আড়াইহাজারে বিএনপির প্রার্থী আজাদের সামনে পাহাড় সমান বাধা

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদের জয়ের পথে পাহাড় সমান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রতিদিন আড়াইহাজারে আজাদের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মশাল মিছিল করছেন নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাদের শরীরে ও মাথায় কাফনের কাপড় পরিধান করে মিছিল করে আজাদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি করেছেন নেতাকর্মীরা।

এর আগে গত ৩ নভেম্বর এই আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদকে ঘোষণা করা হয়। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন বিএনপির সাবেক তিনবারের এমপি এএম আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার।

আজাদকে মনোনিত ঘোষণা করার পর তার মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আঙ্গুর, সুমন ও পারভীন ঐক্যবদ্ধ হয়ে একমঞ্চে ওঠেন। প্রায় দীর্ঘ এক মাস যাবত এই আসনের বিভিন্ন এলাকায় আজাদের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মশাল মিছিল করছেন নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের অভিযোগ- আজাদ ও তার লোকজন ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দখলবাজি, চাঁদাবাজি, মামলা বানিজ্য করে বিএনপির বদনাম করেছেন। যে কারনে আজাদের ‍উপর আড়াইহাজারের মানুষের আস্থা নেই। আজাদ আড়াইহাজারে এক আতংকের নাম হয়ে ওঠেছেন। এ ছাড়াও বেশকটি খুন খারাপির ঘটনাও ঘটেছে আড়াইহাজারে।

সম্প্রতি এক সমাবেশে এএম আতাউর রহমান খান আঙ্গুর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে ‍উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘প্রার্থী পরিবর্তন করুন। এই প্রার্থী দিয়ে বিএনপির ধানের শীষকে বিজয়ী করা সম্ভব নয়। আপনাকে বলে রাখলাম আমরা কিন্তু নির্বাচন করবো।’ এমন বক্তব্যে অনেকটা তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচনের আভাস দিয়েছেন। তবে প্রার্থী পরিবর্তন না হলেও এই আসনে আঙ্গুর কিংবা সুমনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতায় দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কেউ কেউ বলছেন- চাচা ভাতিজার মধ্যে টানাপোড়ান চলছে কে হবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, তা নিয়ে। দুজনকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারন চাচা ভাতিজার সম্পর্ক এমন অনেক দেখা গেছে, আবার ফাটল ধরতেও সময় নেয়নি কিঞ্চিত।

এক সময় আড়াইহাজারে বিএনপি বলতে মানুষ বুঝতেন প্রয়াত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এএম বদরুজ্জামান খান খসরুকে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে আঙ্গুরকে বিএনপিতে এনে দলের মনোনয়ন পাইতে দিতে সহযোগীতা করেন খসরু। একে একে তিনি তিনবার এমপি হয়ে ভাই খসরুর সঙ্গে বিরোধীতা শুরু করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আঙ্গুরের সঙ্গে বিরোধ ছিল খসরুর। তাদের দুই ভাইয়ের বিরোধের সুযোগে আড়াইহাজারে উদ্ভব হয় নজরুল ইসলাম আজাদের। বিএনপির সাবেক নেতা তৈমূর আলমের আশ্রয়ে আড়াইহাজারে রাজনীতি করার সুযোগ পান আজাদ। খসরুর মৃত্যুর পর বিএনপির রাজনীতিতে সরব হোন খসরুর পুত্র সুমন। কিন্তু তিনি হাল ধরতে ব্যর্থ হোন। তবে এবার সেই খসরুর পরিবারের রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে হলে চাচা ভাতিজা একজোট হয়ে আজাদকে পরাজিত করে বিজয়ের মালা নিয়েই বিএনপিতে অটুট থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন চাচা ভাতিজা।