোডে এত কি মধু? হকার বসতে হবে কিন্তু আমার জনগণ হাঁটতে পারবে না। কেন আইভীকে রোডে এনে ফেলে মারতে হবে।