নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগ মানেই ওসমান পরিবার: খোকন সাহা

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ মানেই ওসমান পরিবার। অতীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল বিপদে আপদে সব সময় সবার আগে ওসমান পরিবারের সদস্যরাই এগিয়ে গিয়েছেন, আমাদের ছায়া দিয়ে সকল বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে রেখেছেন। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশে হিন্দুরা নিরাপদে বসবাস করতে পারে। ২০০১ সালের বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের অত্যাচারের কথা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে। তাই বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপদে বসবাস করতে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ এবং শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নাই। আগামীতে যদি শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী না বানানো যায় তবে আমি খোকন সাহা নারায়ণগঞ্জে কেন বাংলাদেশে থাকতে পারবো কিনা জানি না, জীবিত থাকতে পারবো কিনা সেই বিষয়ে সন্দেহ আছে। আর যদি আপনারা মনে করেন যে আওয়ামীলীগের নেতা হিসেবে বিপদ সব খোকন সাহার উপর দিয়ে যাবে। তাহলে আপনারা ভুল করবেন। আগামীতে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশে হিন্দুরা থাকতে পারবে কিনা সেই বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে শেখ হাসিনা মনোনীত মহাজোটের প্রার্থী এমপি সেলিম ওসমানকে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে আবারো জয়ী করতে হবে। এ ছাড়া বিকল্প কোন পথ নাই।

একই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সেলিম ওসমান উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, সেই ব্রিটিশ আমল থেকে নারায়ণগঞ্জে অতীতে যেভাবে ওসমান পরিবারে সদস্যরা একে একে খান সাহেব ওসমান আলী, একেএম শামসুজ্জোহা, নাসিম ওসমান ও শামীম ওসমান সহ তিনি নিজে যেভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে ছিলেন, এখনো আছেন এবং ভবিষ্যতেও ওসমান পরিবারের সকল সদস্যরা নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের সুখে দু:খে সব সময় পাশে থাকবেন।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী এমপি সেলিম ওসমান তথা ওসমান পরিবারের উপর আস্থা রাখতে চান নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়। আসন্ন নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে লাঙ্গল প্রতীকে হিন্দু সম্প্রদায়ের শতভাগ ভোট দিয়ে তাঁরা এমপি সেলিম ওসমানকেই পুনরায় নির্বাচিত করতে চান।

সোমবার ৩ নভেম্বর রাত ৮টায় চাষাঢ়াও অবস্থিত হীরামহলে এমপি সেলিম ওসমানের সাথে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট, হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদ সহ নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার নারী পুরুষের সাথে মত বিনিময় করেন।

উক্ত মত বিনিময় সভায় বক্তারা বাংলাদেশে বিগত সময় গুলোতে বিশেষ করে ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অমানবিক জুলুম নির্যাতন ও লুটপাটের কথা তুলে ধরেন। তারা কোন অবস্থাতেই এমন ভয়ানক আর বিভীষিকাময় অতীত স্মৃতির পুণরাবৃত্তি বা সম্মুখীন হতে চান না।

বক্তারা সেই সাথে বিগত সময় গুলোতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নেমে আসা সাম্প্রদায়িক সংকটময় পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের পর্যায়ক্রমে মরহুম খান সাহেব ওসমান আলী, মরহুম এ.কে.এম শামসুজ্জোহা, প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান, বর্তমানে শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের সাহসিক ও প্রশংসনীয় ভূমিকা এবং তাদের বিপদ থেকে রক্ষার করার মত বিষয় গুলো তুলে ধরেন। সেই সাথে সেলিম ওসমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার প্রতি বছর শারদীয় দূর্গা উৎসবে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রতিটি পূজা মন্ডপে গত ৪ বছরে প্রায় ১ কোটি টাকার অনুদান, লাঙ্গলবন্দে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার পর তাঁর প্রশংসনীয় পদক্ষেপ এবং পরবর্তীতে লাঙ্গলবন্দের ব্যাপক উন্নয়ন এবং হাজার কোটি টাকা বাজেটে মেগা প্রকল্পের অনুমোদন, বিভিন্ন মন্দিরের উন্নয়নে কোটি টাকার আর্থিক অনুদান, বন্দরের ধামগড়ে বেদখল হয়ে যাওয়া শ্মশানের জমি উদ্ধার, বেশ কয়েকজন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের দীর্ঘদিন জবর দখল হয়ে থাকা বসত ভিটা উদ্ধার করে দেওয়া হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি তার সহযোগীতা ও সহমর্মিতার বিষয় গুলো গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ শতকার ৯৫ ভাগ আওয়ামীলীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের দৃশ্য একটু ভিন্ন। এখানে আওয়ামীলীগ বা জাতীয় পার্টি, নৌকা অথবা লাঙ্গল মার্কা আলাদা কোন বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এমপি সেলিম ওসমানকে মনোনীত করেছেন। তাই আমরাও মার্কা কি সেটা বুঝিনা আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে সেলিম ওসমানকে লাঙ্গল মার্কায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শতভাগ ভোট দিয়ে বিজয়ী করবো।

মত বিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি কমান্ডার গোপি নাথ দাস, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন শীল, বিশিষ্ট হিন্দু নেতা প্রবীর কুমার সাহা, অমল কুমার পোদ্দার, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি শংকর কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুজন কুমার সাহা, মহানগরের সভাপতি দিপক কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার, রিপন ভাওয়াল, দিলীপ কুমার মন্ডল সহ সহস্রাধিক হিন্দু নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।