নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘ হচ্ছে যুবলীগের পাইপলাইন!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

প্রায় ২০ বছর পেরিয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলনের বয়স। এরি মধ্যে যুবলীগের নেতৃত্ব প্রত্যাশি নেতাদের পাইপলাইন দীর্ঘ হয়েছে। ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে যুবলীগের নেতৃত্বে আসার লড়াইটা যেনো ধমকে আছে কমিটি না হওয়ার কারনে। তবে ছাত্রলীগের কমিটি হচ্ছে মেয়াদ যাচ্ছে বাতিল হচ্ছে কিন্তু যুবলীগের সেই কমিটি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে এখনো। এমন পরিস্থিতিতে যুবলীগের নেতৃত্ব প্রত্যাশি নেতারা রয়েছেন অপেক্ষমান। একই দশা নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের কমিটি আসার ক্ষেত্রেও। শহর যুবলীগই এখন মহানগর যুবলীগ।

নেতাকর্মীরা জানান, গেল বছর নারায়ণগঞ্জে যুবলীগের কমিটি গঠনের বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছিলো কেন্দ্রীয় ‍যুবলীগ। কিন্তু সেই উদ্যোগে নির্বাচনের কারনে থমকে যায়। দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের নেতৃত্ব প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনায় আছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু। তার সঙ্গে ছাত্রলীগের কমিটির সেক্রেটারি জিএম আরাফাত এখন মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন। একই দশা জেলার অন্যান্য থানা/উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ক্ষেত্রেও। অনেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় নাই, কেউবা মুলদলের রাজনৗতিতে।

এদিকে জেলা যুবলীগের নেতৃত্বে আসার আলোচনায় রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি। তার সঙ্গে ছাত্রলীগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন যুবলীগের নেতৃত্বে আসার আগেই পরপাড়ে পাড়ি জমিয়েছেন। এরি মাঝে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ফলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাঈল রাফেল প্রধান এখন ঝুলে আছেন পদ পদবী বিহীন। যদিও তাদের আগে সামনে নেতৃত্বে আসার তালিকায় রয়েছেন হেভিওয়েট নিপু ও সানির মত নেতা।

একইভাবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গত ২০২১ সালের সিটি নির্বাচনের পূর্বে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন হাসনাত রহমান বিন্দু। এরাও এখন মহানগর যুবলীগের নেতৃত্বে আসার আলোচনায় ওঠে এসেছেন। কিন্তু জেলা যুবলীগের মত মহানগর যুবলীগের কমিটিও কবে নাগাদ হবে তার কোনো হদিস করতে পারছেন না নেতৃত্ব প্রত্যাশিরা। এদের সঙ্গে অনেকেই রয়েছেন যারা এসব নেতাদের পেছনে যুবলীগের রাজনীতিতে আসার প্রত্যাশায় আছেন।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, বিএনপি-জামায়েত ইসলামীর নেতৃত্বধীন ৪ দলীয় জোট সরকার আমলে অনেকটা বৈরী পরিস্থিতিতে ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয়। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের আর সম্মেলন কিংবা কমিটিও হয়নি! দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ছাড়িয়ে গেলেও যুবলীগে নতুন কমিটি না হওয়ার কারনে গত ২০টি বছরে অনেক তরুণ নেতৃত্ব হোচট খেয়েছেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা দু’একজন মুল দল আওয়ামীলীগে ঢুকে গেলেও বাকিদের ভাগ্যে জুটেনি পদ পদবী। তৎকালীন সময়ে জেলা যুবলীগের আওতাধীন ছিলো শহর যুবলীগের কমিটিও। একই দশা এখানেও।

২০১১ সালে গঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের আলোচিত কমিটির একঝাঁক তরুণ নেতৃত্বের অপমৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে শুধুমাত্র যুবলীগের কমিটি না হওয়ার কারনে। একইভাবে মহানগর যুবলীগের কমিটির ক্ষেত্রেও। ওই কমিটির আগের জেলা ছাত্রলীগের নেতারাও ঠাই পাননি যুবলীগে। এরি মাঝে মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠিত হওয়ার কারনে পূর্বের কমিটির নেতারাও যুবলীগের পাইপ লাইনে দাঁড়িয়ে গেছেন। ফলে ছাত্রলীগের তিন চার টার্মের কমিটি গঠন ও বিলুপ্ত হলেও যুবলীগের নতুন কমিটি হয়নি জেলা ও মহানগরীতে।

জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল কাদির ইতিমধ্যে এক মেয়াদে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন শেষে সাবেক হয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে বহাল রয়েছেন। জেলা যুবলীগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি পদে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। শহর যুবলীগের কমিটিই চলছে মহানগর যুবলীগ নামে। শাহাদাত হোসেন সাজনু সভাপতি ও আলী আহম্মদ রেজা উজ্জল সাধারণ সম্পাদক পদে। এই কমিটিরও মেয়াদ প্রায় ২০ বছরের কাছাকাছি সময়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানির নেতৃত্বে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন তাদের মধ্যে দুএকজন বিভিন্ন থানা/উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে পদে আসতে পারলেও বাকিরা রয়েছেন যুবলীগে পদায়নের আশায়। সানি ছাড়াও যাদের মধ্যে যুবলীগে আসার পাইপ লাইনে রয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রহমান নান্নু, মিনহাজুল ইসলাম রিয়াদ, শেখ রায়হান, জিয়াউল ইসলাম জিকু, নূরে আলম রঞ্জু, জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রলীগের শ্লোগান মাস্টার খ্যাত মিজানুর রহমান সজীব, ছাত্রলীগ নেতা সানি আহমেদ পরশ, মনির হোসেনসহ আরো বেশকজন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা যারা মুলত যুবলীগের কমিটি হলেই সেখানে তাদের ঠাই হতো। যুবলীগের কমিটি ঠিক সময়ে সময়ে গঠিত হলে এরা যুবলীগের রাজনীতির মাধ্যমে হয়তো কেউ কেউ কোনো কোনো থানা/উপজেলা কিংবা পৌরসভা/ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে থাকতেন।