সান নারায়ণগঞ্জ
গত ৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপির দলীয় ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত হয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। তাকে মনোনিত করার পর থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে যাচ্ছেন মনোনয়নবঞ্চিত বিতর্কিত বেশকজন ব্যক্তি। এমন পরিস্থিতিতেও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মান্নানের পক্ষে সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জে রীতিমত গণজোয়ার সৃষ্টি করেছেন নেতাকর্মীরা।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, মান্নানের সেই মনোনয়ন বাতিল করে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে মনোনিত করার দাবি তুলে মানববন্ধন করেছেন কিছু অপরিচিত মানুষজন, যেখানে বিএনপির পরিচিত মধ্যম সারির বেশকজন উপস্থিত ছিলেন। যদিও এই ঘটনার ঘটনা খানিক পর সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শহিদুর রহমান স্বপন ও মহানগর যুবদলের সদস্য শহিদুল ইসলামকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। তাদেরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
১৮ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড শিমরাইল এলাকায় এই মানববন্ধন করা হয়। অনেকেই জানিয়েছেন গিয়াসের পক্ষে লোকজন ভাড়া করে এনে মান্নানের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধন করা হয়েছে।
তবে এই মানববন্ধন স্থানীয় জনসাধারণ, রাজপথের তৃণমূল নেতাকর্মীরা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যাণ করেছেন। বিএনপির যেসব অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করা হয়েছে সেইসব সংগঠনের নেতাকর্মীদের সেখানে দেখা যায়নি। এসব অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে যারা মান্নানকে বিতর্কিত করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এই মানববন্ধন সেই পরিকল্পনারই অংশ।
কথিত মানববন্ধনের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জবাসী মিথ্যা অপপ্রচারের পাশে নেই। তারেক রহমান সাহেবের সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে চূড়ান্ত। একটি মহল সেই সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে নাটক সাজিয়েছে। জনগণ তা গ্রহণ করেনি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু বলেন, মান্নান সাহেবের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ছিল সম্পূর্ণ সাজানো। বিএনপির কোনো কর্মী এতে অংশ নেয়নি। যারা করেছে তারা শুধু মান্নান সাহেবের বিরুদ্ধে নয়, তারা আসলে তারেক রহমানের সিদ্ধান্তকেই অমান্য করেছে। দলের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোই তাদের উদ্দেশ্য।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ বলেন, এ মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বিএনপির কেউ নয়। তারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। তারেক রহমানের মনোনতি প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া মানেই দলের প্রতি বিদ্রোহী আচরণ। জনগণ ও তৃণমূল এসব চক্রান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ উদ্দীন মাহমুদ ফয়সাল বলেন, মান্নান সাহেবের গ্রহণযোগ্যতা যেভাবে বাড়ছে, একটি মহল তা সহ্য করতে পারছে না। তাই বারবার ষড়যন্ত্র করছে। তারেক রহমানের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে সাজানো মানববন্ধন করে তারা নিজেদের চরিত্রই উন্মোচন করেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রিপন সরকার বলেন, ভাড়া করা লোক দিয়া মানববন্ধন না, যা খুশি তা করা যায়। মানুষ কিছু টাকাতো পাইলো। এসব রাজপথের নেতাকর্মীরা সমর্থন করে না। আজহারুল ইসলাম মান্নানের মনোনয়নকে মেনে নিয়েছে সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জবাসী সহ বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা। আমরা সিদ্ধিরগঞ্জের ত্যাগী নেতাকর্মীরা মান্নান ভাইকে সমর্থন করেছি।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জের তৃণমূল নেতাদের দাবি— মানববন্ধনটি ছিল ‘হাস্যকর ও উদ্দেশ্যহীন’। তারা বলেন— দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে যারা বিভাজন সৃষ্টি করছে তাদের জনগণ কোনোদিন বিশ্বাস করবে না।
সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর একটাই বার্তা—মিথ্যা অভিযোগ, বিকৃত অডিও, তারেক রহমানের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো বা সাজানো মানববন্ধন—কোনোটাই তারা মেনে নেবে না। বরং এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জনগণ আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।


