এমপি খোকা দৈনিক ১৮ ঘন্টাই ছিলো আমজনতার মাঝে

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

দীর্ঘ ১০টি বছর এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টাই দিয়েছেন নিজ সংসদীয় এলাকার মানুষকে। একটি ইউনিয়ন পরিষদের একজন মেম্বারকে পাওয়া যতটা কঠিন, তার চেয়েও এমপি খোকার সঙ্গে যোগাযোগ করা ছিলো আরো সহজ। সকল শ্রেণির পেশার মানুষ ছিলো তার কাছে সমান। গরীব ধনী সকল মানুষ তার কাছে সমান। যেকোনো শ্রেণির মানুষ তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পেরেছেন নির্ধিধায়। এভাবে একজন এমপি আমজনতার নেতা হয়ে ওঠেছেন। যার কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী নাই, ভূমিদস্যূ বাহিনী নাই, মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নাই, অস্ত্রবাজ দাঙ্গাবাজ নাই, সাধারণ মানুষ তার একমাত্র শক্তি।

সমাজের কর্তা ব্যক্তি ও ধনী শ্রেণি কিংবা প্রভাবশালীদের কাছে পছন্দের না হলেও সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর রিক্সা চালক ভ্যানচালক কুলি ভিক্ষুক বেদে হিজড়া সম্প্রদায় সহ সকলের কাছে এমপি খোকা একজন মাটির মানুষ। যার ভেতরে বিন্দুমাত্র অহংকার অহমিকা ধম্ভ দেখতে পায়নি সোনারগাঁবাসী। একজন এমপিকে এমন সাদাসিদে চলাফেরার কারনেই আজকে সোনারগাঁয়ের সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রতিপক্ষ প্রতিদ্বন্ধি দলের চেয়ে তার দলের সাংগঠনিক দক্ষতা ও শক্তিও বাড়িয়েছেন তিনি। যার মুল শক্তি হিসেবে কাজ করেছে সাধারণ আমজনতা। যাদের উপর ভর করেই আগামী নির্বাচনেও জয়ের স্বপ্ন দেখছে জাতীয় পার্টি।

জাতীয়পার্টির কেন্দ্রীয় অতিরিক্ত যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা। একই সঙ্গে তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যও। দায়িত্ব পালন করছেন কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক পার্টির। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে জাতীয়পার্টির দ্বিতীয় বারের মত সংসদ সদস্য। ২০১৪ সালে তিনি সোনারগাঁয়ে এমপি নির্বাচিত হোন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্ধিতা করে দ্বিতীয় বারের মত এমপি নির্বাচিত হোন। দশ বছর সোনারগাঁয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে প্রমাণ করেছেন তিনি শান্তির প্রতীক।

স্থানীয়রা আরো জানিয়েছেন, সোনারগাঁয়ে একাধিকবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম। তিনি হয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীও। তার আমলে সোনারগাঁয়ে তিনি গড়ে তুলেছিলেন ‘ওরা ১১জন’। এই ১১ জনের মাধ্যমেই সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রিত হতো। ওই সময় সাধারণ মানুষ রেজাউল করিমের সঙ্গে সাক্ষাত তো দূরের কথা তার দেখা পাওয়াও ছিল দূরহ ব্যাপার। সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ ছিল ১১ জনের কাছে। এমপি রেজাউল করিম তো দুরের কথা ওই সময় এই ১১ জনের দ্বারে কাছেও ভীড়তে পারেনি সাধারণ মানুষ। তার মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক নিয়ে নানান বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ১/১১ এর সময় তার ১২’শ বিঘা জমি সহ বিপুল সম্পদের খবর মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছিল।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ- রেজাউল করিমের এসব কারনে জনগণ পরবর্তী ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়ে বৃহত্তর সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও আসনে আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে এমপি নির্বাচিত করেছিলেন। নির্বাচনের পর বৃহত্তর দুটি থানা এলাকার নিয়ন্ত্রণে কায়সার হাসনাতের তৈরি হয় ‘সেভেন স্টার’। ওই সময় সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা এমপি কায়সার হাসনাতের সাক্ষাত পায়নি দলের ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীরাও। সেভেন স্টারের সাতজনই দুটি এলাকার নিয়ন্ত্রক ছিলেন। তার আমলে এমপি কায়সার হাসনাতের ছায়াও পায়নি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। তার আমলে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডও ছিল বেশ চোখে পড়ার মতই। তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন তিনি জনগণের সেবক। নেতাকর্মীদের ফোনটিও রিসিভ করেননি। কিন্তু বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার এই আমলে এখনও পর্যন্ত নেই ‘ওরা ১১জন’ কিংবা নেই ‘সেভেন স্টার’ এর মত কোন নিয়ন্ত্রণকারী গ্রুপ। এমপি খোকার রয়েছে আমজনতা। সরাসরি তিনি জনগণের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করেছেন।

এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এখানে কেউ এমপি হলে অঢেল সম্পদের খবর বের হয় অথচ দ্বিতীয় নির্বাচনে নিজের মার্কেটের দোকান বিক্রি করে নির্বাচনী খরচ যোগান দিয়েছিলেন এমপি খোকা। যা সোনারগাঁয়ের মানুষজনও জানেন। অথচ তিনি এর আগে ৫টি বছর এমপি হিসেবে ছিলেন এই আসনেই। একজন এমপির আর্থিক এমন দৈনদশা থাকলেও সোনারগাঁয়ের আমজনতার মাঝে তিনি একজন বিরাট মনের মানুষ, একজন সাধারণ মানুষ। সেই দিক দিয়ে জনতার মাঝে তিনি স্বচ্ছলতা অর্জন করেছেন।

সোনারগাঁওবাসীর দাবি- লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের মানুষ অন্তত অশান্তিতে ছিলেন না। কোন মাধ্যম ছাড়াই যে কোন আমজনতা এমপি খোকার সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারেন। জনগণ তার কাছে যাওয়ার আগে তিনিই জনগণের কাছে দৌড়ে গেছেন। হাট ঘাট বাজার রাস্তা গ্রামগঞ্জে তিনি ঘুরেছেন। কখনও চায়ের দোকানে বসে আমজনতার সঙ্গে চা পান করেছেন। আড্ডা দিয়েছেন সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে। কেউই তার কাছে ছোট কিংবা বড় নয়। সকলকে দেখেছেন তিনি সমানচোখে। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টা তিনি সোনারগাঁয়ের মানুষের পাশে কাটিয়েছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। কেউ সমস্যা নিয়ে আসছেন আর তার সমাধান করেছেন। মুলত দশটি বছরে এসব বিষয়গুলো এমপি খোকার জনপ্রিয়তা সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়িয়েছে। রাজনৈতিকভাবে রাজনৈতিক বিরোধীতার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তার বিরোধীতা করলেও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি একজন আমজনতার এমপি হিসেবে সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন।

গত বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ত্রাণকর্তা হিসেবে আভির্ভূত হয়েছিলেন এমপি খোকা। সকাল দুপুর বিকেল সন্ধ্যায় রাতে মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌছে দিয়েছেন এমপি খোকা নিজ হাতে। যেসব পরিবারগুলো কারো কাছে হাত পাততে পারেনি তাদের ঘরে রাতের আধারে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন এমপি খোকা, কখনও নিজ হাতে কখনওবা তার লোকজনের মাধ্যমে। সার্বক্ষনিক খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য তিনি হটলাইন সেন্টার খুলেছিলেন। যেখানে ফোন করলেই খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়ে আসতো। রোগীর চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি সার্বক্ষনিক এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছিলেন। করোনাকালে তার এমন ভুমিকার ব্যাপক প্রসংশা করছেন ভোটাররা।