সোনারগাঁয়ে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে শ্রমিককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রাশেদুল ইসলাম নামে এক জামায়াতে ইসলামীর নেতার বিরুদ্ধে দিন মজুর আব্দুল হামিদ তুষারকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা শিল্পনগরী এলাকার প্রতাপেরচর এলাকায়।

ভুক্তভোগী আব্দুল হামিদ তুষার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ এলাকার কোনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের প্রতাপেরচর এলাকায় হারুন মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া। এ ঘটনায় ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে ভুক্তভোগী সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ ও ভুক্তভোগীর বরাতের মাধ্যমে জানা গেছে, দিনমজুর আব্দুল হামিদ তুষার গত ৯ মাস ধরে লোকবল সাপ্লাইয়ের কাজে নিয়োজিত জামায়াত নেতা রাশেদুল ইসলামের অধীনে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন। গত কয়েক দিন যাবত শরীর অসুস্থ থাকায় তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় পিআর-সহ ঘোষিত পাঁচ দাবীতে জামায়াতে ইসলামীর একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সেই মিছিলে অংশগ্রহণের জন্য জামায়াত নেতা রাশেদুল শুক্রবার সকালে তুষারের বাসায় গিয়ে তাদের সাথে মিছিলে যাওয়ার কথায় অপারগতা জানালে রাশেদুল, হাবিব ও তাদের বাহিনী তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে।

একপর্যায়ে লোহার তৈরি সিলাইরেন্স দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার পর লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে রাশেদুল ও তার বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী তুষার বলেন, ঘটনার পর আমাকে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয় জামায়াত নেতা রাশেদুল। যদি না যাই তাহলে আমার হাতে-পায়ের রগ কেটে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলারও হুমকি দেয়। রাশেদুল আমাকে মারধর করে বলেন, আমি জামায়াত নেতা মেঘনাঘাটে তোর কোন বাপ আছে নিয়ে আসিস। আমি এখানকার কন্ট্রাকটর। আমার পেছনে অনেক লোক আছে তুই আমার বিষয়ে কিছুই জানিসনা। যদি তুই এই এলাকা থেকে না যাস তাহলে তোরে দুনিয়া থেকে সড়িয়ে দিবো। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সোমবার বিকেলে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

অভিযুক্ত জামায়াত নেতা রাশেদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলবো না, এখানে বাড়ির মালিক ও আমার এখানকার বড় ভাই আছে তারা বিষয়টি দেখতেছে। তবে মারধর আমি করি নাই। এখানকার লোকজন করেছে। তার অধীনে কাজ করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে গত ৫ দিন ধরে কাজে যায় না। তাই জিজ্ঞাস করতে এসেছিলাম। সে প্রতিনিয়ত স্থানীয়দের সাথে মাদক সেবন করে কিন্তু কাজে যায় না। তাই এসে জিজ্ঞাসা করার এক পর্যায়ে তর্কাতর্কি হয়। এসময় আমার সাথে থাকা এক লোক তাকে সিলারেন্স দিয়ে মাথায় আঘাত করে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জামায়াত নেতার প্রভাব খাঁটিয়ে তিনি এমনটা করেছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি জামায়াতের কোনো পদে নাই, তবে জামায়াত শিবিরকে সাপোর্ট করি। বিভিন্ন সময় মিটিং মিছিলে লোক নিয়ে যাই।

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খাঁন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।