নৌকা-লাঙ্গলের ছায়াতলে নিতে লোভনীয় টোপ: বিএনপিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমানের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী সভা সমাবেশ করেছেন বিএনপির নেতা পরিচয়দানকারী আতাউর রহমান মুকুল সহ তার অনুগামীরা। ওই নির্বাচনে মুকুল লাঙ্গলের পক্ষ নিয়ে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর লোকজনদের কেন্দ্র থেকে মারধর করে বের করে দিয়েছিলো। ভোটের দিন সেইসব ঘটনা ১ মার্চ বন্দর থানা বিএনপির কর্মীসভায় বিএনপির এক কর্মী ফাঁস করে দিয়েছেন।

বিএনপির ওই কর্মী জানান, গত জাতীয় নির্বাচনে ভোটের দিন ভোট থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের মারধর করে গালিগালাজ করে হুমকি ধমকি ভয়ভীত দেখিয়ে বের করে দেন আতাউর রহমান মুকুল। যদিও নির্বাচনের দিন গণমাধ্যমের কাছে এমন অভিযোগও করেছিলেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এসএম আকরাম। মুকুল ও সুলতান গংদের বাধার কারনে সিরাজদৌলা মাঠে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনী জনসভা করতেও পারেননি। পরে অন্যত্র সমাবেশ করতে হয় বিএনপিকে। ফখরুল আসার পথে রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বাধাও দেয়া হয়। এর আগে সেলিম ওসমানের কারখানায় আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে গিয়ে সেলিম ওসমানকে নির্বাচন করার অনুরোধ জানান মুকুল- যা মিডিয়াতে ছবিও প্রকাশিত হয়।

দীর্ঘদিন যাবত বন্দরে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে একমঞ্চে রাজনীতি করেছেন আতাউর রহমান মুকুল। এমনকি জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বন্দরে আসলে সেই সমাবেশে বক্তব্যও রাখেন মুকুল। কিন্তু গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের কয়েক মাস পূর্বে বিএনপির রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করেন মুকুল। কমিটির লোভে বিএনপিতে আসলেও সেই আশা পূরণ হয়নি তার। তবে কমিটিতে তাকে সহ বেশকজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হলেও ১৪জন নেতা বিদ্রোহী করে পদত্যাগ করেন।

এমন পরিস্থিতিতে ওই সময় গঠিত মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি পুরোদমে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিগুলো বৃহত্তর আকালে পালন ছাড়াও কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতেও তাদের অংশগ্রহণ ছিলো চোখে পরার মত। একই সঙ্গে মহানগরীর বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও থানা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেন। যেখানে বন্দর ও সদর থানা কমিটি সহ বেশকটি ইউনিট কমিটি রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি যখন চাঙ্গা হয়ে ওঠেছে তখন মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্য থেকে বেশকজনকে লোভনীয় টোপ দিচ্ছে নৌকা লাঙ্গল মার্কার অনুগামীরা। সাখাওয়াত ও টিপুর নেতৃত্বে যারা পুরোদমে রাজপথে রাজনীতিতে সক্রিয়া হওয়ার চেষ্টা করছেন কিংবা যারা সাখাওয়াত ও টিপুর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল এমন সব নেতাদের টার্গেট করে নৌকা লাঙ্গলের ছায়াতলে নেয়ার চেষ্টা চলছে। স্বচ্ছ নেতাদের বির্তকিত করার জন্য বিদ্রোহীদের দলে নেয়ার চেষ্টা চলছে। যার মধ্যে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমএইচ মামুন সেই নৌকা লাঙ্গল মার্কাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বিদ্রোহীদের দলে ভিরেছেন।

এখন টার্গেট করা হচ্ছে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনুসহ আরো কজন সদস্যকে। দলের মুলধারার নেতৃত্বে থাকা নেতাদের বিদ্রোহী গ্রুপে টেনে নিয়ে গিয়ে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন- আগামী জাতীয় নির্বাচনে পরিস্থিতি বুঝে আতাউর রহমান মুকুল যখন লাঙ্গলের পক্ষে নামবেন তখন এসব বিদ্রোহী নেতাদের কি দশা হবে? তারা হারাবে মুলধারা, নতুবা তারাও মুকুলের সঙ্গে লাঙ্গল মার্কায় পরিনিত হবেন।