রূপগঞ্জে শহীদ গোলাম রশীদ বকুলের ৫৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালন

সান নারায়ণগঞ্জ

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহিদ গোলাম রশীদ বকুলের ৫৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসি গ্রামে শহিদ বকুল ভবনে তাঁর আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ বকুলের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির, শহিদ বকুলের ভাগিনা সোনারগাঁও সরকারি কলেজের ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল ইসলাম হায়দার, রূপগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাজাদা, ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার চাঁন মিয়া, ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ভোলাবো শহিদ গোলাম রশিদ বকুল স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনির হোসেন দেওয়ান, হারুনুর রশিদ মুকুল এবং কামরুল হাসান অদূত ভূঁইয়া প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্থায় সম্মুখ সমরে শহিদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রশীদ বকুল। ভোলাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যুদ্ধে শহিদ বকুল নিজের জীবনের বিনিময়ে

সেদিন ৪৪ জন মুক্তিযোদ্ধার জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন এ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তাঁর শাহাদাৎ বাংলার মুক্তিকামী মানুষকে আরও বেশি করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিল।

বক্তারা বলেন, শহিদ বকুলের আত্মত্যাগের ইতিহাস সহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। শহীদ বকুলের স্বপ্ন ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়। আগামী প্রজন্ম যেন এই বীরকে ভুলে না যায়, সেজন্য তাঁর স্মৃতি ও ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য আরও বড় পরিসরে উদ্যোগ নেয়ার দাবি ওঠে।

আলোচনা সভার শেষে শহিদ গোলাম রশীদ বকুল এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা কাদির ভূঁইয়া এরপর উপস্থিত সকলের মাঝে প্যাকেটজাত খাবার বিতরণ করা হয়।

শহীদ বকুলের পরিবারবর্গ, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় দিনটি ছিল গভীর আবেগ ও শ্রদ্ধার।