ব্যবসায়ী নেতারা বিএনপিতে ফায়দা নিতে মরিয়া

সান নারায়ণগঞ্জ

রাজপথে কিংবা মিটিং মিছিল বা সক্রিয় রাজনীতি না করলেও বিএনপির বর্তমান সুমময়ে বিএনপির রাজনীতিতে ফায়দা নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন বিএনপিমনা ব্যবসায়ী নেতারা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন বেশকজন ব্যবসায়ী নেতা। যদিও এসব ব্যবসায়ী নেতারা অতীতে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি না করলেও রাজনীতির পেছনে তারা ডোনেট করেছেন অঢেল অর্থ। দলের কার্যক্রম সক্রিয় রাখতে তারা অর্থনৈতিকভাবে সহযোগীতা করেছেন সেটাও সত্য। কিন্তু সেই অবদানের সুযোগে বিএনপিতে এসে এমপি মন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে চলে আসছেন সামনের সারিতে। অনেকেই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও অতীতে রাজনীতির মাঠ ছেড়ে ব্যবসায়িক কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশ আলোচনায় আছেন মডেল গ্রুপের মালিক মাসুদুজ্জামান মাসুদ ও প্রাইম গ্রুপের মালিক আবু জাফর আহমেদ বাবুল। এদের মধ্যে মাসুদ এক সময় বিএনপির যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন সেই বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে। বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ব্যবসা ঘোছাতে বিএনপির রাজনীতি থেকে সটকে পড়েন। আবু জাফর আহমেদ বাবুল বিএনপিমনা ব্যবসায়ী নেতা।

জানাগেছে, গত পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ নগরী সহ ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার ফ্যাস্টুন ব্যানারে প্রচারণা চালিয়েছেন আবু জাফর আহমেদ বাবুল। তিনি প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন। একইভাবে ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টারিং করেছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। দুজনই নির্বাচনের আভাস দিলেও তারা কোন আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি সেটা পরিষ্কার করেননি এখনো। তারা বিএনপির রাজনীতি সরাসরি না করায় রাজপথের নেতাকর্মীরা বিব্রত হচ্ছেন।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসন থেকে আবারো নির্বাচনের পথে ব্যবসায়ী নেতা কাজী মনিরুজ্জামান মনির। তিনি বিজেএমইএর নেতা। এর আগেও তিনি সংগঠনটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত বিজেএমইএর সভায় উপস্থিত ছিলেন কাজী মনির। ২০১১ সালের বিএনপির ডাকা হরতালে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় আওয়ামীলীগের লোকজন কাজী মনিরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা ভাংচুর চালায়। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হলেও রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে কখনই ছিলেন না সক্রিয়। ব্যর্থতার কারনে তার কমিটি বিলুপ্ত করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। ২০০৯ সালে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে কাজী মনির বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে পরাজিত হোন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে সামনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন আগামী নির্বাচনে তিনি বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাবেন। ২০০৯ সালে শুধুমাত্র ফতুল্লা এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে করে প্রয়াত অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর সঙ্গে পরাজিত হোন তিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন শাহআলম। তবে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য পদে বহাল থাকেন। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় না থাকলেও ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের পুর্ব পর্যন্ত রাজনীতির আলোচনায় ছিলেন শাহআলম। পরবর্তীতে আবারো তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।