সান নারায়ণগঞ্জ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাজিমাত করতে পারেন বিএনপি নেতা মাসুকুল ইসলাম রাজীব। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিতে তরুণ প্রজন্মের নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তার মাঝে আছেন জেলা বিএনপির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। সমানতালে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর রাজনীতিতেও বেশ সুপরিচিত ও জনপ্রিয় সাবেক এই ছাত্র নেতা। চলতি বছরের শুরুর দিকে হওয়া কমিটির নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির দুইজন যুগ্ম আহ্বায়কের মধ্যে তিনি অন্যতম একজন। এর আগের আহ্বায়ক কমিটিতেও তিনি ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক। ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। এরপরের কমিটিতেও তিনি সদস্য পদে আসেন।
সূত্রমতে, ২০০১ সালের পর বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে ভিপি নির্বাচিত হোন রাজীব। দীর্ঘদিন তোলারাম কলেজ ছাত্র রাজনীতি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য নির্বাচিত হোন। পরবর্তীতে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে সফলতা অর্জন করায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হোন।
২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন রাজীব। বছরের বেশির ভাগ সময় বাড়িছাড়া আত্মগোপনে কাটিয়েছেন রাজীব। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে বিএনপির আন্দোলন ঠেকাতে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রকাশ্যে ঘোষণা করে দেয় রাজীবকে যেখানেই পাওয়া যাবে তাকে গুলি করা হবে। পুলিশ রাজীবের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের এমন কথা জানিয়েও আসে। ছোট ছোট দুই শিশু সন্তানের সামনে থেকে রাজীবকে পুলিশ টেনে হেছড়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে একাধিকবার। মাসের পর মাস কারাভোগ করেছেন রাজীব। কারাগারে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের সঙ্গে কনডেম সেলে রাজীবকে রাখা হয়।
২০২৪ সালের নির্বাচনের পূর্বেও রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হলে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন তিনি। একাধিকবার তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় রিমাণ্ডে নেয়া হয়। ২০১৪ সালে নগরীর মিশনপাড়া থেকে রাজীবের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে সেই মিছিলে শামীম ওসমানের অন্যতম সহযোগী মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনিজাম প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ করলে বেশকজন কর্মী আহত হোন। বিগত ১৭টি বছর রাজপথে সামনে থেকে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজীব। রাজপথে একাধিকবার পুলিশের লাঠিপেটার শিকারও হয়েছেন তিনি।
নেতাকর্মীরা জানান, জোট সরকার আমলে ছাত্র রাজনীতি করাকালে জেলা জুড়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তৈরি করেন রাজীব। যা নারায়ণগঞ্জ জেলার সাতটি থানার প্রতিটি এলাকায় তার নেতাকর্মীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। যারা বর্তমানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হওয়ার পর রাজীবের নেতৃত্বে এসে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। যে কারনে বিভিন্ন আসন থেকে রাজীবের পক্ষে দাবি ওঠেছে আগামী নির্বাচনে যেনো রাজীবকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত করে নির্বাচনের মাঠে নামানো হয়।
যদিও মাসুকুল ইসলাম রাজীব বরাবরই বলে আসছেন, তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছেন। তবে তিনি কোন আসন থেকে নির্বাচনের জন্য আগ্রহী সেটা এখনো পরিষ্কার করেননি। তার বর্তমান বসবাস মহানগরীতে হলেও তার স্থায়ী ঠিকানা সিদ্ধিরগঞ্জের ৮নং ওয়ার্ডে। সে হিসেবে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৩(সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনের বাসিন্দা। একইভাবে তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতেও বেশ পরিচিত ও জনপ্রিয় নেতা। অনেকে দাবি তুলেছেন রাজীবকে নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনের প্রার্থী করতে। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের অনেক নেতাকর্মীরাও রাজীবকে এমপি হিসেবে দেখতে চাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে যাচ্ছেন। নেতাকর্মীরা বলছেন, দল এই তিনটি আসনের যেখানেই রাজীবকে মনোনিত করা হোক না কেন রাজীব নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছেন এবং এসব আসনের নেতাকর্মীরাও মুখিয়ে আছেন রাজীবের মনোনয়ন প্রাপ্তি দেখার। দলের প্রতি কমিটমেন্ট, ত্যাগ ও সাংগঠনিক দক্ষমতায়, নেতৃত্বের যোগ্যতায় বর্তমান জনপ্রিয়তা বিবেচনায় আগামী নির্বাচনে রাজীব যেকোনো একটি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত হয়ে বাজিমাত করতে পারেন বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। নেতাকর্মীদেরও দাবি এমনটা।