ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

মহান আল্লাহ তায়ালার সাথে বান্দার গভীর প্রেম- ভালোবাসা ও মুহাব্বত তৈরির এক সেতুবন্ধনের নাম ইতিকাফ। এজন্যই মাহে রমযানের শেষ দশকে খোদা-প্রেমিকদের ভীর জমে মসজিদে মসজিদে। পরিবার-পরিজন ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু ত্যাগ করে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রেমে ধ্যানমগ্ন থাকার এই অভূতপূর্ব দৃশ্য একমাত্র ইতিকাফেই পরিলক্ষিত হয়।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মাদানী জীবনে মাত্র একটি রমযানে জিহাদের সফরে থাকার কারণে ইতিকাফ করতে পারেননি। তবে পরবর্তী বছর বিশ দিন ইতিকাফ করে তা পূর্ণ করে নিয়েছেন (সুনানে আবু দাউদ)। এছাড়া তিনি সবকটি ইতিকাফ করেছেন। সাহাবাগণও তার সাথে ইতিকাফে শরীক হয়েছেন। এর দ্বারা সুন্নাত ইতিকাফের গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে যায়।

ইতিকাফের ফজিলতের ব্যাপারে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনÑ ‘যে ব্যক্তি রমযানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করবে তার জন্য দুটি হজ্ব ও দুটি ওমরার সওয়াব লেখা হবে (বাইহাকী)।’ অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য একদিন ইতিকাফ করবে আল্লাহ তায়ালা তার ও দোযখের মাঝে এমন তিনটি পরিখা খনন করে দিবেন যার একটি থেকে অপরটির দূরুত্ব হবে পূর্ব পশ্চিমের চেয়ে বেশি ( তিরমিযি )অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে- নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ইতিকাফকারী ব্যক্তি যাবতীয় পাপ থেকে মুক্ত থাকে। আর ইতিকাফে মশগুল থাকার কারণে বাহিরের কোন সওয়াবের কাজ থেকে বঞ্চিত থাকলে আল্লাহ তায়ালা তা তার আমালনামায় দিয়ে দেন ( ইবনে মাজাহ)। ইতিকাফই এমন এক ইবাদাত অবসর সময়ে কোন আমাল না করলেও দিনরাত মসজিদে অবস্থান করাটাই ইবাদাত হিসাবে গণ্য হয়। তাছাড়া সবে কদর অন্বেষণের সর্বোত্তম পন্থা হলো ইতিকাফ। হাদীস শরীফে এসেছে-নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযানের মাঝের দশ দিন ইতিকাফ করতেন। এক বছর এভাবে ইতিকাফ শেষ করার পর ২১তম রাতে তিনি ঘোষণা করলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার সাথে ইতিকাফ করেছে সে যেন শেষ দশদিন ইতিকাফ করে। কারণে আমাকে শবে কদর সম্পর্কে অবগত করা হয়েছিল যে, তা শেষ দশকের অমুক রাতে। এরপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে…….। সুতরাং তোমরা সবে কদরশেষ দশকে তালাশ করো (সহীহ বুখারী )।’

সর্বপরি ইতিকাফ শিআরে ইসলামের অন্তর্ভূক্ত একটি মর্যাদাবান মাসনূন আমল। তাই কোন মসজিদই যেন ইতিকাফ শূন্য না থাকে সেদিকে সতর্ক থাকা উচিত।

লেখক: মুফতি উসমান গনী কাসেমী