নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক দিবসে ভাসমান এক শ্রমিকদলের বহু নেতৃত্ব!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদল এখন ভাসমান শ্রমিকদলে পরিনত হয়েছে। মে দিবসে দেখা গেল এক শ্রমিকদলের তিন মাথা। যাদের নিজেদের আয়োজনে কোন কর্মসূচি ছিল না। তাতে মহানগর শ্রমিকদলের দৈনদশা দেখা গেল। মহানগর শ্রমিকদলের শীর্ষ দুই নেতা কর্মসূচি পালন করলেন তিনটি। যে কারনে কর্মীরা বলছেন এক শ্রমিকদলের তিন মাথা! গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর মহানগর শ্রমিকদলের কোন কর্মসূচি দেখা যায়নি। এর মধ্যে সদস্য সচিব আলী আজগর একটি চেক জালিয়াতি মামলায় খেটেছেন জেল। যার বাদী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মহানগর শ্রমিকদলের অস্তিত দেখা যায়নি।

জানাগেছে, গত ১ মে মহান মে দিবসে নারায়ণগঞ্জের তিনজন বিএনপির শীর্ষ নেতা পৃথক পৃথক শোডাউন দেন। সকাল ৯টায় নগর ভবনের সামনে থেকে র‌্যালীর আয়োজন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মার্কেটের সামনে থেকে র‌্যালীর আয়োজন করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান। সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ কালিরবাজার এলাকা থেকে র‌্যালীর আয়োজন করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। যদিও তৈমূর আলম খন্দকারের অনুষ্ঠানে মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এসএম আসলাম সভাপতিত্ব করেছেন বলে দাবি করা হয়। কিন্তু এই কর্মসূচির মুল উদ্যোক্তা তৈমূর আলম খন্দকার নিজেই।

তৈমূর আলম খন্দকারের র‌্যালীতে অংশগ্রহণ শেষে করে এসএম আসলাম আবার সাখাওয়াত হোসেন খানের র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করেন। এই কর্মসূচিটির আয়োজকও সাখাওয়াত হোসেন খান। যদিও শ্রমিকদলের ব্যানারে করা হয় তিনটি শোডাউনই।

অন্যদিকে কালিরবাজার এলাকা থেকে র‌্যালী নিয়ে শোডাউন করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। ওই কর্মসূচিতেও মহানগর শ্রমিকদলের ব্যানারে হয়। যেখানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব আলী আজগর। ফলে মহানগর শ্রমিকদলের দুই নেতা তিনটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু শ্রমিক দিবসে শ্রমিকদলের নির্দিষ্ট কোন আয়োজন ছিল না।

এর মধ্যে মহানগর শ্রমিকদলের সাবেক সেক্রেটারি ফারুক হোসেনকেও দেখা গেল তৈমূর আলম খন্দকার ও সাখাওয়াত হোসেন খানের র‌্যালীতেও। এতেই প্রমানিত হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদল এখন ভাসমান শ্রমিকদলে পরিনত হয়েছে। যারা বিগত সময়ে দলের কোন কর্মসূচি তো পালন করতেই পারেনি। বরং শ্রমিক দিবসেও মহানগর শ্রমিকদলের কর্মসূচি পালন করা হয়নি। শীর্ষ দুই নেতাই তিনটি কর্মসূচিতে অনেকটা দাওয়াতি মেহমান হিসেবে যোগদান করেছেন। এসব কারনে শ্রমিকদলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দাবি করছেন অচিরেই এই আহ্বায়ক কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হোক। যেখানে মাঠের সক্রিয় নেতাকর্মীরা থাকবেন।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিকদলের কমিটি গঠন করা হলেও তার কোন আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। জানাগেছে ফতুল্লার মন্টু মেম্বারকে সভাপতি ও সোনারগাঁয়ের মুজিবুর রহমানকে সেক্রেটারি করে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্র্রমিকদলের কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। মন্টু মেন্বার হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমের লোক ও মুজিবুর রহমান হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নানের লোক। শ্রমিক দিবসে জেলা শ্রমিকদলের আয়োজনে র‌্যালী করা হয়েছে সোনারগাঁয়ের কাচপুরে। এর আগে জেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক ছিলেন ফতুুল্লার নাসির উদ্দীন ও সদস্য সচিব ছিলেন আড়াইহাজারের মীরজুল হাসান নয়ন মোল্লা। মন্টু মেস্বার ওই কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। জেলা শ্রমিকদলের কমিটি কবে কখন কিভাবে হয়েছে তা নারায়ণগঞ্জ শ্রমিকদলের অনেক নেতাকর্মীরা জানেন না। সোনারগাঁয়ে জেলা শ্রমিকদলের র‌্যালীতেও দেখা গেল মান্নানকেই। এ ছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতি সেক্রেটারি সহ শীর্ষ নেতাদের কেউই ছিলেন না। ফলে এটাও পকেট কমিটি।