মহিলা দলের নেত্রীকে লাঞ্ছিত: মায়া ও ময়নাকে ঘষেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা দলের নেত্রী সালমা আক্তার কাজলকে মারধর করেছেন জেলা মহিলা দলের সভাপতি রহিমা শরীফ মায়া ও মহানগর মহিলা দলের সভাপতি দিলারা মাসুদ ময়না। এমন অভিযোগ করেছেন লাঞ্ছিত হওয়া ওই নেত্রী সহ মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা। এ বিষয়ে আয়েশা আক্তার দিনা তার ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেন এবং দলীয়ভাবে শাস্তির দাবি করেন। একই সঙ্গে তার পোস্টে মায়া ও ময়নাকে ঘষেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা করে তাদের প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। সেই কর্মসূচি নারায়ণগঞ্জ কোর্টের সামনে পালন করতে আসেন মহিলা দলের নেত্রীরাও। কর্মসূচির শেষদিকে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক ও জেলা মহিলা দলের নেত্রী সালমা আক্তার কাজলকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেন রহিমা শরীফ মায়া ও দিলারা মাসুদ ময়না। মারধরের শিকার হয়ে কাজল তাৎক্ষনিক ফেসবুকে লাইভে এসে তার আহত হওয়ার দৃশ্য দেখিয়ে মায়া ও ময়নার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন।

তবে এর কিছক্ষন পরেই নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তার, জেলা মহিলা দল নেত্রী সালমা আক্তার কাজল, রূপগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সানজিদা আক্তার ও জেলা মহিলা দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিলা আক্তারকে নারায়ণগঞ্জ কোর্টের সামনে থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। যদিও এর কয়েক ঘন্টা পর তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত জানান আয়েশা আক্তার দিনা। তিনি সেখানে লিখেছেন, আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজিত মানববন্ধনে যোগ দিতে সোনারগাঁ থানা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সালমা আক্তার কাজল নারায়ণগঞ্জ কোর্ট প্রাঙ্গনে আসলে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া ও মহানগর মহিলাদলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না কতৃক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়।

‘এর আগেও বিভিন্ন সময় এই মায়া ও ময়না দ্বারা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন নারী নেত্রীরা নানানভাবে নির্যাতনের শিকার হয়।দলের এই দুঃসময়ে বিএনপির নেতা কর্মীরা আওয়ামীলীগ দ্বারাও নির্যাতিত হবে, প্রশাসন দ্বারা নির্যাতিত হবে আমার নিজ দলের নেত্রীদের দ্বারাও নির্যাতিত হবে এ কেমন বিচার?’

‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করতে এসে সালমা আক্তার কাজলের উপর নিজ দলের নেত্রীরাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করলো। এর আগে ও নারায়ণগঞ্জ শহীদ মিনারে বিএনপির প্রোগ্রামে কাজলকে মায়া ও ময়না শারীরিকভাবে নির্যাতন করে তখন কেউ এর বিচার করে নাই বলেই এরা দিন দিন এতটা বর্বর হওয়ার স্পর্ধা পাচ্ছে। দলের এমন সংকটময় মুহূর্তে যেখানে সভানেত্রীদের দায়িত্ব সবাইকে একত্রিত করে সুসংগঠিত হওয়া সেখানে মায়া ময়নার এমন বর্বরোচিত আচরন এমন উশৃংখল আচরণ ঘষেটি বেগমের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যুগে যুগে সব দলেই মীরজাফর আর ঘষেটি বেগমরা ঘাপটি মেরে বসে থাকে সময় মত তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়। এবার সবার আগে দলের ভিতর ঘাপটি মেরে বসে থাকা ঘষেটি বেগমদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করা ফরজ হয়ে গেছে। আমি আমার এই পোস্ট এর মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং নারায়ণগঞ্জ মহিলাদলের বোনদের এই দুই বর্বর নারীর বিরুদ্ধে একত্রিত হবার ঘোষনা দিচ্ছি। যদি কেন্দ্র এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর বিএনপির নেতারা এর বিচার না করেন তাহলে পরবর্তী পরিস্থিতি আরোও ভয়াবহ হবে। এদের সিএস এসএ আরএস সঠিকভাবে উন্মোচন করা হবে। এই দুই বর্বর নারীর হাত থেকে নারায়ণগঞ্জ মহিলাদলকে রক্ষা করতে হবে। আমি কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনা সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ মহানগর মহিলাদল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ঘৃনা প্রকাশ করছি ‘

এখানে উল্লেখ্যযে, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় ময়না ও মায়াকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে ময়না ও মায়া আন্দোলন সংগ্রামে না থেকে বিভিন্ন বিনোদন এলাকায় ঘুরাফেরা করছেন বলে দাবি করা হয়। নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করে ময়না। এ সংক্রান্ত সংবাদের পত্রিকার নিউজটি সালমা আক্তার কাজল তার ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। মুলত সেই ক্ষোভ থেকেই ময়না ও মায়া কাজলের উপর হামলা চালাতে পারে বলে অনেকের ধারণা।