বারী ভুঁইয়ার উপর হামলাকারী ৩ আসামী কারাগারে

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়ার উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার মামলার তিন আসামীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। এর আগে উচ্চ আদালত থেকে আসামীরা জামিনের প্রার্থনা করলে আদালত আসামীদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদনের নির্দেশনা থাকলেও সেই নির্দেশনা অমান্য করায় আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছিলেন। সেই মামলার আসামীরা আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের প্রার্থনা করলে আদালত তিন আসামীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালত সূত্রে এ তথ্য জানাগেছে।

জানাগেছে, ৫ নভেম্বর রবিবার নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ২নং আদালতে মামলার আসামী আনোয়ার হোসেন রাজীব, সাকিব ও সানজিদ আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক কাউসার আলম আসামীদের জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে আসামীদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ঘটনা সূত্রে, গত ৩০ জুন অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়ার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ১২জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। আসামী আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকীদের রহস্যজনক কারনে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ফতুল্লা মডেল থানার মামলা নং ৮৯(৬)২০২৩।

এই মামলায় আসামীরা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলে আদালতে নিম্ম আদালতে আসামীদের নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আত্মসমর্পনের নির্দেশনা দেন। আসামীরা আত্মসমর্পন না করায় গত ২১ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের বিচারিক আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই মামলায় রবিন ও আবু তাহের জামিনে থাকলেও বাকিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল থাকে। ওইসব পরোয়ানাভুক্ত আসামীরাই এখন বাদী ও বাদীপক্ষের পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি বলে অভিযোগ ওঠে।

গত ৩০ জুন শুক্রবার সকাল ভোরে ফজরের নামাজের পর ফতুল্লা থানাধীন তল্লা এলাকায় নিজ বাসভবনের সামনে অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়ার উপর সন্ত্রাসী এ হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়ে বারী ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ফতুল্লা দক্ষিণ কায়েমপুর এলাকার রাজউক এর সাবেক কর্মচারী অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক আসামী নজরুল ইসলাম সরদার, আসামী রাজিব ওরফে সজিব ওরফে জুয়েল, সাকিব, রবিন, নাঈম, সানজিদ, মিন্টু, ডালিয়া, আবু তাহের সহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন ৩০ জুন শুক্রবার সকাল অনুমান সোয়া পাঁচটায় আসামী নজরুল ইসলাম সরকার ও আসামী আবু তাহেরের পূর্ব পরিকল্পনা মােতাবেক বায়তুল আকসা মসজিদে ফজরের নামাজে শেষে বারী ভূঁইয়ার বাড়ীর সামনে পায়চারী করা অবস্থায় ২৯ সিরিয়ালের সাদা রংয়ের প্রাইভটকার যোগে এসে আসামী সজিব, জুয়েল পথরোধ করে আসামী নজরুল ইসলাম সরকারের মেয়ে ডালিয়া (২৬) গাড়ীতে থাকিয়া বারী ভূঁইয়াকে দেখাইয়া দেয়।

এ সময় আসামী সজিব ওরফে জুয়েল হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চাপিয়া ধরিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে সারা শরীরে কিল ঘুষি মারিয়া আহত করে। আসামী নাঈম আমার চক্ষু নষ্ট করার উদ্দেশ্যে ডান চোখে ঘুষি মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। আসামী রবিন ও সাকিব হত্যার উদ্দেশ্য এলােপাথারীভাবে ডান চোখসহ কপালে, ঠোটে, থুতনীতে, আসামী সানজিদ হত্যার উদ্দেশ্যে কিডনি বরাবর ঘুষাইয়া মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে।

আসামী সজিব পকেটে থাকা পঞ্চান্ন হাজার টাকা ছিনাইয়া নিয়া যায় এবং এই বলে হুমকি দে যে নজরুলের অপকর্মের বিরােধিতা করা যাইবেনা। আসামী সজিব ওরফে জুয়েল গুলি করে হত্যা করার হুমকি দেয় এবং এলাকায় বসবাস করিতে হইলে দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হইবে। এলাকাবাসী আগাইয়া আসিলে আসামী সজিব জুয়েল আসামী নজরুল ইসলাম সরকারের সাথে মােবাইলে কথা বলতে বলতে নজরুল ইসলাম সরকারের বাড়ীতে আত্মগােপন করে।

আরো উল্লেখ করা হয়, জাল সাটিফিকেট ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের কারনে ১/১১ সময়ে আসামী নজরুলের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং চাকুরীচ্যুত হয়। গত ১৮/০৬/২০২৩ইং তারিখে আসামী নজরুলের ভায়রা নাসিম ওরফে নাসির (৫৩) পিতামৃত- শাহাদাৎ হোসেন ৭ (সাত) বৎসরের কন্যা শিশুকে ধর্ষনের কারনে উপরােক্ত বিষয়ে আসামী নজরুল ইসলাম সরকার বারী ভূঁইয়াকে সন্দেহ করিত বিধায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উক্ত ঘটনা ঘটায় অথচ এই সম্পর্কে আমি জড়িত নই। জাল সার্টিফিকেট এবং অবৈধ সম্পদের তথ্য রাজউকের কর্মচারী আসামী নজরুল। মেয়ের জামাই সজিব ওরফে জুয়েল (৩৫), (নীট কনসান এর কর্মচারী), ৩ আসামী নজরুল ইসলামের আরেক জামাতা আবু তাহর (৪২), পিতামৃত- মকবুল সারেং ঘাড়ের পিছনে কিল ঘুষি মারিয়া মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে সিরিয়ালের সাদা রংয়ের গাড়িটি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ফতুল্লা থানার মামলা নং ৫৩(৬)২০২৩ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১)- এ জেল হাজতে আছে পরকিয়া করিয়া বিয়ে করায় রাজউকের কর্মচারী মােতালিবের তথ্যের কারনে নজরুল চাকুরীচ্যুত হয়।