আড়াইহাজারে ৫ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, পুলিশের ওপর হামলা: গ্রেপ্তার ৭

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শেষে সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

২৯ অক্টোবর বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের মরদাসাদী গ্রামের সাথে আগুয়ানদী, গহরদী, উচিৎপুরা ও রায়পুরা গ্রামবাসীর মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের উপর হামলা চালায়। পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। পুলিশের উপর হামলা ঘটনায় মামলা হয়েছে। আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আড়াইহাজার উপজেলার মরদাসাদী এলাকার লোকজন আগুয়ান্দি, গহরদী, রায়পুরা, উচিপুরা এলাকার লোকজনের উপর প্রভাব বিস্তার করে চলে। এনিয়ে এই মরদাসাদী গ্রামবাসীর সাথে আশপাশের গ্রামবাসীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে। বুধবার মাগরিব নামাযের পর নুরু মিয়া নামে এক ব্যক্তি উচিতপুরা বাজারে একটি হোটেলে বসে চা নাস্তা করতে ছিলো। পুর্বশত্রুতার জের ধরে অতর্কিতভাবে মরদাসাদী থেকে আসা একদল দুবৃর্ত্ত ওই হোটেলের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। মুহুর্তের মধ্যেই বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজারের লোকজন আতঙ্কে ছুটাছুটি করতে থাকে।

এসময় তিনচারজন মিলে নুরু মিয়াকে হোটেল থেকে বের করে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। এখবর দ্রুত নুরু মিয়ার স্বজনদের কাছে ছড়িয়ে পড়লে বাজারে থাকা স্বজনরা ধাওয়া দিলে দুবৃর্ত্তরা দ্রুত সটকে পড়ে। পরে আশপাশের লোকজন নুরু মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এদিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গহরদী, আগুয়ান্দী, উচিৎপুরা, রায়পুরা এলাকার শত শত নারী পুরুষ মরদাসাসাদী গ্রামের দিকে দিকে আসতে থাকে। আক্রমন ঠেকাতে মরদাসাদী লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মরদাসাদীর গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে অবস্থান নেয়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শেষে ইটপাটকেল নিক্ষেপ।

খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ গোপালদী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ দুই পক্ষের মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষ ঠেকাতে চেষ্টা করছেন। এক পর্যায়ে একদল গ্রামবাসী পুলিশের উপর হামলা চালায়। থানার ওসির ব্যবহৃত গাড়িটি ভাংচুর করে।

পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়।

এদিকে পুলিশের হামলার ঘটনায় থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০০ থেকে ৪০০ জনতে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার কাদিরদিয়া এলাকার সিয়াম মিয়া (২০), উচিৎপুরার তানভির হোসেন (১৯), একই এলাকার ইমরান হোসেন (২০), সাইদুল ইসলাম (৩০), রূপ মিয়া (৩৭) ও মরদাসাদীর গ্রামের মাসুদ মিয়া (২১) ছোট বালাপুরের বিজয় মিয়া (২০)।

এ ব্যপারে আড়াইহাজার থানার ওসি (তদন্ত) সাঈফ উদ্দিন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মরদাসাদীর সাথে আশপাশের গ্রামগুলোর সাথে বিরোধ চলছে। আজকেও গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে।