সন্তানের সন্ধান চেয়ে আদালতে মামলা করলেন বৃদ্ধা মা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নিখোঁজ সন্তানের সন্ধানে আড়াইহাজারে একবৃদ্ধা মা আদালতের দারর্স্থ হয়েছেন। গত ২ জুন মাসের আড়াইহাজারের স্থানীয় গির্দা এলাকায় উপর্যুপরি মারধর করে আল-আমিন নামে এক যুবককে রাতের আঁধারে সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সে বাড়িতে ফিরে আসেনি।

ঘটনার পর এক মাসেরও বেশী সময় অতিবাহিত হলেও পুলিশও তার কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। এ ঘটনায় ওই যুবকের মা মমতাজ বেগমের অভিযোগ থানায় গ্রহণ না করায় তিনি শেষ পর্যন্ত আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন।

বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ‘গ’ অঞ্চল আদালতে একটি মামলা করেছেন। মামলায় স্থানীয় গির্দা এলাকার মৃত ফজলুল হকের ছেলে আবদুর রব ও মোশারফ সহ ১০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই আতাউর রহমানকে।

তবে মামলার আসামি পক্ষ স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক হওয়ায় মামলার তদন্তকাজে নানাভাবে বাধার সম্মুখিন হচ্ছে। এতে মামলার তদন্তে অগ্রগতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে মামলার বাদী।

অভিযোগ উঠেছে আসামি পক্ষের হুমকি-ধমকির কারণে এরই মধ্যে বাড়ি থেকে বাদী স্বপরিবারে অন্যত্র চলে গেছেন। তার ৯ শতাংশের বসত ভিটায় ঝুলছে তালা। স্থানীয়দের মধ্যেও কেউ এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজী হচ্ছেনা। আসামি পক্ষ এতোটাই প্রভাবশালী যে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের পর্যন্ত এলাকায় তথ্য সংগ্রহে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ওই রাতের ঘটনার পর থেকে এলাকায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে। কেউ কারোর সঙ্গে কথা বলছেনা।

নিখোঁজ আল-আমিনের স্ত্রী মাসুদা মুঠোফোনে বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমার স্বামী আল-আমিনকে হত্যা করে গুম করা হয়েছে। এখন পুলিশই আমাদের শেষ ভরসা।

মাসুদা আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে বাড়িতে একটি কক্ষে আগুন দিয়ে ঘরের লেপতোষকসহ আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। প্রাণ ভয়ে আমরা বাড়ি থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’ এ ব্যাপারে কেউ কথা বলতে কেউ সাহস পাচ্ছে না।

মামলার বিবরণ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, জুন মাসের ২ তারিখ সন্ধ্যা ৭টায় গির্দা এলাকার মিজানের ছেলে আল-আমিন বাড়ির বাইরে বের হয়। আগে থেকে ওৎপেতে থাকা মামলার বিবাদীগংয়েরা তাকে উপর্যুপরি মারধর করে। পরে বাদীর ঘর তালা বদ্ধ করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে আল-আমিনকে তারা একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে যায়। পরে সে আর বাড়িতে ফিরেনি।

বাদী এজাহারে আরও উল্লেখ্য করে, বাদিপক্ষের সঙ্গে বসত ভিটা নিয়ে আগে থেকেই তার বিরোধ চলে আসছিল। সে দীর্ঘদিন ধরেই এটি বেদখলের চেষ্টা করে আসছিল। তারা বিভিন্ন সময় খুন ও গুমের হুমকীও দিয়ে আসছিল। মাঝে মধ্যে তারা অস্ত্র নিয়ে বাড়ির আশপাশে মহড়াও দিতো।

এদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার এসআই আতাউর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে নিখোঁজ ব্যক্তির ভাগ্যে কি ঘটেছে এখানো তা বলা যাচ্ছে না।