মুকুলের জয়েই স্থানীয়দের হাতে ফিরতে পারে বিএনপির কমিটি!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতি স্থানীয়দের হাতে নেই বলে দাবি করে আসছেন রাজপথের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা। নারায়ণগঞ্জের বিএনপির ঐতিহ্যবাহী দুই রাজনৈতিক পরিবার জালাল হাজীর পরিবার ও খন্দকার পরিবারের রাজনীতির বাহিরে বিনদেশী বহিরাগতদের হাতে চলে গেছে বিএনপির কমিটি। তবে এবার বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আতাউর রহমান মুকুলের জয়ের মাধ্যমেই স্থানীয়দের হাতে ফিরতে পারে বিএনপির কমিটি। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কমিটির অবস্থা এখন বাম ঘরনার দলগুলোর মত দশা। এ থেকে উত্তোরণ ঘটাতে হলে নারায়ণগঞ্জের দুইটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেয়া একান্ত জরুরী বলে মনে করছেন রাজপথের ত্যাগী ও নির্যাতিত পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, আগামী ৮ মে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে এই পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। তিনি ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে বন্দরে তার। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা হাজী জালাল উদ্দীনের ভাতিজাও তিনি। বিএনপির চারবারের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের চাচাতো ভাই মুকুল। আবুল কালামের ছেলে মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাউসার আশা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর। আবুল কালামের একমাত্র কন্যা বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সামসুন্নাহার বাধন কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের রাজনীতিতে সক্রিয় কর্মী।

এদিকে মজলুম জননেতা ড. তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপি ছেড়ে তৃণমুল বিএনপির রাজনীতিতে ফিরে গেলেও তার অনুগামী ও তার পরিবারের লোকজন সকলেই বিএনপির রাজনীতিতে বহাল রয়েছেন। তার আপন ভাগিনা রশিদুর রহমান রশু মহানগর কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তৈমূর আলমের আপন ছোট ভাই সিটি কর্পোরেশনের ৪বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। খোরশেদের আরেক ভাগিনা মাহাবুব রহমান অসুস্থ শয্যাশয়ী হলেও তিনি সুস্থ্যবস্থায় জেলা মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। খোরশেদের আরেক ভাগিনা নাজমুল কবির নাহিদ মহানগর কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। খোরশেদের ভাতিজি ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। তিনি সুপ্রীম কোর্টের নির্বাচনে সদস্য পদে বিএনপি প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

খোরশেদ মহানগর যুবদলের একাধিকবারের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পদে রাখা হলেও তিনি স্বচ্ছোয় পদত্যাগ করেন। ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের রাজনীততেও। তার আমলেই নারায়ণগঞ্জে যুবদলের বিভাগীয় সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ খোরশেদ খন্দকার পরিবার। জেল জুলুম হামলা মামলা নির্যাতনের পাহাড় ছিলো এই খন্দকার পরিবারের উপর।

এমন পরিস্থিতিতে জালাল হাজী ও খন্দকার পরিবারের বাহিরে রহস্যজনক কারনে বিনদেশীদের হাতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি তুলে দেয়া হয়। নারায়ণগঞ্জে যারা বিএনপিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন, হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেইসব নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্য বিনদেশীদের হাতে বিএনপির কমিটি তুলে দেয়া হয়েছে। যে কারনে নারায়ণগঞ্জে বিএনপি এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

নেতাকর্মীরা মনে করেন, বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আতাউর রহমান মুকুল ও মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের মাধ্যমে কমিটি গঠন জরুরী। গত নির্বাচনে মুকুলকে বহিষ্কার করা হলেও সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুকুল জয়ী হলেই তার হাতে ওঠবে মহানগর বিএনপির কমিটির নেতৃত্ব এমনটা ধারণা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সেক্ষেত্রে মুকুলের যোগ্য পার্টনার হিসেবে খোরশেদকেই পছন্দ করছেন রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। রাজপথের ত্যাগীদের হাতে বিএনপির কমিটি ফেরাতে হলে মুকুলের জয়ের কোনো বিকল্প নাই।