ফতুল্লার ক্লু-লেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো র‌্যাব, আসামী গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

র‌্যাব-১১, সিপিসি-১ এবং র‌্যাব-১০, সিপিএসসি এর যৌথ অভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানার চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক ক্লু-লেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন পূর্বক মোঃ রানা হোসেন হত্যার প্রধান আসামী মোঃ সাব্বির হোসেনকে ডিএমপি ঢাকা’র শ্যামপুর থানা এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা।

তিনি জানান, গত ৯ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানাধীন সিএসআরএম ডেইরী ফার্মের সামনে রাস্তার উপর সাদা প্লাস্টিকের বস্তার ভিতর রশি দিয়ে হাত, পা বাঁধা ও কম্বল দিয়ে মোড়ানো অর্ধগলিত অবস্থায় একটি মৃত দেহ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে থানা পুলিশ এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মৃত ভিকটিমের কোন পরিচয় সনাক্ত করতে না পারলে মাইকিং করে তার পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। মৃত ভিকটিমের পরিচয় উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ভিকটিমের ডিএনএ সংরক্ষণের আবেদনসহ ভিকটিমের মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জে প্রেরণ করা হয়। ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত না হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-১৬, তারিখ ১০/১২/২০২৩, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দন্ড বিধি। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সংবাদপত্রে প্রচারের মাধ্যমে ভিকটিমের ছবি ও পরিহিত পোশাক দেখে তার পরিবার ভিকটিম মোঃ রানা (২৮), পিতা- মৃত আব্দুল করিম, সাং- শ্যামপুর ব্রীজ, জুরাইন, থানা-কদমতলী, জেলা-ঢাকাকে সনাক্ত করে। এ পাশবিক ও নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এরপর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ র‌্যাব-১১, সিপিসি-১ এবং র‌্যাব-১০, সিপিএসসি এর যৌথ অভিযানে এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মোঃ সাব্বির হোসন (২০), পিতা-আঃ রাজ্জাক, মাতা-মৃত সাজেদা বেগম, সাং-খোকন মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া, শ্যামপুর ব্রীজ, জুরাইন, থানা-কদমতলী, জেলা-ঢাকাকে ডিএমপি ঢাকার শ্যামপুর থানাধীন জুরাইন এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব আরো জানায়, আসামী সাব্বির এবং ভিকটিম রানা পূর্ব পরিচিত এবং একই এলাকার বাসিন্দা। আসামী সাব্বির (২০) ও সাব্বিরের ভাই সাজ্জাদ (২৩) এবং ভিকটিম রানা (২৮)তাদের নিজেদের মধ্যে টাকা-পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য আসামী সাব্বির (২০) এর বাসায় একত্রে মিলিত হয়। টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা কাটা-কাটির একপর্যায়ে আসামী সাব্বির এবং তার ভাই সাজ্জাদসুইচ গিয়ার দিয়ে ভিকটিম রানার বুকে আঘাতকরলে ভিকটিম রানা মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে আসামীরা ভিকটিম রানার মৃত্যু নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরও একাধিক বার ছুরিকাঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে আসামী সাব্বির এবং তার ভাই সাজ্জাদ ভিকটিম রানার হাত, পা রশি দিয়ে বেঁধে কম্বল মুড়িয়ে বস্তাবন্দি করে ২-৩ দিন আসামী সাব্বিরের রুমে লুকিয়ে রাখে। গত ৯ ডিসেম্বর ভোরে আসামী সাব্বির এবং তার ভাই সাজ্জাদ ফতুল্লা মডেল থানাধীন মুন্সিবাগ সাকিনস্থ সিএসআরএম ডেইরী ফার্মের সামনে বস্তাবন্দি লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা রুজু হলে আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়।

উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামী সাব্বির (২০) এর বিরুদ্ধে ডিএমপি কদমতলী থানায় একটি ছিনতাই এর মামলা চলমান রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।