শামীম ওসমান কতটুকু ‘ঈমানদার’ সেই প্রমাণ চাইলেন গিয়াসউদ্দীন!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান কতটুকু ‘ঈমানদার’ সেই প্রমাণ চাইলেন একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে শামীম ওসমানকে হারিয়ে এমপি হয়েছিলেন গিয়াস।

২৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আলোচনা সভায় এমপি শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে গিয়াসউদ্দীন বলেছেন, উনি এখন বিভিন্ন স্কুল কলেজে গিয়ে ধর্মকর্মের কথা বলেন, হাদিস কোরআনের কথা বলেন, এটা খুবই ভালো দিক। কিন্তু শুধু মুখের কথা বললে তো হবে না, ভেতরের কিছুও বইলেন না।

এ সময় গিয়াস বলেন, আমি আজকে ঘোষণা দিচ্ছি নারায়ণগঞ্জের কোনো আসনেই ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কেউ একটা জাল ভোট দিবেন না। এখন পারলে আপনিও এমন ঘোষণা দেন যে, আমার নৌকা মার্কায় কেউ একটা জাল ভোট দিবেন না, কেউ রাতে ভোট দিবেন না। আপনি কতবড় ঈমানদার, পারলে এমন একটা ঘোষণা দেন। দিনের ভোট রাতে মেরে এমপি হইছেন। এমন ঘোষণা দেয়ার সাহস আপনার নাই। আমরা ঘোষণা দিলাম কেউ একটা জাল ভোটও আমাদের দিবে না। পারলে আপনি এমন ঘোষণা দেন।

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে আরো বলেন, আপনারা মানুষ থেকে পালিয়ে বেড়ান। ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। তখন আমিও পার্লামেন্ট মেম্বার ছিলাম। এতো বছর যাবৎ আপনারা নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা কিন্তু যাইনি। মামলা দেন হামলা করেন জেলে যাই আবার ফিরে নিজের ঘরেই আসি। আর আপনারা অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। আমরা তো কোথাও যাইনি। মানুষের ভোটে নির্বাচিত না হয়েই জনগণের নেতা হতে চান। জনগণ এসকল বসন্তের কোকিলদের চেনে। আপনারা বসন্তের কোকিল হয়ে থাকেন। আমরা নারায়ণগঞ্জের মানুষদের ছেড়ে কোথাও যাবো না।

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন। রবিবার (২৬ মার্চ) বিকেল তিনটায় সিদ্ধিরগঞ্জস্থ হিরাঝিল এলাকায় জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, নারায়ণগঞ্জে এখন অনেকেই অনেক কথা বলে থাকেন। আমাদের দলের পক্ষ থেকে এতদিন জবাব দিতে পারত না। এখন আমরা জবাব দিচ্ছি কারন আমাদের সেই সৎ সাহস আছে। আমরা মানুষকে ভালবাসি তাদের কল্যানে কাজ করি। খারাপ মানুষরা চোখ রাঙায়। তাদের চোখ রাঙানি ভয় পাই না। খারাপ মানুষদের বিরুদ্ধে তো আমরা সবসময় লড়াই করেছি। সেই ছাত্র জীবন থেকে খরাপ মানুষদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। পাকিস্তানি হানাদারদের ভয় পাইনি আর আপনারা কোথা থেকে আসছেন অর্থ সম্পদ লুট করে চোখ রাঙিয়ে কথা বলেন যে আপনাদের ভয় পাবো।

তিনি আরো বলেন, আপনারা প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে জনগণের বন্ধু হিসেবে কাজ করতে দিন। তাদেরকে জনগণের শত্রু বানিয়ে প্রশাসনকে ধ্বংস করে দিবেন না। এতে করে প্রশাসনের মান সম্মান ভুলুন্ঠিত করবেন না।

গিয়াসউদ্দিন সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা কী উন্নয়ন করেছেন জনগণ দেখে। সামান্য বৃষ্টি হলে ডিএনডির মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে না। বলে অনেক উন্নয়ন করেছেন। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন। আমরা আদমজী বন্ধ করে এখানে ইপিজেড করেছি। এই অবদান কার, বিএনপি সরকারের। আপনারা নারায়ণগঞ্জে একটা উন্নয়ন দেখান। রাস্তার জন্য টাকা আসে পার্সেন্টেজ আগেই নিয়ে যান। আমরা ঠিকাদারদের কাছ থেকে খবর পাই ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির শহিদুল ইসলাম টিটু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক মাজেদুল ইসলাম, সদস্য সচিব কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মনির খন্দকার, ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন শিকদার, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সভাপতি বাছির উদ্দিন বাচ্চু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলম ভূঁইয়া, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ জিকো, জেলা কৃষক দলের সভাপতি ডা. শাহিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কায়সার রিফাতসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।